সম্পাদক সমীপেষু...
সংস্কৃত ফিরিয়ে আনুন
প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের প্রতিবাদ/ প্ল্যাকার্ডে ভুল বানান...” (১২-৪) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে মর্মাহত হলাম। এত দিন রাস্তার পাশে হোর্ডিংয়ে, বিজ্ঞাপনে, টি ভি-র খবরের সাব-টাইটলে বাংলা বানানের নব নব রূপ দেখতে পাচ্ছিলাম। অবশেষে প্রেসিডেন্সি পড়ুয়াদের প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ডে ‘নিষ্ক্রীয়তা’ দেখে আর নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকা গেল না। চার দিকে ভুল বানান দেখে মনে হচ্ছিল ‘বানান ভুল’ কথাটাই বোধহয় ভুল। ঠিক ভুল বিচার করার ভিত্তিটা কী? ব্যাকরণই বানানের ভিত্তি হওয়া উচিত। যে হেতু বাংলা ব্যাকরণ সংস্কৃতের উপর নির্ভরশীল, তাই সংস্কৃত ছাড়া বাংলা বানানের শুদ্ধি ঘটানো সম্ভব বলে মনে হয় না। বাংলার তদ্ভব ও তৎসম শব্দের পিছনে যে ধাতু-প্রত্যয়ের যোগসাজশ আছে, সেটি ধরতে পারলে বানান সম্পর্কে আর কোনও সংশয়ই থাকে না। কেবল বানান নয়, শব্দার্থ সম্পর্কে সঠিক ধারণা হয়। যত দিন স্কুলের পাঠক্রমে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সংস্কৃত তৃতীয় ভাষা হিসাবে পড়ানো হত, তত দিন এই ভয়াবহ বানান বিপর্যয় দেখা যায়নি। তার পর সংস্কৃত তুলে দেওয়া হল, ব্যাকরণকেও গুরুত্ব দেওয়া হল না। ফলে, বাংলা শব্দের বানান এবং তার অর্থ ক্রমে ক্রমে অর্থহীন হয়ে গেল। আজকাল ২১ ফেব্রুয়ারিতে ‘মাতৃভাষা দিবস’ ঘটা করে পালন করা হয়। ভাষা নিয়ে কত আদিখ্যেতা! কত কায়দা। কায়দাটা এত বড় যে, ভাষাটাকেই দেখা যায় না। বাংলার নতুন বছরে বিদ্বজ্জনেদের কাছে অনুরোধ, আপনারা পরবর্তী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে বাংলা বানানের স্বার্থে সংস্কৃত শিক্ষার কথা ভেবে দেখুন। তাতে বাংলা সাহিত্যও উপকৃত হবে। আর লিটারেচারকে বাদ দিয়ে লিটারেট হওয়া যায় না।
ভুল তথ্য
পত্রিকা বিভাগে প্রকাশিত শংকরের ‘মৃতদের রাজ্যপাট’ (১৬-৩) পড়লাম। দুটি ছোট ভুল চোখে পড়ল। এক, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বইয়ের নাম ‘পথের পাঁচালী’ (সেপ্টেম্বর ১৯২৯) ‘পথের পাঁচালি’ নয়। দুই, নীরোদচন্দ্র চৌধুরী নামে কোনও প্রাবন্ধিক ছিলেন না, ছিলেন নীরদচন্দ্র চৌধুরী।
ব্যাঙ্ক কাছেই আছে, মানুষ সচেতন নয়
ব্যাঙ্ক তো আমাদের জন্য নয়’ (২৪-৪) বোলান গঙ্গোপাধ্যায়ের কথাটা ভুল। এখন এক মাইল অন্তর বিভিন্ন ন্যাশনালাইজড ব্যাঙ্কের শাখা খুঁজে পাওয়া যায়, যাতে অতি সাধারণ মানুষও সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। অ্যাকাউন্ট খোলা হয় জিরো ব্যালান্সে। অর্থাৎ অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে সাধারণ মানুষকে ন্যূনতম অঙ্ক নিজেদের গাঁট থেকে বের করতে হয় না। ব্যাঙ্কেও নানা স্কিম আছে, যাতে সাধারণ মানুষও স্বল্প আমানত