|
স্যালুটটা ঠিক মতো শিখতে পারলাম না
চেনা নাইট অধিনায়কের অচেনা জগত্ আনন্দবাজারে
গৌতম গম্ভীর |
|
ক্রিকেটের জন্য এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে অনেক কিছু পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। এখন যে বইটা সামনে খোলা রয়েছে, সেটা সবে পড়া শুরু করেছি। বইটার নাম, ‘হোল্ডিং কোর্ট’।
উইম্বলডনের অন্দরমহলের নানা অজানা গল্প রয়েছে এর মধ্যে। প্রচ্ছদ দেখে তো সে রকমই মনে হচ্ছে। লেখক ক্রিস গরিঞ্জ এক সময় ছিলেন অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের চিফ এগজিকিউটিভ। সবেমাত্র ভূমিকা পড়া শেষ করেছি। তাতেই মনে হচ্ছে, বেশ ভালই এগোবে ব্যাপারটা। নিশ্চয়ই আমার প্রিয় টেনিস তারকা স্তেফান এডবার্গ, বরিস বেকার, পিট সাম্প্রাস, আন্দ্রে আগাসিদের নিয়ে লকার রুমের প্রচুর আকর্ষণীয় গল্প থাকবে বইটার পাতায় পাতায়। তেমন কিছু পেলে আপনাদের নিশ্চয়ই জানাব।
এ বার বরং একটা অন্য প্রসঙ্গে আসি। দারুণ একটা অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারছি না। মঙ্গলবার সকালে দলের চার জনকে নিয়ে গিয়েছিলাম সিআরপিএফ-এর ছত্তীসগঢ় ব্যাটেলিয়নে। সেনাবাহিনীর কারও সঙ্গে দেখা করার, তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলে আমার দারুণ লাগে। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, আমি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ি এমন কারও সঙ্গে দেখা হলে। আর আজ তো তাঁদের ডেরায় যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। তাই যখন ওখানে যাওয়ার প্রস্তাবটা আসে, তখন ‘হ্যাঁ’ বলতে এক মুহূর্তও দেরি করিনি।
একসঙ্গে শ’পাঁচেক সেনাকে তাঁদের সেই অতি পরিচিত ফৌজি পোশাকে দেখাটা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এটা তো তাঁদের অর্জন করতে হয়েছে। কত লড়াই, পরিশ্রম রয়েছে এই পোশাকের জন্য, ভাবা যায়? ছোট থেকেই আমার একটা ইচ্ছা মনের মধ্যে রয়েছে। আজ প্রথম বার সেই ইচ্ছার কথা সবাইকে চুপি চুপি বলেই ফেলি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা যে ভাবে স্যালুট করেন, তার নিখঁুত ধরনটা এখনও শিখে উঠতে পারিনি। টিভিতে ২৬ জানুয়ারির প্যারেড দেখে অনেকবার চেষ্টা করেছি বটে। কিন্তু কোনওবারই ঠিকঠাক করতে পেরেছি বলে মনে হয় না। অথচ যখন ছত্তীশগঢ় সিআরপিএফের আইজিপি জুলফিকর হাসানের সঙ্গে দেখা হল, তখন তাঁকে বলতেই পারলাম না যে, আমাকে একটু ব্যাপারটা ভাল করে শিখিয়ে দিন। পরের বার দেখা হলে নিশ্চয়ই বলব।
ভাবুন একবার, এই জব্বর পোশাক গায়ে চাপিয়ে, হাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে ওঁরা দিনের পর দিন নিজেদের কর্তব্য পালন করে যাচ্ছেন। অনেক বারই কথাটা আমার মনে হয়েছে। এ দিনের পর ফের এক বার মনে হল, আমাদের দেশের প্রত্যেক তরুণেরই অন্তত এক বছর সেনাবাহিনীতে থাকা উচিত। এখনই তা ভেবে দেখা উচিত আমাদের। কিন্তু আমাদের দেশে সব কিছুকেই খুব হাল্কাভাবে নেওয়া হয়, এটাই খুব দুর্ভাগ্যজনক। আরও খারাপ লাগে যে, সেনাবাহিনী নিয়েও আমাদের মনোভাব একই রকম। এই ব্যাপারটাই আমি সকলকে বোঝাতে চাই। সম্প্রতি একটা উদ্যোগে যোগ দিয়েছি আমি। দেখি, এই ব্যাপারে আমার এই ভূমিকাকে কাজে লাগানো যায় কি না। |