সিভিল সার্ভিস (মেন) পরীক্ষায় সাফল্য পেলেন পুরুলিয়ার এক যুবক। আদ্রার কৃতী ছাত্র নীতিন সিংহানিয়া সদ্য প্রকাশিত ইউপিএসসি-র ওই পরীক্ষায় ৫১তম স্থান দখল করেছেন।
সিংহানিয়া পরিবারের আদি বাড়ি রঘুনাথপুর থানার বেড়ো গ্রামে হলেও নীতিনের পড়াশোনার জন্যই আদ্রায় চলে আসেন বাবা অশোকবাবু। তিনি চাননি বাড়ির এই বড় ছেলে ব্যবসায় আসুক। দিল্লি থেকে নীতিন বলেন, “মূলত বাবার ইচ্ছায় পরীক্ষা দিই। মা ও দাদুও চাইত আমি ভাল ফল করি। ওঁদের আশীর্বাদেই সাফল্য।”
সাফল্যের সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল গোড়াতেই। আদ্রা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পরেই নীতিনকে কলকাতার অভিনব ভারতী বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন তাঁর বাবা। মাধ্যমিকে ৭৭.৬ শতাংশ নম্বর পান। বিধাননগরের ভারতীয় বিদ্যাভবন থেকে বাণিজ্য শাখায় ঊচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৮৫.২ শতাংশ। অর্থনীতি নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করেন। প্রথম শ্রেণিতে পাশ করে আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পাড়ি দেন দিল্লিতে। মাঝে চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি নিয়েও পড়াশোনা করেন।
নীতিন জানান, ২০১১-তে প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই প্রিলিমিনারি ও মেন পরীক্ষায় পাশ করে। আটকে যান পার্সোনালিটি টেস্টে। থেমে যাননি। শুরু করেন আইএএস পরীক্ষার্থীদের পড়ানো। তাতে নিজের খরচ উঠেছে। নিজের প্রস্তুতিতেও সুবিধা হয়েছে। দ্বিতীয় বারেই পরীক্ষার তিনটি ধাপই পেরিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে কোল ইন্ডিয়ার ‘অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিনান্স’ অফিসারের পদে কলকাতায় চাকরি পেয়েছেন। ওএনজিসি-র পরীক্ষাতেও সদ্য পাশ করেছেন। আক্ষেপ একটাই। তাঁর কথায়, “কিছু দিন আগে দাদু মারা গিয়েছেন। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেছি। কিন্তু উনি দেখে যেতে পারলেন না।” অশোকবাবু বলেন, “এ বার ও একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে দেশের কাজ করুক।” |