জানতই না হাওড়া প্রশাসন
তৃণমূলের বিক্ষোভ, বন্ধ রইল বাস-ডিপো
শ্রমিক আন্দোলনের নামে কার্যত এক নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় হাওড়ার ঘাসবাগান ডিপোয় শনিবার প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকল বাস চলাচল। বেরোতে পারল না কলকাতা ট্রাম কোম্পানির গড়িয়া, বারুইপুর, মুন্সিরহাট, শিয়ালদহের মতো গুরুত্বপূর্ণ রুটের বহু বাস।
এই আন্দোলনের নেতৃত্বে তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন ‘কলকাতা ট্রামওয়েজ মজদুরসভা’ (সিটিএমএস) থাকলেও এই খবর জানতেন না ওই সংগঠনের সভাপতি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এমনকী, প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে ঘেরাও-আন্দোলনের জেরে ওই ডিপো থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ রুটের প্রায় ৩০টি বাস বেরোতে না পারলেও সেই খবর ছিল না হাওড়া সিটি পুলিশ বা পরিবহণমন্ত্রীর কাছে। শেষ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেন মন্ত্রী, শ্রমিক নেতা থেকে পুলিশ-প্রশাসন। বিকেল সাড়ে চারটের সময়ে পুলিশ গিয়ে ডিপো থেকে বাস বার করার ব্যবস্থা করে। পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। কিন্তু প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে ঘাসবাগান ডিপোয় এই ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “বিকেলের দিকে খবর পেয়ে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। এর পরে ঘেরাও মুক্ত করে বাস চালানোর ব্যবস্থা করা হয়।”

বিক্ষোভ চলছে সেই ডিপোয়। শনিবার।—নিজস্ব চিত্র
ঘাসবাগান ডিপো সূত্রে খবর, ঘটনার শুরু এ দিন সকালে এক বাসচালককে ভোরে ডিউটি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তৃণমূলের সিটিএমএস শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, ওই বাসডিপোয় কিছু দিন ধরে ইচ্ছামতো কর্মচারীদের ডিউটি দেওয়ার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, এর পিছনে রাজনীতি রয়েছে। সিটিএমএস সংগঠনের নেতা সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “যে সব চালক দূরবর্তী জেলায় থাকেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁদের জোর করে ভোরে ডিউটি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, কোনও বাসের যন্ত্রাংশ খারাপ হলে তা সারানোও হচ্ছে না। নানা ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কর্মচারীদের হয়রান করা হচ্ছে। এরই প্রতিবাদ করি আমরা। কোনও বাস বন্ধ হয়নি।”
যদিও ওই ডিপোর কংগ্রেস প্রভাবিত সংগঠন ‘কলকাতা ট্রামওয়েজ এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর সভাপতি অমরনাথ তেওয়ারি বলেন, “সিটিএমএসের জনা ৩০ কর্মী এ দিন দুপুর ১২টা থেকে এক অফিসারকে ঘেরাও করে রেখে বিক্ষোভ দেখান। অন্য শ্রমিক সংগঠনের সমর্থক-কর্মচারীরা বাস চালাতে চাইলেও তা করতে দেওয়া হয়নি।”
এ দিন বিকেলে ঘাসবাগান ডিপোয় এই শ্রমিক-বিক্ষোভ চলার সময়ে বিক্ষোভকারী ইউনিয়নের সভাপতি, তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি তো এই ঘটনার কথা কিছু জানি না। ১০ মিনিট পরে ফোন করলে বলতে পারব।”
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমি জানি না ঠিক কী ঘটেছে। খবর নিচ্ছি। সিটিসি-র চেয়ারম্যানকেও ডেকে পাঠাচ্ছি।”
কিন্তু যে সব শ্রমিক কাজ না করে এত ক্ষণ ধরে তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে আন্দোলন করলেন, ডিপো থেকে বাস বেরোতে দিলেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “সোমবার দুপুর ১টার মধ্যে এ ব্যাপারে সিটিসি-র চেয়ারম্যানের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছি। বলেছি, কোনও ভাবেই এক মিনিটও বাস বন্ধ করা যাবে না। যাঁরা এ সব করবেন, দলের ঝান্ডা না দেখে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.