ঘটনাগুলি এক। তবু মিলছিল না অঙ্ক।
সুবেশা দুই মহিলা। সঙ্গে দু’টি বছর দেড়েকের ফুটফুটে শিশু। ভিড় বাসে কিংবা ট্রেনে হঠাৎই গলা ফাটিয়ে শুরু ওই শিশুদের কান্না। হতচকিত সহযাত্রীদের সাহায্য এগিয়ে আসা। একটু পরেই সাহায্যকারী কোনও পুরুষ কিংবা মহিলা লক্ষ্য করলেন তাঁর পকেট ফাঁক! কয়েকমাস ধরেই বসিরহাটে ঘটছিল এই ঘটনা। রহস্যভেদ হল রবিবারের সকালে। পকেটমারি ও কেপমারির অভিযোগে পদ্মা বেদ ও ভিমলি বেদ নামে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দু’জনেরই বাড়ি আসানসোলের জোগাটি পাড়ায়।
বসিরহাট থানার আইসি শুভাশিস বনিক বলেন, “মহিলারা জেরায় স্বীকার করেছে শিশুদের ব্যবহার করেই পকেট কাটত তারা। এই প্রবণতা উদ্বেগজনক। চক্রের বাকিদের খোঁজে আমরা তল্লাশি শুরু হয়েছে।”
কীভাবে ধরা পড়ল বসিরহাটের ‘বাবলি’রা?
রবিবাসরীয় সকালে তাঁদের কর্মস্থল ছিল ভিড়ে ঠাসা শিয়ালদহ-হাসনাবাদ লোকাল। পরিকল্পনামতো নেবুতলা স্টেশন থেকে উঠেছিল পদ্মা ও ভিমলি। সঙ্গে দুই শিশু। ওই কামরাতেই ছিলেন দেগঙ্গার তুলিয়া গ্রামের সরস্বতী পাড়ুই। স্বামী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন ভাইয়ের বিয়েতে। হঠাৎই কাঁদতে শুরু করে শিশু দুটি। কান্না থামাতে ট্রেনের অন্য যাত্রীদের সঙ্গে এগিয়ে যান সরস্বতী। তারপরেই সুযোগ বুঝে চোখের ইশারায় সারা হয়ে যায় অপারেশন।
ঘোড়ারাস-ঘোনা স্টেশনের কাছে এসে সরস্বতীদেবী লক্ষ্য করেন ব্যাগ ফাঁকা। ততক্ষণে ওই দুই মহিলা শিশু-সহ নেমে গিয়েছেন। তবে সরস্বতী দেবীর সঙ্গে একই কামরায় থাকা কয়েকজন যাত্রী পদ্মা ও ভিমলির চুপিচুপি নেমে যাওয়া খেয়াল করেছিলেন। ভ্যাবলা স্টেশনে ট্রেন থামতেই সরস্বতীদেবী-সহ যাত্রীরা নেমে আসেন প্ল্যাটফর্মে। পাশের কামরায় উঁকি দিতেই দেখা যায় দিব্যি বসে আসেন পদ্মা ও ভিমলি। প্রাথমিকভাবে চুরির কথা অস্বীকার করেন তাঁরা। জেরা করতে করতে চলে আসে বসিরহাট স্টেশন। প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। উদ্ধার হয় সরস্বতীদেবীর খোওয়া যাওয়া সাত হাজার একশো টাকা। শুরু হয় চড় থাপ্পড়। পরে বসিরহাট থানার পুলিশ ওই দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেন।
পুলিশ জানিয়েছে জেরায় ধৃত মহিলারা জানিয়েছেন, তারা ‘ভদ্র বাড়ির মেয়ে।’ শিশুদুটিও তাঁদের। ধৃতেরা আরও জানিয়েছেন, অভাবের কারণে তাঁরা কাজের খোঁজে এসেছিলেন কলকাতায়। তারপরই জড়িয়ে পড়েন পকেটমারিতে। ট্রেনে কিংবা বাসে ওঠার পর শিশুদের চিমটি কেটে কাঁদানো হত। ধৃতদের দাবি, তাঁদের দলের অনেকে কলকাতাতেও ‘কাজ’ করে। বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪
দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। |