তারাবাজি
বলিউডে ভূতের উপদ্রব
লিউডে এখন ভূতেদের পেয়েছে।
অনীক দত্তের ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’য়ের রিমেকের শ্যুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে সুরাটে। পরিচালক সতীশ কৌশিক। ছবির নাম ‘গ্যাং অব ঘোস্ট’। প্রযোজক ভিনাস।
হিন্দি রিমেকে পরমব্রত চট্টোপাধ্যয় ছাড়া আর কোনও অভিনেতা নেই যাঁরা বাংলা ছবিটিতেও অভিনয় করেছেন। রিমেকটিতেও পরমব্রত অভিনয় করেছেন পরিচালকের ভূমিকাতে।
পরিচালক অবশ্যই দারুণ খুশি। “এক সময় আমাকে বলা হত ‘কিং অব রিমেকস’। কত সুপারহিট রিমেক পরিচালনা করেছি। যেমন ধরুন ‘মুঝে কুছ কহেনা হ্যায়’, ‘হাম আপ কে দিল মে রহতে হ্যায়’, ‘হামারে দিল আপ কে পাস হ্যায়’ বা ‘তেরে নাম’। প্রথম বার ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দেখে দারুণ লেগেছিল। মনে হয়েছিল বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ছবি। অনীক দত্তের সঙ্গে কথা বলিনি। নিজেই ছবিটা হিন্দিতে অ্যাডপ্ট করলাম। সংলাপগুলো নিজেই লিখেছি,” পরিচালক বলছিলেন।
সোমবার শ্যুটিং শুরু হয়েছে সুরাটে। হিন্দি ছবিতে স্ক্রিপ্ট বেশ খানিকটা পাল্টানো হয়েছে। ছবিতে যে বাড়িটা ভূতেদের ডেরা, তার নাম ‘রয়্যাল ম্যানসন’। পুড়ে যাওয়া একটা মিলের মধ্যে এই বাড়িটা অবস্থিত।
শুধুমাত্র লোকেশন নয়, চরিত্রগুলোকেও বেশ খানিকটা পাল্টে দিতে হয়েছে রিমেকে। যেমন সব্যসাচী চক্রবর্তীর চরিত্র। হিন্দিতে অভিনয় করছেন শরমন যোশী। উনি এক জন ফ্রাস্ট্রেটেড লেখক। মাঝে মাঝে ‘ঘোস্ট রাইটিং’ করেন। ছবিতে নাম রাজু।
সৌরভ শুক্ল অভিনয় করছেন একটি বাঙালি চরিত্রে। নাম ভূতনাথ। “অরিজিনাল ছবিতে আমার চরিত্রটি বাঙাল ছিল। কিন্তু এটা হিন্দি ছবি। তাই বাঙাল ভাষাটা রাখলে সবাই বুঝতে পারতেন না। কারণ পূর্ববঙ্গ-পশ্চিমবঙ্গের ভাষার বিভেদটা ভারতের অন্যান্য প্রদেশের মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়,” জানালেন তিনি।
অনুপম খের ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দেখেননি। তবে জানেন ছবিটির কথা। বাংলা ছবিটিতে চরিত্রটির নাম ছিল জমিদার দর্পনারায়ণ চৌধুরী। হিন্দিতে তিনি ১৯৩০ সালের মিল মালিক। নাম গেন্দামল হেমরাজ। “সোমবার থেকে ছবিটার শ্যুটিংয়ের কাজ শুরু করেছি,” অনুপম জানান।
অরিজিনাল ছবিতে যে চরিত্রটি সব চেয়ে জনপ্রিয় ছিল, তাতে অভিনয় করেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। কদলীবালার চরিত্রটি হিন্দিতে করছেন মাহি গিল। “আমার চরিত্রের নাম মনোরঞ্জনা কুমারী। সে শুধু মনোরঞ্জনেই বিশ্বাস করে। খুব এনজয় করছি,” মাহি বলছিলেন। কিছু সাদা-কালো দৃশ্য শ্যুট করা হয়েছে মাহির সঙ্গে। কারণ? চরিত্রটি পুরনো দিনের হিন্দি ছবির নায়িকাদের আদলে লেখা।
আর মুমতাজ সরকারের চরিত্র?
হিন্দি ছবিটিতে সেটি করছেন মীরা চোপড়া। সম্পর্কে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার তুতো বোন। এই ছবি দিয়েই মীরার বলিউডে অভিষেক হবে। সতীশের মীরাকে প্রথম থেকেই এই চরিত্রের জন্য পছন্দ ছিল। কিন্তু বাদ সাধে বিক্রম ভট্টের একটি ছবি। যেটিতে মীরার অভিনয় করার কথা ছিল। পরে জানা যায় সেই ছবিটির শ্যুটিং ডেট পিছিয়ে গিয়েছে। তা শুনে মীরা পত্রপাঠ সতীশকে জানিয়ে দেন যে তিনিও ভূত সাজতে রাজি!
‘ভূতের ভবিষ্যৎ’এ মুমতাজের চরিত্রটি এক রকস্টারের প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু ‘গ্যাং অব ঘোস্ট’এ বাংলা ব্যান্ডের রকস্টার নেই। আছে হরিয়ানভি রকস্টার। চরিত্রে অভিনয় করছেন বিজয় বর্মা। ‘রংরেজ’, ‘চিটাগং’ আর ‘মনসুন শ্যুটআউট’য়ে বিজয় অভিনয় করেছেন। ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম রবিন হুডা। “অনেকেই খেপিয়ে তাকে বলে রবিন হুড। আর সে সেটা শুনে রেগে গিয়ে বলে: ‘রবিন হুড! হুড কি তো...হুড নেহি, হুডা’,” হাসতে হাসতে বলছিলেন পরিচালক।
যদিও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় ‘কহানি’ করে জাতীয় স্তরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন, এই ছবিতে তাঁর চরিত্রটি করছেন জ্যাকি শ্রফ। “আমি চেয়েছিলাম ছবিটির শেষের দিকে একজন স্টার থাকুক। জ্যাকির একটা স্টার অ্যাপিল আছে। মুম্বইয়া ভাই টাইপের চরিত্রটা। নাম বাবু হাতকাটা!” সতীশ জানান।
জ্যাকি শ্রফ
চরিত্রের নাম: বাবু হাতকাটা
বাংলায় অভিনয় করেছেন: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।
নাম ছিল: হাতকাটা কার্তিক

