|
|
|
|
দমদম স্টেশন |
উদ্বোধনের পরেই বন্ধ চলন্ত সিঁড়ি, চূড়ান্ত নাকাল যাত্রীরা
অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় |
কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হল। উদ্বোধনও করা হল। কিন্তু দমদম স্টেশনের চলন্ত সিঁড়ি যাত্রীদের কাজে আসল না।
মাসখানেক আগে খোদ রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করেছিলেন দমদমের ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে একটি এসক্যালেটর বা চলন্ত সিঁড়ির। কিন্তু পরদিন থেকেই ওই সিঁড়ি বন্ধ রয়েছে। এমনিতেই দমদমের মতো সদাব্যস্ত স্টেশনে একটি লোকাল ট্রেন এলেই ওই দুই প্ল্যাটফর্মের যাত্রীদের নামা-ওঠা দায় হয়। যাত্রীদের পক্ষ থেকে বহু আবেদন নিবেদনের পরে যা-ও বা এই সিঁড়ি তৈরি হল, কিন্তু সেটিও না চলায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। এ বার তাঁরা বিষয়টি রেল প্রতিমন্ত্রীকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
পূর্ব রেলের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, চলন্ত সিঁড়ির তলায় একটি করে বোতাম থাকে। যা টিপে দিলে সিঁড়ি বন্ধ হয়ে যায়। আর এক বার বন্ধ করলে চাবি ঘুরিয়ে আবার ওই সিঁড়ি চালু করতে হয়। রেলের বক্তব্য, দমদম স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকা ভবঘুরে ছেলেরা মাঝেমধ্যেই বোতাম টিপে পালিয়ে যায়। তাই চালানো যাচ্ছে না এসক্যালেটর।
রেলের ওই ব্যাখ্যা অবশ্য মানতে চাননি যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, ভবঘুরে ছেলেরা যাতে বোতাম না টিপতে পারে, সেই ব্যবস্থা রেলকেই করতে হবে। যাত্রীদের দাবি, যন্ত্রে গোলমালের কারণেই এই বিপত্তি। রেলকর্তারা অবশ্য ওই অভিযোগ স্বীকার করেননি। এক রেলকর্তার কথায়, “শীঘ্রই
যাতে সিঁড়িটি চালানো যায় তার ব্যবস্থা হচ্ছে।”
এর আগেও একই ভাবে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলন্ত সিঁড়ি বসানোর পরিকল্পনা করেছিলেন পূর্ব রেলের কর্তারা। প্রায় বছরখানেক ধরে এমনি সিঁড়ি ভেঙে চলন্ত সিঁড়ি বসানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু সেই কাজও এগোয়নি। রেল সূত্রে খবর, ওই প্ল্যাটফর্মের গা ঘেঁষেই মেট্রোর দেওয়াল। ফলে ওই জায়গায় চলন্ত সিঁড়ির যন্ত্রপাতি বসানোর জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করতে গেলে মেট্রোর দেওয়াল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এর জেরে মেট্রোর সঙ্গে চাপান-উতোর শুরু হয় পূর্ব রেলের। তার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই কাজ। প্রায় বছর দেড়েক ফেলে রেখে ফের এমনি সিঁড়িই বানাতে হয় রেলকে। রেলকর্তাদের একাংশের অভিযোগ, পরিকল্পনাতেই গলদ থাকায় ওই কাজ আর করা যায়নি। উল্টে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে।
মেট্রো ও লোকাল ট্রেনের জন্য দমদমে এখন প্রতি মুহূর্তে ভিড় আছড়ে পড়ছে। লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করছেন লোকাল ট্রেনে। হয় দমদমে নেমে তাঁরা মেট্রো ধরছেন বা মেট্রোতে দমদমে নেমে তাঁরা লোকাল ট্রেনে উঠছেন। এমন অবস্থায় দমদমের প্ল্যাটফর্মগুলিতে ওঠানামার জন্য যে দু’টি সিঁড়ি রয়েছে, তা বহু কাল আগের। তখন এত ভিড় ছিল না। কিন্তু গত ১০-১২ বছরে দমদমে ভিড় বেড়েছে প্রায় দশ গুণ। কিন্তু সিঁড়ি বাড়েনি। এখনও পরিকল্পনা হয়নি।
পাশাপাশি, দমদম রোড থেকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসার যে রাস্তা তা-ও বাড়াতে পারেনি রেল বা মেট্রো কেউই। ফলে এই স্টেশন দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত করতে নিত্যই চূড়ান্ত নাকাল হতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দমদমের যাত্রী অ্যাসোসিয়েশনও বারবার রেল এবং মেট্রোর কাছে দরবার করেছেন কিন্তু লাভ হয়নি।
|
|
|
|
|
|