এক ঝলকে...
পৃথিবী
হোয়াংহো নদের জলে
• উরুমকি, শিনজিয়াং • শিনজিয়াং আবার উত্তপ্ত। চিনের পশ্চিমাঞ্চলে এই প্রদেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দা উইগুর জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। সংখ্যায় তাঁরা প্রায় এক কোটি। ধর্মে মুসলমান, জাতিপরিচয়েও চিনের প্রধান গোষ্ঠী হান চাইনিজদের থেকে স্বতন্ত্র। তিব্বতের মতো শিনজিয়াংয়েও ক্রমাগত বাইরে থেকে হান চিনাদের এনে বসতি করিয়ে করিয়ে উইগুরদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হয়েছে। স্বভূমিতে এখন তাঁরা জনসংখ্যার অর্ধেকও নন আর। তিব্বতের মানুষের মতো তাঁরাও স্বশাসন চান। তিব্বতের মতোই, এখানেও বেজিংয়ের দাপট প্রবল, মাঝে মাঝেই যে দাপট নেমে আসে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বন্দুকের নল থেকে। যেমন গত মঙ্গলবার নেমে এল কাশগর এলাকার বাচুতে। পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত একুশ জন। ধরপাকড় চলেছে, যথারীতি। আপাতত এলাকা শান্ত। শ্মশানের শান্তি। আল-কায়দা সমর্থিত ইস্ট তর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট নামক জঙ্গি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী ঘাঁটি ভাঙতে গিয়েছিল পুলিশ, সঙ্গে ছিল সমাজকর্মীরা, সেই সূত্রেই সংঘর্ষ। বেশি কেউ এ কাহিনি বিশ্বাস করছে না অবশ্য।
২০০৯ সালে যখন শিনজিয়াংয়ে আগুন জ্বলেছিল, শ’দুয়েক উইগুর নাগরিক প্রাণ হারিয়েছিলেন, তখনও সন্ত্রাসবাদ দমনের গল্প শুনিয়েছিলেন চিনা কর্তারা। জঙ্গি কার্যকলাপ এই অঞ্চলে আছে ঠিকই, কিন্তু সেটাই কি পুলিশি অভিযানের আসল কারণ, না কি স্বাধীনতাকামী বাসিন্দাদের ভয় দেখানোর জন্য এই দমন অভিযান? সন্দেহ নিরসন প্রায় অসম্ভব, কারণ এই অঞ্চলের খবরাখবর বাইরের পৃথিবীতে পৌঁছতে দেওয়া হয় না, বেজিংয়ের খবরদারি এখানে তিব্বতের চেয়ে বেশি বই কম নয়। মার্কিন বিদেশ দফতর থেকে চিনের উদ্দেশে ‘কড়া’ বিবৃতি প্রচারিত হয়েছে। উইগুরদের সুরক্ষার দাবি আছে তাতে, সাম্প্রতিক ঘটনার স্বচ্ছ তদন্তও চাওয়া হয়েছে। এমন কত দাবি কত বার হোয়াংহোর জলে ভেসে গেছে, মহাকালও হিসেব রাখতে পেরেছেন কি? ছবিতে, দাঙ্গায় বিধ্বস্ত উইগুর কোঠাবাড়ি।

হাজার বছর পর
• আলেপ্পো • ইতিহাস ধ্বস্ত হল সিরিয়ায়। একাদশ শতকের ঐতিহ্য-মণ্ডিত উমাইয়াদ মসজিদ, ইউনেসকো-র অন্যতম ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’, যা দেখতে প্রতি বছর বহু পর্যটক সারা পৃথিবী থেকে আসতেন গোলায় ঝাঁঝরা হল গত সপ্তাহে। অনেক দূর থেকে দেখা যেত মসজিদটির অসামান্য মিনার, সেটিও এখন ধূলিলুণ্ঠিত। সিরিয়ার সংঘর্ষ চলছে, চলবে, শেষও হবে কোনও না কোনও দিন। কিন্তু সহস্র বছরের পুরনো ঐতিহাসিক মহিমা আর ফিরে পাবে না সিরিয়া। উভয় যুযুধান পক্ষই বুঝেছে, ক্ষতিটা বেশি হয়ে গেল। চলছে পারস্পরিক দোষারোপের পালা। ছবিতে, মসজিদের অতীত ও বর্তমান চেহারা।

নজরবন্দি
চাক হেগেল-এর মুখেই শোনা গেল ঘোষণাটা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রতিরক্ষা সচিব হেগেল, সে দেশের ভাষায় সেক্রেটারি অব ডিফেন্স। তাঁর ঘোষণা, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদ-এর সরকার বিদ্রোহীদের দমন করতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে বলেই আমেরিকার অনুমান। ‘সারিন’ নামক গ্যাসটি ব্যবহৃত হয়েছে বিদ্রোহীদের দমন করতে। সম্ভবত। হ্যাঁ, ‘সম্ভবত’ শব্দটা এখানে খুবই গুরুতর। ইরাক অভিজ্ঞতার পর তো বটেই। আবু ধাবিতে সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব তাই ভারী সাবধানে এই ‘বৈপ্লবিক’ ঘোষণাটি করলেন।
কেন ‘বৈপ্লবিক’? এমনিতেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়মানুসারে, কোনও রাষ্ট্রই রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারে না, সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি, শাস্তিযোগ্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী। তার উপর আরও একটা কথা। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় যে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে, রাষ্ট্রের যে চরম নিপীড়ন চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমি দেশগুলি দ্বিধান্বিত একটা অবস্থান নিয়ে এসেছে এত দিন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার বক্তব্য ছিল, ‘প্রয়োজন’ হলে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ করতে হবে, সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদকে তাই বহু বার ‘সীমা’র মধ্যে থাকতে বলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রশ্ন হল, কাকে বলে ‘সীমা’? ওবামার মতে, যদি বোঝা বা জানা যায়, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে, সেটাই হবে সহ্যের শেষ সীমা, তাঁর ভাষায় ‘রেড লাইন’।
গত সপ্তাহে হেগেল জানালেন, এই প্রথম মনে হচ্ছে, সিরিয়ায় রাসায়নিক গ্যাসের ব্যবহার হয়েছে। তবে একশো শতাংশ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। পরবর্তী পদক্ষেপের আলোচনা কি এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই শুরু হবে? হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন কংগ্রেসে নোট পাঠানো হল পরবর্তী অবস্থান আলোচনার জন্য। আলোচনাটা সহজ হবে না। হোয়াইট হাউস ভালই জানে, পশ্চিম এশিয়ায় আর একটা যুদ্ধ শুরু করা মুশকিল, তা-ও আবার আধখ্যাঁচড়া প্রমাণের ভিত্তিতে। তা হলে? কোন দিকে এগোবেন ওবামা ও তাঁর সচিব হেগেল?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.