ফের ভোলবদল আবহাওয়ার। বসন্তের মেজাজ সরিয়ে এ বার নিজের চরিত্রে ফিরছে গরম।
চলতি মাসের মাঝামাঝি যেন বদলে গিয়েছিল গরমের ছবিটা। ভরা গ্রীষ্মেও ফিরে এসেছিল বসন্তের মেজাজ। রাতের তাপমাত্রার পতনে ভোরের দিকে গায়ে হাল্কা চাদর চাপাতে হচ্ছিল। কিন্তু আবহবিদেরা বলছেন, এলোমেলো মেজাজ শেষ। এ বার ফের ‘সুর চড়াচ্ছে’ গরম। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, শুধু তাপমাত্রাই নয়, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে চড়চড়িয়ে বাড়ছে আর্দ্রতাও। যার জেরে চরম অস্বস্তিতে পড়ছেন মানুষ।
আবহবিদেরা জানান, এপ্রিলের মাঝামাঝি গরম উধাও হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণবঙ্গ থেকে। এর পিছনে ছিল দক্ষিণবঙ্গের উপরে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা এবং তার সঙ্গে সঙ্গেই ঝাড়খণ্ডে একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এর জেরেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছিল। কমে গিয়েছিল তাপমাত্রাও। এক আবহবিদের কথায়, “সাধারণত গরমকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে উপরে থাকাটাই দস্তুর। কিন্তু লাগাতার ঝড়বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নীচে নেমে গিয়েছিল।”
হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গের উপর থেকে নিম্নচাপ অক্ষরেখা সরে যাওয়ার পর থেকেই আবহাওয়ায় বদল দেখা দিচ্ছে। রবিবার কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ১ ডিগ্রি বেশি। উপগ্রহ চিত্রেও এ দিন মহানগরে মেঘের দেখা পাননি আবহবিদেরা। তা হলে এ বার কি তীব্র দহনের পালা আসতে চলেছে মহানগরে?
এ দিন তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন আবহবিজ্ঞানীরা। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের এক আবহবিদ বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টা কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে। বৃষ্টির দেখা না মেলার সম্ভাবনাই বেশি।” তীব্র গরমের জেরে এ দিন সকাল থেকেই নাকাল হন রাজ্যবাসী। রাস্তায় বেরোলে গরমের হল্কা তো ছিলই, সঙ্গে ছিল ‘গোদের উপরে বিষফোঁড়া’ ঘামও। গরমের দাপটে নাজেহাল হয়ে অনেকেই পথেঘাটে গলা ভিজিয়ে নিয়েছেন ডাব বা ঠান্ডা পানীয়ে। কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন আইসক্রিমও। আবহবিদদের মতে, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি।
চিকিৎসকেরা নাগরিকদের সতর্ক হতে বলছেন। তাঁদের মতে, ঘামের দাপটে শরীর থেকে নুন ও জল বেরিয়ে গিয়ে অসুস্থ হতে পারেন। হতে পারে হিট স্ট্রোকও। তাই বেশি করে জল খান। জলে নুন-চিনি মিশিয়ে খাওয়াটাই শ্রেয়। রোদে বেরোতে হলে ছাতা ও সানগ্লাস ব্যবহারেরও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরম এড়াতে দিনে অন্তত দু’বার স্নান করুন। তবে রোদ থেকে ঘরে ঢুকেই স্নান করবেন না। খাবারের তালিকায় রাখুন তেলমশলাহীন খাবার, জল ও রসালো ফল। রাস্তার কাটা ফল ও বাইরের খাবার খেতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। |