বনে আগুন নয়, হাতি তাড়াতে সমস্যা
ন দফতরের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে হাতির পাল। বহু চেষ্টার পর শুক্রবার রাতে বুদবুদে সেনাবাহিনীর অ্যামিউনিশন ডিপো সংলগ্ন জঙ্গল থেকে তাদের বের করেছিল বন দফতর। ঘন্টাখানেকের মধ্যেই তারা ফের ওই জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তার পর একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও হাতির পাল এলাকা ছাড়েনি। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখে পড়ছেন বনকর্মীরা।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই হাতির পালটি ঘুরে বেড়াচ্ছে দামোদরের এপারে কাঁকসা ও বুদবুদের বিস্তীর্ণ এলাকায়। দলে মোট ১৮টি হাতি রয়েছে। তার মধ্যে তিনটিই খুদে। কাঁকসা থানার আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোবারকগঞ্জে দলটি আমগাছ, ধান, কুমড়ো, টম্যাটো, শসা খেত নষ্ট করে। হাতির পায়ের আঘাতে জখম হন এক ব্যক্তি। সেদিন রাতেই হাতিগুলিকে দামোদর পার করিয়ে বড়জোড়া রেঞ্জে পাঠানো হয়। কিন্তু পরদিনই দলটি ফিরে আসে বুদবুদের সেনা ছাউনির অ্যামিউনিশন ডিপোর পাশের জঙ্গলে। হাতির তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে জখম হন এক বন শ্রমিক। শুক্রবার বিকেলে হাতি খেদানোর অভিযানে নামে বন দফতর। রাতে হাতির পাল জঙ্গল থেকে বেরিয়ে তিলডাঙার ফাঁকা মাঠে গিয়ে পৌঁছয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফের তারা ফিরে যায় জঙ্গলে।
কেন বার বার তারা জঙ্গলে গিয়ে ঢুকে পড়ছে?
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যামিউনিশন ডিপো সংলগ্ন জঙ্গলে প্রচুর শিমুল গাছ রয়েছে। ওই ফুল খাবার হিসেবে হাতিদের প্রিয়। এছাড়াও গাছে অনেক আম ধরেছে। বড় বড় গাছও রয়েছে। হাতিদের খাবারের কোনও অভাব নেই সেখানে। আর পেট পুরে খেয়ে হাতির দল নেমে যাচ্ছে বড় পুকুরের জলে। থাকার এমন ভাল জায়গা হারাতে চাইছে না হাতির দল।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হুলা পার্টি চেষ্টা করেও হাতির দলকে সরাতে পারছে না। প্রথমত, সেনাবাহিনীর বেসে ঢুকতে গেলে ছ’দফা পরীক্ষা করা হয়। ভিতরে যেতে দিলেও অ্যামিউনিশন ডিপো সংলগ্ন এলাকায় আগুনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়ায় হাতিদের লক্ষ্য করে মশাল ছোড়া যাচ্ছে না, পটকা ফাটানোর তো কোনও প্রশ্নই নেই। যাওবা তাদের জঙ্গল থেকে বের করা গিয়েছিল, বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের তিনটি খুদে হাতি। তারা একটানা বেশিক্ষণ হাঁটতে পারে না। মাঝে মাঝে বসে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ে পুরো হাতির দলটিই। অন্য দিকে, খেতের ফসল নষ্ট হওয়ার ভয়ে গ্রামবাসীরাও মাঝপথে হাতির পালকে আটকে দিচ্ছেন। ফলে ফের হাতির দল ফিরে যাচ্ছে জঙ্গলের গভীরে।
দীর্ঘদিন ধরে হাতির পাল এলাকায় থাকায় আতঙ্কিত সংলগ্ন তিলডাঙা, সন্ধিপুর, সুখডাল গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বন দফতর হাতি তাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না। হুলা পার্টির কাছ থেকে সার্চ লাইট, মশাল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একাধিক জায়গায়। গ্রামবাসীদের হাতে বন কর্মীদের প্রহৃত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন বন দফতরের এক আধিকারিক। বন দফতরের বর্ধমান বিভাগের পানাগড় রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার কাশীনাথ দে বলেন, “আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা জানি, গ্রামবাসীদের ক্ষোভের সঙ্গত কারণ রয়েছে। তবু তাঁদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাইছি।” বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া থেকে হাতি তাড়ানোর বিশেষ একটি দল এসে পৌঁছেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.