জমা রেখে মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সুদ তুলে নিতে পারেন। কিংবা মেয়াদ শেষে আসল ও সুদ-সহ থোক টাকা তুলে নিতে পারেন। এর জন্য তাকে বারবার ব্যাঙ্কে আসার প্রয়োজন হয় না। সুদের টাকা আপনা থেকেই তার পাশ বুকে জমা হয়ে যায়। এবং ব্যাঙ্কে না-এসেও এখন এ টি এম-এর মাধ্যমে ওই জমা টাকা তোলা যায়। হাতের গোড়ায় ব্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও মানুষ কেন চিটফান্ডে টাকা রাখছে? সেটা বোধহয় মানুষের দূরদর্শিতার অভাব। এর আগেও অনেক চিটফান্ড মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। আমার অফিসের সামনেই এমন একটি সংস্থার অফিস ছিল। বন্ধ হয়ে যেতেই লুঠপাট হতে দেখেছি। মানুষ তবু সচেতন হয়নি। ঘটনা-দুর্ঘটনার রেশ হয়তো কিছু দিন মানুষের মনে থাকে এবং আস্তে আস্তে তা মুছে যায়। কিন্তু একটা কথা খুব পরিষ্কার চিটফান্ডগুলো যে সুদ দেওয়ার কথা বলে, তা তারা দেবে কোথা থেকে? মানুষকে প্রলুব্ধ করার জন্যই তারা বেশি সুদ দেওয়ার কথা বলে। ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির কথা ওই চিটফান্ডগুলো আগে থেকেই ভেবে রাখে। মোটা রকম টাকা সংগৃহীত হলেই বা মেয়াদ আসন্ন হলেই ব্যবসা গুটিয়ে নেয়, যাতে কোনও জমানো টাকা ফেরত দিতে না-হয়। অতীতের ঘটনা দেখে এত দিনে মানুষের সচেতন হওয়া উচিত ছিল।
গাঁধী টুপি
রবিবাসরীয়তে গৌতম চক্রবর্তীর ‘কাঁচিবাবু’ নিবন্ধটি পড়লাম। গৌতমবাবু এই নিবন্ধে সত্যজিৎ রায়ের ‘পরশপাথর’ ছবির একটি দৃশ্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, পরশপাথর ছবিতে তুলসী চক্রবর্তী লোহাকে সোনা বানিয়ে আচমকা বড়লোক হয়ে গিয়েছেন এবং ককটেল পার্টিতে আমন্ত্রিত হয়ে মাথায় গাঁধী টুপি পরে এসেছেন। এখানেই সেন্সরের আপত্তি ছিল। কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের মোক্ষম দুটি যুক্তিতে সেন্সরের এই আপত্তি ধোপে টেকেনি। কিন্তু বহু বার দেখা এই ছবিতে আমরা দেখেছি, ককটেল পার্টির দৃশ্যে তুলসী চক্রবর্তীর মাথায় ছিল কালো ও গোল একটা টুপি। পরনে সাদা গলাবন্ধ কোট, কালো প্যান্ট, চোখে রিমলেস চশমা, গলায় সম্ভবত ছিল একটি সোনার চেন। ‘পরশপাথর’ ছবিতে মাথায় গাঁধী টুপি তুলসী চক্রবর্তী পরেছিলেন দুটি দৃশ্যে। এক বার একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অনুষ্ঠানের শেষে সংক্ষিপ্ত ভাষণ ও সোনার মেডেল বিতরণের সময়ে এবং তার পর কিছুক্ষণ নিজেরই বাড়িতে। এই কয়েকটি দৃশ্য ছাড়া ‘পরশপাথর’ ছবিতে তুলসী চক্রবর্তীর মাথায় কখনওই কোনও রকম টুপি দেখা যায়নি। কাজেই গৌতম চক্রবর্তীর নিবন্ধের তথ্যাদির কিছু অংশের সঙ্গে একমত হতে পারলাম না।
অঞ্জনবাবু ঠিকই বলেছেন। লেখায় এই তথ্যগত ভ্রান্তির জন্য আমি দুঃখিত। তবে সেন্সর যে গাঁধী টুপি কাটেনি, সেটিই ছিল আমার বক্তব্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.