রেগে এত গম্ভীর হতে নেই |
রোজ রেগে যাই আমি আপনি। শুধু বেচারি গৌতম গম্ভীর-য়ের রাগটাই টিভির পর্দার মাধ্যমে ছড়িয়ে যায় গোটা বিশ্বে।
কেকেআর অধিনায়কের মতো আমাদেরও জানা দরকার দুম করে আগুনের মতো জ্বলে ওঠা রাগকে
কী ভাবে বশে আনতে হয়। বিশেষজ্ঞদের টিপস শুনলেন পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায় |
|
হৃদ্রোগ চিকিৎসক কুণাল সরকার |
• গম্ভীর যদি দেখেন ইউসুফ পাঠান একটার পর একটা বল মিস করছেন, তাহলে কেকেআর অধিনায়কের উচিত, ধীরে-ধীরে গভীর নিশ্বাস নেওয়া। মনে মনে ১০ গুনতেও পারেন। তাতে একটু হলেও রিল্যাক্সড লাগবে।
• রাগে অন্ধ হওয়ার আগে শরীর কিছুটা জানান দেয়। মাথা ঝাঁঝা করে, গাল গরম হয়। তখনই সতর্ক হওয়া উচিত গৌতমের। যার উপর রাগ (সেটা চেন্নাই সুপার কিংস-য়ের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি হতে পারে কি ডেল স্টেইনও হতে পারে) মনে-মনে তাকে গাল দিয়ে নিজেকে বলুন, “আমি ওকে ক্ষমাঘেন্না করলাম। জাস্ট এ বারের মতো ছেড়ে দিলাম”
• রাগটা একটু কমলে তার পর নিজের রাগের কারণকে বিশ্লেষণ করুন। বিশ্লেষণের পর অন্য কারও দোষ বেশি বলে মনে হলে তাঁকে সংযত ভাষায়, দৃড়ভাবে সেটা বলুন। তাতে রাগের মাথায় যা-তা বলে বিপদে পড়া থেকে আপনি বেঁচে যাবেন
|
|
গম্ভীরের রোষের মুখে সে দিন পড়েছিলেন বিরাট কোহলি |
• কেকেআর অধিনায়ক হওয়ার পর আপনার ওপর এমনিতেই মারাত্মক প্রেশার। তাই ব্লাড প্রেসার বাড়তে বাধ্য। উচ্চরক্তচাপের বাকি রোগীদের মতো প্রয়োজনে মাথায়-ঘাড়ে জল দিন ওভারের ফাঁকে ফাঁকে। • এটা গম্ভীর থেকে সাধারণ মানুষ যারা চট করে রেগে যান তাদের জন্য বেশি কার্যকর। তা হল নিয়মিত ঘাম ঝরে এমন কিছু করুন। যেমন হাঁটা, দৌড়োনো, সাঁতার, যোগব্যায়াম। এতে রাগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে
• নিজের যেটা করতে সব চেয়ে ভাল লাগে গৌতমের, তা সে গান শোনা, সিনেমা দেখা, পুজো করা, স্ত্রী নাতাশার সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া, যা-ই হোক, অবসর কাটান সেই ভাললাগা নিয়ে |
সাইকিয়াট্রিস্ট প্রথমা চৌধুরী |
• ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিশ্বাস নিন।
• ক্রিকেট, ব্যাট, বল নিয়েই তো গৌতমের সংসার। কিন্তু ফুটবল জাতীয় কিছু হাতের কাছে রাখতে পারেন তিনি। খুব রাগ হলেই তাতে ঘুষি মারলে রাগ কমতে বাধ্য। আর একটা কাজও করতে পারেন, কোনও কাগজকে কুচিকুচি করে ছিঁড়ে উড়িয়ে দিন। এতেও ফ্রাস্ট্রেশন কমে।
• ইডেনে সম্ভব না হলেও নিজের হোটেলের ঘরে ফিরে ফাঁকা জায়গায় গিয়ে জোরে চিৎকার করতে পারেন শাহরুখের দলের ক্যাপ্টেন। এ ছাড়া হোটেলের শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে থাকলেও গৌতম নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারবেন। |
|
সেদিন ইডেনে রেগে গেলেন কিংবদন্তী রাহুল দ্রাবিড়ের ওপরও |
• সব সময় যে অন্যরা ভুল করছেন, তা তো হয় না। আমাদের সকলের ভুল থাকে। তাই গৌতমের উচিত ‘রিজিড থিংকিং’-থেকে বেরিয়ে নিজের কী দোষ সেটাও লক্ষ রাখা। • স্পোর্টসপার্সনরা অনেক বেশি সচেতন কিন্তু অনেকেই আছে যাদের অনেক রকম অ্যাডিকশন থাকে। যেমন সিগারেট, মদ বা কোনও ড্রাগের নেশা। এগুলো যত তাড়াতাড়ি পারেন ত্যাগ করতে হবে।
• ম্যাচের দিন সকালে বা বড় ম্যাচের আগের রাতে গৌতমের অবশ্যই প্রাণায়াম বা ধ্যান করা উচিত। এতে মাথা ঠান্ডা থাকবে।
|
|
গ্যাসট্রোএন্টেরোলজিস্ট গোপালকৃষ্ণ ঢালি |
• রাগ বা মন খারাপ হলেই যদি পেট ব্যথা, গ্যাস-অম্বল হয় তা হলে উপসর্গগুলোকে এড়িয়ে থাকা অভ্যাস করতে হবে। বাঁ-হাতি গম্ভীরকে নিজেকে বোঝাতে হবে, এটা কোনও অসুখ নয়। মনের ভুল
• কেউ স্লেজিং করলেই দেখেছি, গম্ভীর চট করে রেগে যান। এটা কমাতে দিনে অন্তত একবার ১০ মিনিটের জন্য হলেও প্রাণায়াম বা মেডিটেশন করা উচিত ওঁর।
• শারীরিক পরিশ্রম বাড়িয়ে দেওয়া, সুষম খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, ভাল করে স্নান এগুলো করলে বিপক্ষ গালাগালি দিলেও গম্ভীরের শরীর খারাপের সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
• জানি, আইপিএল-য়ের মতো টুর্নামেন্টে অনেক চাপ। হাজারো কমিটমেন্ট। তার মধ্যেই গৌতমের উচিত জীবনটাকে সহজ ভাবে নেওয়া। নিজেকে বোঝানো, জীবনটা এক ভাবে যাবে না। খেলায় কোনও দিন জিতব, কোনও দিন হারব। কিন্তু আমারও সময় আসবে
|
|
ওয়ান ডে হোক কি টেস্ট সব জায়গায় গম্ভীর ‘অ্যাংরি ইয়াং ম্যান’ |
• কম্পিটিটিভ স্পোর্টসে ব্যাপারটা একটু দুষ্কর কিন্তু তাও গম্ভীরের উচিত প্রতিশোধস্পৃহাটা যতটা পারা যায় কাটানো। কারণ মন থেকে এটা দূর না-হলে রাগ থেকেও মুক্তি নেই। আর বেশি রেগে যাওয়া মানে আপনার নিজের শরীর ও মনের ক্ষতি
• রাগ ভুলতে সেই সময় পছন্দের খাবার খান বা কাজে ডুবে যান, কানে সচিন তেন্ডুলকরের মতো হেডফোনটা লাগিয়ে গান শুনুন বা কোনও ভাল বন্ধুকে মনের অবস্থা খুলে গল্প করুন |
|