|
|
|
|
দ্বিতীয় ভূমি হতে চাই না |
বাবা ‘ভূমি’-র সৌমিত্র রায়। তবে ছেলে আর্যেশ ‘মসিহা’ ব্যান্ড করেও
বাবার খ্যাতিতে খ্যাত হতে নারাজ। জানালেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত-কে |
নায়কের ছেলে অভিনেতা হয়ে স্বীকৃতি পেয়েছেন। পরিচালকের পুত্র সিনেমা বানিয়ে জনপ্রিয়। এই রকম প্রচুর উদাহরণ পাওয়া যাবে কলকাতায়। তবে ‘লক্ষ্মীছাড়া’-র গাবুকে বাদ দিলে আর হয়তো কোনও ব্যান্ড সদস্যকেই পাওয়া যাবে না যিনি পূর্বসূরির রাস্তা ধরেই এগোতে চেষ্টা করেছেন।
আর্যেশ রায় একটু আলাদা। বাবা ‘ভূমি’-র সৌমিত্র রায়। আর্যেশ চাকরি করতেন এক বিদেশি ব্যাঙ্কে। সব ছেড়ে এখন ব্যান্ড নিয়ে মেতেছেন। নাম ‘মসিহা’। ব্যান্ডে রয়েছেন আরও চার জন শিল্পী। আইরিন সরকার, অভিরাজ সেন, শুভাশিস সেন আর শুভময় মিত্র। আইরিন লিড ভোকালিস্ট। অভিরাজ কী-বোর্ড বাজান। শুভাশিস অ্যাকাউস্টিক গিটারে। শুভময় বাস গিটার। আর আর্যেশ গান লেখেন। পারকাশনস্-এ সঙ্গত করেন।
|
|
‘মসিহা’-র পাঁচ। আর্যেশ রায় (একদম ডান দিকে)। সঙ্গে
আইরিন সরকার, অভিরাজ সেন, শুভাশিস সেন ও শুভময় মিত্র |
ব্যান্ডের নাম হঠাৎ ‘মসিহা’ কেন?
‘‘মসিহা’ মানে সেভিয়ার। আমরা মনে করি আমাদের নিজেদের ভেতর নজর দিলে হয়তো অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারব। আমাদের ব্যান্ডের প্রতিটি গানের মধ্যেই কোনও না কোনও ভাবে এই কথাটা লুকিয়ে আছে। আমাদের পছন্দের ভাষা হল হিন্দি। অথবা বাংলা,” আইরিন বলছিলেন।
ইতিমধ্যে কুড়িটি অরিজিনাল গান লিখেছেন আর্যেশ। লোকগীতি ছাড়াও রয়েছে সুফি, পপ আর রক গানও। সঙ্গে কিছু কভার। শুভা মুদগল থেকে সোনা মহাপাত্র, জেব আর হনিয়া থেকে রেখা ভরদ্বাজ এঁদের জনপ্রিয় গানও এঁরা গেয়ে থাকেন।
অনেকে বলেন বাংলা ব্যান্ড আর আগের মতো নেই। সেই পুরনো হিটগুলোই চলছে। তার মধ্যে আবার দলাদলি। ভয় হয়নি দেখে?
“সত্যি বলতে, আমরা ভাবি বাংলা ব্যান্ডের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল। ‘ভূমি’ আর ‘চন্দ্রবিন্দু’-র কী সুন্দর সম্পর্ক! আমাদের জেনারেশনের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও ভাল বন্ধুত্ব রয়েছে। তাই ভয় হয় না,” আর্যেশ সাফ জানিয়ে দেন।
সৌমিত্র বেশ খুশি ছেলের কাজে। জানান, “আর্যেশের মাত্র ২৫ বছর বয়স। তাতেই যে রকম লিরিকস ও লিখেছে, পড়ে বেশ আশ্চর্য হয়ে গিয়েছি। আশা করি ও এক দিন আমার জন্যও লিরিকস লিখবে।” |
|
শুধু যে ব্যান্ড তৈরি হয়েছে তা নয়, ‘মসিহা’-র সদস্যরা ইতিমধ্যে নিজেদের ছবি দিয়ে মাগ-ও বানিয়ে ফেলেছেন। মুচকি হেসে আইরিন বলেন, “রবি ও নবীন ব্যান্ডের জন্য কাজ করতে গিয়ে অনেক বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। সেটাই কাজে লাগিয়েছি।” ‘মসিহা’-র কলকাতায় প্রথম অনুষ্ঠান ১১ মে। যেখানে তাঁরা তাঁদের অরিজিনাল গান পরিবেশন করবেন। নাম ‘ফর হার’। বিশ্বজুড়ে মহিলাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করার আর্জি থাকবে এই অনুষ্ঠানে।
কিন্তু কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, ‘মসিহা’ কি আসলে ‘ভূমি’-র একটা ছোট সংস্করণ?
একদম না, বলছেন সৌমিত্র। জানাচ্ছেন, ‘‘ওরা চায় নিজস্ব পরিচয় তৈরি করতে। ‘ভূমি’-র পরিচয় থেকে বেরনোটা ব্যাপার নয়, উদ্দেশ্য হল নিজেদের আত্মপরিচয় তৈরি করা। ওদের বয়সি অনেককে কিছু বললে পাত্তাই দেয় না। আর্যেশরা ও রকম নয়। ‘ভূমি’-র ছায়া থেকে বেরোতেই হবে ‘মসিহা’-কে।” সেই আশাই রাখছেন এই তরুণ গানওয়ালারা। তা না করলে হয়তো সব চেষ্টাই ঢাকা পড়ে যাবে ‘ভূমি ২’ হয়ে ওঠার মাঝখানে! |
|
|
|
|
|