ধৃত বারোর জামিন নাকচ
সারদা-সহ মোট তিনটি ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার মালিক ও কর্মী মিলিয়ে ১২ জন ধৃতের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সি জে এম) অলি বিশ্বাস। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে হাজির করা হলে তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে ৪ দিন ও বাকি ৬ জনকে ৩ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন সিজেএম। সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশ্বপতি সরকার বলেন, “তাঁদের মধ্যে সারদা টুলস অ্যান্ড টেবিলস প্রাইভেট লিমিটেডের বহরমপুর শাখার ম্যানেজার বিপ্লব সাহা ও ডোমকলের রোসাইন প্রোজেক্ট ইন্ডিয়া লিমিটেডের ৫ মালিক—আতাউর রহমান, সিদ্দিকুল্লা আলম, রাইজুদ্দিন শেখ, সিরাজুল ইসলাম ও আইনাল হককে ৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।” বিশ্বপতি বলেন, “বহরমপুরের ক্রিপটন গ্রুপ অব কোম্পানিজের জয়েন্ট ডিরেক্টর শম্পা বিশ্বাস, মার্কেটিং ডিরেক্টর মৃণালকান্তি বেরা, ক্যাশিয়ার অরবিন্দ গঙ্গোপাধ্যায়, সংস্থার দুই কর্মী মৃণাল সরকার ও সুব্রত বিশ্বাস-সহ ধৃত মোট ৬ জনকে বিচারক ৩ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন।”
বহরমপুর থানার আই সি মোহাইমেনুল হক বলেন, “ক্রিপটন গ্রুপ অব কোম্পনিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, তথা শম্পা বিশ্বাসের স্বামী প্রাণকুমার বিশ্বাস পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে। ওই সংস্থার বহরমপুরের কার্যালয় থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ওই সংস্থার ব্যবহার করা একটি গাড়ির সামনে ‘মানবাধিকার কমিশন’ লেখা রয়েছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই গাড়িটি আটক করা হয়েছে। ওই সংস্থার এক এজেন্ট্র নাম সানিরুদ্দিন শেখ। ওই অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে দেওয়া চেক বাউন্স করায় সানিরুদ্দিন শেখ থানায় এফ আই করেন। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ওই ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের ৪২০, ৪০৬, ৪৬৮, ৪৭১, ৩৪/১২০ (বি) এবং ১৩৮ এন আই অ্যাক্ট ধারায় পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। এ দিন এজলাসে ধৃতদের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, “এন আই অ্যাক্টে কাউকে গ্রেফতার করার আগে কতকগুলি আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। ওই প্রক্রিয়াগুলি না করেই আমার মক্কেলদের বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।” আবেদন অবশ্য নাকচ করে দিয়ে বিচারক ধৃতেদের ৩ তিন পুলিশ হেফাজতে রাখর নির্দেশ দেন।
বহরমপুরে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশ্বপতি সরকার বলেন, “ডোমকলের বাজিতপুরের অনিমা সরকার সারদা টুলস অ্যান্ড টেবিল প্রাইভেট লিমিটেডের বহরমপুর শাখার একজন আমানতকারী। তাঁর জমা দেওয়া টাকা ফেরৎ পাচ্ছেন না বলে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সংস্থার বহরমপুর শাখার ম্যানেজার বিপ্লব সাহাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিচারক তাঁকে শুক্রবার থেকে ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন।” ডোমকলের মিলন হলের তিনতলায় রোসাইন প্রোজেক্ট ইন্ডিয়া লিমিটেড নামের একটি ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার কার্যালয় খুলে বসেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, “ওই সংস্থার এজেন্ট রফিকুল ইসালামের অভিযোগ, তাঁর জমা দেওয়া টাকার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর, তবুও তিনি টাকা ফেরৎ পাননি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সংস্থার ৫ মালিক-- আতাউর রহমান, সিদ্দিকুল্লা আলম, রাইজুদ্দিন শেখ, সিরাজুল ইসলাম ও আইনাল হককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে ধৃতদের ৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।”
এ দিকে ‘সারদা আমাতকারী ও এজেন্ট বাঁচাও কমিটির’ অন্যতম কর্তা আশরাফুল হক বলেন, “এদিন সকালে ইসলামপুর থানা এলাকার টেঁকা গ্রামের এজেন্ট সওকৎ আলির বাড়ি চড়াও হয়ে আমানতকারীরা কয়েক হাজার ইট ও কয়েকটি গরু লুঠ করে নিয়েছে। ওই গ্রামেরই আরও এক এজেন্টের তিন বিঘা খেতি জমি এ দিন কয়েক জন আমানতকারী জবরদখল করে নিয়েছে। ফলে ওই এলাকার অসহায় বিপন্ন অন্য এজেন্টরা সম্ভাব্য আক্রমনের আশঙ্কায় দিন কাট্টাচ্ছেন।” অন্য দিকে আরও একটি ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা ‘সম্বন্ধ গ্রুপ অব কোম্পানিজ’-এর এজেন্টরা একটি ইউনিয়ান গড়েছেন। নাম ‘সম্বন্ধ সেলস লিমিটেড এজেন্ট ইউনিয়ান’। ওই ইউনিয়নের পতাকা তলে তাঁরা এ দিন বহরমপুর শহরে মিছিল করেন। তারপর তাঁরা ওই সংস্থার কর্তাদের গ্রেফতার করে তাঁদের বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করার দাবিতে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.