তদন্তে ফের নন্দীগ্রামে সিবিআই
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
২০০৭ সালের ১৪ মার্চে নন্দীগ্রামে ‘গণহত্যা’র তদন্ত করতে সিবিআই-এর দুই সদস্য ফের এল নন্দীগ্রামে।দিল্লি থেকে আসা সিবিআই-এর ইনস্পেক্টর অনুরাগ সিংহের সঙ্গে ছিলেন কলকাতারও এক জন। শুক্রবার দুপুরে নন্দীগ্রাম থানায় আসেন তাঁরা। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে নন্দীগ্রাম থানায় বসে সেই সময় দায়ের হওয়া একাধিক মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। ওই ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ৪ জনের সঙ্গে কথাও বলে লিখিত আর্জি জমা নেন।
এ দিকে, সিবিআই-এর প্রতিনিধি দল আসার খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানায় জড়ো হয়েছিলেন ‘গণহত্যা’য় নিহত ও আহতদের পরিজন মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন। ‘বিচার চাই’ লেখা পোস্টার বুকের সামনে ঝুলিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। সিবিআই দলের সদস্যরা থানা থেকে বেরোলে তাঁদের ঘিরে নিহতদের পরিজন ও আহতরা বিক্ষোভ দেখান। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিয়ে টালবাহনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। |

বিচারের আশায়। নন্দীগ্রাম থানার সামনে গ্রামবাসীরা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নিহত ইমাদুল খানের বাবা আব্দুল দাইয়ান খান, সুপ্রিয়া জানার স্বামী সুকুমার জানা, প্রলয় গিরির দাদা পলাশ গিরিরা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেন, ছ’-ছ’টা বছর কেটে গেলেও এখনও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হয়নি। ঘটনায় জড়িত পুলিশ ও সিপিএম নেতাদের কারও শাস্তি হয়নি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত শাস্তি দেওয়ার দাবি লিখিত ভাবে জানান নিহতদের পরিজনেরা। সিবিআই’এর ইনস্পেক্টর অনুরাগ সিংহ অবশ্য এদিন ওই ঘটনার তদন্ত নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশি অভিযানের সময় সোনাচুড়ার ভাঙ্গাবেড়া ও গোকুলনগরে অধিকারী পাড়ায় জমায়েত হওয়া ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ১৪ জন নিহত হন ও বহু গ্রামবাসী আহত হন। |

সিবিআই-এর কাছে তদন্তের আর্জি |
হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই ওই ঘটনার তদন্তে নামে। কিন্তু এত তদন্তের পরে মাত্র তিন জন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে সিবিআই। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতাদের অভিযোগ, সিবিআই ওই ঘটনায় যে তিন জন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, তাঁরা সেদিন গোকুলনগরে ছিলেন। ভাঙ্গাবেড়ায় ওই দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ১১ জন নিহত হলেও সেখানে থাকা বেশ কিছু উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে তদন্তে সিবিআই বহু পুলিশ অফিসারকে আড়ালের চেষ্টা করছে। প্রতিবাদে নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির লোকজন গত ৮ এপ্রিল সল্টলেকে সিবিআই-এর আঞ্চলিক অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তার পরেই ফের সিবিআই-এর তদন্তকারী দলের নন্দীগ্রামে যাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
|
পুরনো খবর: পুলিশ জনতা সংঘর্ষে গুলিবৃষ্টি, নিহত ১৪ |
|