মাঠে বসে হাওয়া কোথায় না খাওয়া যায়?
কিন্তু সে হাওয়ায় যদি মিশে থাকে হেরোইনের বিষ? মৌতাত চোঁয়াতে থাকে মাঠে-অলিগলিতে? রাত বাড়লে উড়তে থাকে বোমার ধোঁয়া?
কাটোয়ার মাঠপাড়া এখন তেমনই এক ‘মুক্তাঞ্চল’। দুষ্কৃতীদের গড়ের মাঠও বলা যেতে পারে। যেখানে শুধু এলাকারই নয়, অন্য জায়গা থেকেও সমাজবিরোধীদের আনাগোনা, গা ঢাকা দিয়ে হাওয়া খাওয়া চলে। তাদের দৌরাত্ম্যে ভদ্র নাগরিকেরা কাঁটা। পুলিশের যা ভূমিকা, তাতে তাদের উপরেও মানুষের ভরসা নেই।
বুধবার নাসিম শেখ নামে যে দুষ্কৃতী পুলিশের দিকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানোর চেষ্টা করে, সে-ও কাটোয়ার কেউ নয়। তবে বর্ধমান জেলারই শিল্পাঞ্চলে নানা উৎপাত করে কাটোয়ার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মাঠপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে এসে সে হাওয়া খাচ্ছিল। গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে মাথার উপরে, অথচ দিব্যি মুদির দোকান খুলে বসেছিল সে। কী পাওয়া যায় সেই দোকানে? চাল, ডাল, তেল আর পালাতে পালাতেও নাসিম যখন পাকড়াও হল, ঝোলা হাতড়ে পাওয়া গেল ২২ কেজি গাঁজা! পকেটে নাইন এমএম পিস্তল, ৬ রাউণ্ড কার্তুজ।
কিন্তু শুধুই কি গাঁজা? পুলিশের দাবি, মুদির দোকানকে সামনে রেখে আসলে হেরোইনের ব্যবসা চালাত নাসিম। এলাকার অন্যতম হেরোইন কারবারি কুমারের আশ্রয়েই সে থাকত। তার কাছ থেকেই সে পিস্তল পেয়েছে বলেও জেরায় নাসিম দাবি করেছে। তবে শুধু কুমারই নয়, মাঠপাড়ায় অন্তত আরও দু’টি দল হেরোইন-চক্র চালায় এবং এর পিছনে রাজনৈতিক দল ও পুলিশের একাংশের মদত রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সিপিএমের কাটোয়া জোনাল সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “হেরোইন কারবার কমা দূরের কথা, পুলিশের মদতেই তা চলছে।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “পুলিশ কই? অসামাজিক কাজকর্ম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।” |