অনুপম খের
চরিত্রের নাম: গেন্দামল হেমরাজ
বাংলায় অভিনয় করেছেন: পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
নাম ছিল: জমিদার দর্পনারায়ণ চৌধুরী

শরমন যোশী
চরিত্রের নাম: রাজু
বাংলায় অভিনয় করেছেন: সব্যসাচী চক্রবর্তী।
নাম ছিল: বিপ্লব দাশগুপ্ত

মাহি গিল
চরিত্রের নাম: মনোরঞ্জনা কুমারী
বাংলায় অভিনয় করেছেন: স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
নাম ছিল: কদলীবালা দাসী

মীরা চোপড়া
চরিত্রের নাম: টিনা
বাংলায় অভিনয় করেছেন: মুমতাজ সরকার।
নাম ছিল: কোয়েল ধর
মনে আছে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী অভিনীত ব্রিগেডিয়ার যুধাজিৎ সরকারের চরিত্রটি? এক আর্মি অফিসার যিনি কার্গিল যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন। এই ছবিতে সেই চরিত্রটি করছেন যশপাল শর্মা। নাম হোশিয়ার সিংহ। রাজপাল যাদব করছেন রাঁধুনির চরিত্র। নাম আকবর খাঁজা খান। চাঙ্কি পান্ডেও রয়েছেন এই ছবিতে, অনুপম খেরের ভাইয়ের চরিত্রে। নাম গুলাবচন্দ।
আসরানিকে দেখা যাবে ট্যাক্সিচালকের চরিত্রে। অরিজিনাল ছবিটিতে চরিত্রটি ছিল একটি রিকশাচালকের। কিন্তু, মুম্বই শহরে রিকশা কোথায়? অগত্যা আসরানি ট্যাক্সি ড্রাইভার। নাম আত্মারাম। মীরের চরিত্রটি করছেন রাজেশ খট্টর। উনি একজন সিন্ধ্রি বিল্ডার। নাম লালওয়ানি।
বাংলা ছবিতে গানের বড় অবদান ছিল। এখানেও তাই। তবে সঙ্গীত পরিচালকেরা নতুন। নাম ধরম, সন্দীপ।
সতীশ নিজেও দারুণ অভিনেতা। থিয়েটার, সিনেমা দু’টোই করেছেন। ইচ্ছে করেনি নিজের ছবিতে অভিনয় করতে? “না,” বলছেন সতীশ। আরও জানান, “এতগুলো চরিত্র। সবাইকে একসঙ্গে সামলানো বেশ কঠিন ব্যাপার। তাই এ যাত্রায় অভিনয়টা করব না বলে ঠিক করেছি।”
আশা রাখেন এ বছরের শেষেই ছবিটি মুক্তি পাবে। কলকাতাতে কি বিশেষ কোনও প্রিমিয়ার হবে? জানালেন, সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই করবেন।
হাতে আর কয়েক মাস। বলিউডের ভূতেরা কলকাতাতে এল বলে!

প্রথম বার ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দেখে দারুণ
লেগেছিল। মনে হয়েছিল বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ছবি।
অনীক দত্তের সঙ্গে কথা বলিনি।
ছবিটা নিজেই হিন্দিতে অ্যাডপ্ট করি
সতীশ কৌশিক
‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ ছবিটিতে আমার
চরিত্রটি বাঙাল ভাষায় কথা বলতেন।
কিন্তু এটা হিন্দি ছবি। অন্য সব চরিত্ররা
অবাঙালি। এদের মাঝে আমি একাই বাঙালি
সৌরভ শুক্ল


এটা ভেবে খুব ভাল লাগছে যে একটা বাংলা ছবির হিন্দি রিমেক হচ্ছে। তবে
দু’টো ছবিতেই অভিনয় করছি বলে আলাদা করে কোনও গর্ববোধ নেই
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.