গরমে জলসঙ্কট হবে, মানছে জেলা প্রশাসন
রম পড়তেই পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। সঙ্কটের অন্যতম কারণ, জেলার প্রায় এক তৃতীয়াংশ নলকূপই অকেজো! সঙ্গে নতুন প্রকল্প রূপায়ণের গতিও অত্যন্ত ধীর। গ্রীষ্মে পানীয় জলের সঙ্কট প্রতি বছরই হলেও আগে থেকে কেন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন? প্রশাসনিক কর্তাদের কাছ থেকে এর সদুত্তর মেলেনি।
কিন্তু এখন কী উপায়?
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের (মেকানিক্যাল) এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিত্যানন্দ খান বলেন, “নলকূপগুলি সারানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক প্রণব ঘোষ বলেন, “আরও নতুন ৮০০ নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।” যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই কাজগুলি করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু আদৌ কীভাবে তা সম্ভব সে নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণেই গরমের আগে এই জরুরি পরিষেবার দিকে নজর দেওয়া হয়নি। তাই সঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে।
ব্লকে ব্লকে পানীয় জলের জন্য হাহাকার শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতি দিনই বিডিও অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কোথাও নতুন নলকূপ করার দাবি, আবার কোথাও অকেজো নলকূপ সারানোর দাবি। এত দিন জলের চাহিদা কম থাকায় সাধারণ মানুষ যা হোক করে চালিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেচের জলের জন্য মাঠে মাঠে জোর কদমে গভীর নলকূপ চলছে তেমনই বেড়েছে পানীয় জলের চাহিদা। এর জেরে দ্রুত জলস্তর নামতে শুরু করেছে। ফলে কোথাও হঠাৎ করেই অকেজো হয়ে পড়ছে নলকূপ, আবার কোথাও জল বেরোলেও তার পরিমাণ এতটাই কম যে চাহিদা মিটছে না। ফলে পানীয় জলের দাবিতে মানুষ সোচ্চার হচ্ছেন মানুষ। তাতেই প্রশাসনের টনক নড়ে, উঠে আসে নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে থাকার তথ্য।প্রকল্প রূপায়ণেও ঢিলেমি হচ্ছে বলে অভিযোগ। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে জেলায় নতুন ৯০০টি নলকূপের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ নলকূপ তৈরির কাজ এখনও শেষ করা যায়নি। এ ছাড়াও জেলায় পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে যে ১৮৮টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের কথা। প্রকল্পের ১২৭টির কাজ শেষ হলেও এখনও ৬১টির কাজ বাকি। তার মধ্যে আবার যে প্রকল্পগুলির কাজ শেষ হয়েছে তারও সব প্রকল্প চালু করা যায়নি। যেমন সবংয়ের পান পাড়ায় জলাধার তৈরি হলেও পাইপ লাইন না করতে পারায় জল সরবরাহ করা যায়নি। আবার কোথাও রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সমস্যা। এ ভাবেই পড়ে রয়েছে প্রকল্পগুলি।
জেলার হাল-হকিকত
৩১, ২৬৭
২২, ২১৩ চালু
৯০৫৪
১৬০৮
২৮০২টি
৪৬৪৪টি
অথচ, ওই প্রকল্পগুলি চালু হলে জেলার প্রায় ৫১ লক্ষ মানুষের মধ্যে (২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী) ১৩ লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষের উপকৃত হওয়ার কথা। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকার ৯ লক্ষ ৫৬ হাজার ১০৯ জন ও পুরসভা এলাকার ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ১৭৬ জন রয়েছেন। এর মধ্যেই জেলায় আরও ৮০০ নতুন নলকূপ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে কী সঙ্কট মিটবে? প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতিটি ব্লকে নলকূপ তৈরির যে পরিমাণ আবেদনপত্র জমা পড়েছে ও পড়ছে তার সংখ্যাটা খুবই বেশি। কোনও ব্লকে ২০০টি, আবার কোনও ব্লকে ৫০টি। যদি গড়ে প্রতিটি ব্লকে নতুন ৫০টি করেই নলকূপ দেওয়া হয়, তা হলেও জেলার ২৯টি ব্লকে প্রায় দেড় হাজার নলকূপের প্রয়োজন। না হলে পানীয় জলের সঙ্কট মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে বলে স্বীকার করছেন প্রশাসনিক কর্তারাই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.