তৎপর আমেরিকার শিখ সংগঠনও
সজ্জনের মুক্তি কেন, সনিয়ার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ
বিক্ষোভে রাশ টানতে পারল না পুলিশি ব্যারিকেড।
বৃহস্পতিবার সাতসকাল থেকে বিক্ষোভকারীদের জমায়েত আটকাতে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলিতে ব্যারিকেড বসিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর বাড়ির সামনে জড়ো হলেন প্রায় ছ’শো মানুষ। ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গার অন্যতম ‘চক্রী’ কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারের মুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হন তাঁরা। সেই জমায়েত থেকেই ভেসে এসেছে সতর্কবাণী ‘সুবিচার’ না পেলে কাল থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য যন্তরমন্তরে প্রতিবাদ জানিয়ে যাবেন তাঁরা। অন্য দিকে, সজ্জনকে দোষী সাব্যস্ত করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে আমেরিকার এক শিখ সংগঠনেও।
প্রায় তিন দশক আগে নিজের দুই শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। আর তার পরেই রাজধানী জুড়ে শুরু হয় শিখ বিরোধী দাঙ্গা। সে সময় দাঙ্গার অন্যতম চক্রী হিসেবে উঠে আসে তৎকালীন কংগ্রেস সাংসদ সজ্জন কুমারের নাম। তিনটি মামলা রুজু হয় তাঁর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার তারই একটিতে সজ্জনকে ‘নির্দোষ’ বলে ঘোষণা করে দিল্লির এক আদালত। আর তার পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। আটচল্লিশ ঘণ্টা পরও সেই প্রতিবাদের আঁচ পোহাচ্ছে রাজধানী।
সনিয়া গাঁধীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি
গত কাল পশ্চিম দিল্লিতে বিক্ষোভের জেরে দুটি মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামলাতে তড়িঘড়ি দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কিন্তু চেষ্টাই সার। সনিয়া গাঁধীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি এ দিন কংগ্রেস পার্টি অফিসের সামনেও প্রতিবাদ জানায় জনতা। সনিয়া এবং সজ্জনের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি ছিল, দিল্লির করকরডুমা জেলা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন জানাক সিবিআই। নচেৎ এই পথবিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন তাঁরা। তাঁদের প্রশ্ন, যে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বাকি পাঁচ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল দিল্লির আদালত, সেই তথ্যপ্রমাণ সজ্জন কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট নয় কেন? শেষমেশ দুপুর দু’টো নাগাদ বিক্ষোভকারীদের হটায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবারের এই গণবিক্ষোভের পুরোভাগে ছিলেন জগদীশ কৌর। ১৯৮৪ সালের দাঙ্গায় দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের রাজনগর এলাকায় যে পাঁচ জন নিহত হন, তাঁরা প্রত্যেকে ছিলেন জগদীশেরই আত্মীয়। সজ্জনের বিরুদ্ধে তাই মামলা রুজু করেছিলেন সে দিনের হত্যালীলার প্রত্যক্ষদর্শী জগদীশ। কিন্তু মঙ্গলবার আদালত জানায়, তাঁর বয়ানের সঙ্গে বাকি সাক্ষীদের বয়ানের সঙ্গতি না থাকায় জগদীশের সাক্ষ্য ‘গ্রহণযোগ্য’ নয়। আর এতেই মুক্তি পান সজ্জন। মঙ্গলবার থেকে তাই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন জগদীশ।
এ কাজে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার শিখ সংগঠন ‘শিখস্ ফর জাস্টিস’(এসএফজে)। তাদের মতে, জগদীশের মতো অনেকেই সে দিনের সেই হত্যালীলার সাক্ষী। সজ্জনকে দোষী প্রমাণ করতে তাঁরা যদি এগিয়ে এসে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারেন, তা হলে ১০ লক্ষ ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে তাঁদের। একই সঙ্গে ওই সংগঠন জানিয়েছে, পরবর্তী আইনি লড়াইয়ে নামীদামি আইনজীবীকে নিয়োগ করবে তারা।
অর্থাৎ এই পরাজয়েই থামবেন না তাঁরা। যেমন থামছেন না জগদীশ এবং তাঁর মতোই আরও অনেকে।
তিন দশকের ক্ষোভ তাই ৪৮ ঘণ্টা পরও উত্তাপ ছড়াচ্ছে। কখনও রাজধানীতে, কখনও বা সুদূর আমেরিকায়।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.