বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এ বার কোচবিহারে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তৈরির অনুমোদন দিল রাজ্য সরকার। শহর লাগোয়া হরিণচওড়া এলাকায় কলেজ তৈরি করার জায়গা চূড়ান্ত হয়েছে। কলেজের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বলেও ঠিক হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিব বিবেক কুমার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ‘ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট’ (ডিপিআর) তৈরির জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সচিব মনোজ অগ্রবালকে চিঠি দেন। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাঠানো ওই চিঠিতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তৈরির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ২০ কোটি টাকার মধ্যে দ্রুত ডিপিআর তৈরির কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বাম জমানায় পিছিয়ে পড়া কোচবিহারে সামগ্রিক উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী চেষ্টা করছেন। সে সুবাদে এবার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অনুমোদন সম্ভব হয়েছে। হরিণ চওড়া এলাকায় কলেজটি হবে। খুব দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা হচ্ছে।”
হরিণচওড়া এলাকায় সরকারের অধীন ৩০ একরের বেশি জমি রয়েছে। জমিতে মনীষী পঞ্চানন বর্মার নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ব্যাপারে শাসক দল এবং প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ উদ্যোগী হন। শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এলাকা ঘুরে দেখেন। দলের একাংশের সমর্থনে মাথাভাঙার খলিসামারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিকে ঘিরে বিতর্ক প্রকাশ্যে আসে। মধ্যবর্তী জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পরিকল্পনা নেয় রাজ্য সরকার। সেই মত গত বছর কোচবিহার বিবেকানন্দ স্ট্রিট এলাকায় কৃষিফার্মের জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার সবুজ সংকেত দেয় সরকার।
তার পরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তৈরির জন্য জমির খোঁজ শুরু হতেই হরিণচওড়ার বিষয়ে জোর দেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কারিগরি শিক্ষা বিভাগের আধিকারিকদের একটি দল এলাকা ঘুরে দেখে উর্ধ্বতন কর্তাদের রিপোর্ট জমা দেন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “অনুমোদন পাওয়ার পরেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তাদের দ্রুত ১০ একর জমি শিক্ষা দফতরকে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে হস্তান্তরের কাজ হয়ে যাবে। বাড়তি জমি দরকার হলে সেটা নিয়েও সমস্যা হবে না।”
পাশাপাশি এলাকায় আইন কলেজ ও মাদ্রাসা কলেজ তৈরির ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে কয়েক জন আধিকারিক জানান। পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথবাবু’র দাবি, হরিণ চওড়ার এলাকাটিকে আমরা এডুকেশন হাব হিসাবে গড়তে চাইছি। পিপিপি মডেলে আইন কলেজ তৈরি করার জন্য আলোচনা এগোচ্ছে। প্রস্তাবিত ওই জমির অদূরে তোর্সার প্রবাহ পথ থাকায় ২ কিমি বাঁধ তৈরির ব্যাপারেও সেচ দফতর প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে। |