|
|
|
|
১০০ দিনের প্রকল্প হুগলিতে |
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে তৈরি হবে নার্সারি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
সরাসরি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে প্রকল্প রূপায়ণের চেষ্টা হয়েছিল বছর দু’য়েক আগে। কিন্তু সাফল্য মেলেনি। ‘মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা’ প্রকল্পে (১০০ দিনের কাজ) এ বার পঞ্চায়েতের তদারকিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে ফের সব ক’টি পঞ্চায়েতে নার্সারি তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলারা যাতে বেশি উপার্জন করতে পারেন সেই কারণেই এই উদ্যোগ। জেলা প্রশাসনিক কার্যালয়ে এ নিয়ে প্রশিক্ষণও হচ্ছে। বর্ষার মরসুমের আগেই ব্লক প্রশাসনগুলিকে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “মেয়েদের স্বনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে নতুন করে বিন্যাস করা নার্সারি প্রকল্পটি ভীষণ কার্যকর হবে। তাঁদের তৈরি করা গাছের চারা কিনে পঞ্চায়েতগুলি যাতে এই বর্ষার মরসুমেই সামাজিক বনসৃজন প্রকল্পে রোপণ করতে পারে সেই চেষ্টা চলছে।”
জেলায় ওই প্রকল্পের নোডাল অফিসার পুলক সরকার বলেন, “নানা কারণে বছর খানেক আগে অর্থকরী প্রকল্পটি চালু করা যায়নি। এ বার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি চারা বিপণনের সমস্যা থাকবে না। দু’কাঠা জমিতে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী বা তার কোনও সদস্য একক ভাবে নার্সারি করলেও মজুরি বাবদ পাবেন ২৪ হাজার টাকা। তা ছাড়াও চারা বিক্রি করে উপার্জনের নিশ্চয়তা থাকছে।”
ইতিমধ্যেই নার্সারি তৈরির নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে ব্লক এবং পঞ্চায়েতগুলিতে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দু’কাঠা জমিতে ১০ হাজার চারা তৈরি করা যাবে। ওই জমি নিজস্ব বা ‘লিজ’ নেওয়া হলে তৈরি ১০ হাজার চারার মধ্যে পাঁচ হাজার চারা দু’টাকা দরে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কিনে নেবে। বাকি পাঁচ হাজার চারা পঞ্চায়েতকে নিখরচায় দিতে হবে সামাজিক বনসৃজনের জন্য। সরকারি জমি হলে আড়াই হাজার চারা পঞ্চায়েত কিনবে। বাকি চারা নিখরচায় দিতে হবে।
প্রশাসনের এই নতুন উদ্যোগে পঞ্চায়েতের পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মধ্যেও সাড়া পড়েছে। আরামবাগের গৌরহাটি-১ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের পদ্মাবতী পাল বলেন, “প্রকল্পটি ভাল। মহিলারা কম পরিশ্রমে ভাল উপার্জন করতে পারবেন।” বলাগড়ের জিরাট পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অশোক পোদ্দার বলেন, “এই পঞ্চায়েত এলাকাটিতে তফসিলি সম্প্রদায়ের লোকজন প্রচুর। প্রকল্পটি শুরু হলে তাঁরা উপকৃত হবেন।” শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রঘুনাথপুর পঞ্চায়েতের প্রধান বিজন মণ্ডল বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা এখনও হাতে পাইনি। তবে, প্রকল্পের কথা শুনেছি। দেখতে হবে প্রকল্পটি যাতে মাঝপথে বন্ধ না হয়ে যায়।”
আরামবাগের সাহাবাগ গ্রামের ‘টিয়া’ নামের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দলনেত্রী আসলেমা বেগম বলেন, “পুরুষদের সঙ্গে মাটি কাটার ধকল অনেকেরই সয় না। সেই তুলনায় আমাদের পক্ষে নার্সারি করা অনেক ভাল কাজ।” চকবেশে গ্রামের ‘চলার সাথী’র দলনেত্রী গৌরী মান্না কিংবা আরান্ডির ‘বেতালেশ্বরী’ গোষ্ঠীর বাসন্তী ঘোরুইয়েরও একই বক্তব্য।
প্রকল্পটির স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে সহায়ক হওয়া সত্ত্বেও কেন প্রথম বার সাফল্য মেলেনি?
প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ এর পিছনে প্রচারের অভাব এবং চারার বিপণন নিয়ে উপভোক্তাদের আশঙ্কা ছিল বলে দাবি করেছেন। বেশ কিছু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অভিযোগ, পঞ্চায়েত চারা কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। কয়েকটি পঞ্চায়েত আবার দাবি করেছে, চারা কেনার ব্যাপারে কোনও সরকারি নির্দেশিকা ছিল না। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে সংযোগের কথা জেলা প্রশাসন মেনে নিয়েছে। |
|
|
|
|
|