উত্তর কলকাতা
জবরদখল
আটকে সৌন্দর্যায়ন
হর সাজাতে খালধারের সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ, ঝুপড়িবাসীদের জন্য প্রকল্পের কাজ ধীরে চলছে। রয়েছে পার্কিংয়ের সমস্যাও।
কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ ক্যানাল ইস্ট রোড এলাকায় সৌন্দর্যায়নের জন্য একটি সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষায় ধরা পড়ে খালধারের বেশির ভাগ জায়গা জবরদখল হয়ে রয়েছে। ফাঁকা জায়গায় পার্কিং রয়েছে। এর পরে সৌন্দর্যায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ক্যানাল সার্কুলার রোড, ক্যানাল ইস্ট রোড এবং বেলেঘাটা খালধারে কাজ হওয়ার কথা ছিল।
খালপাড়ের জমিগুলি সেচ দফতরের। পুরসভা কোনও কাজ করতে চাইলে রাজ্য সেচ দফতরের অনুমতির প্রয়োজন। পার্কিং সরাতে পুরসভা কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক দফতরকে নির্দেশ দিতে পারে।
পুরসভার এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের তরুণ সাহা বলেন, “খালধারে ঝুপড়ি সরিয়ে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক বার ঝুপড়ি তোলা হয়েছে। আবার ঝুপড়িবাসীরা ফিরে এসেছেন। কাজ শুরু করেও বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ঝুপড়ি পুরোপুরি না সরালে সৌন্দর্যায়ন সম্ভব নয়।” তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সিপিএমের রাজীব বিশ্বাস বলেন, “খালপাড়ের জবরদখলের জন্য সৌন্দর্যায়ন সম্ভব হচ্ছে না। পুরসভাকেই এগিয়ে আসতে হবে।”
পুরসভার উদ্যান বিভাগের এক আধিকারিক জানান, গ্যালিফ স্ট্রিট-সহ ক্যানাল ইস্ট রোডের খালধার বহু দিন যাবৎ জবরদখল হয়েছিল। ২০০৩-’০৪-এ ঝুপড়ি উচ্ছেদ হয়। খালধার বাঁধানোও হয়। তার পরে আবার ঝুপড়ি বসে যায়। তবে যেখানে জায়গা খালি করা সম্ভব হয়েছে সেখানে উদ্যান তৈরি হয়েছে।
উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, “ঝুপড়ির জন্য খালধারের সৌন্দর্যায়নে অনেক ক্ষেত্রেই অসুবিধা হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় ঝুপড়িবাসীদের সরিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েকটি বাগান তৈরি হয়েছে। তবে সব জায়গায় তা সম্ভব হচ্ছে না। রয়েছে অর্থের অভাবও।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “আমরা খালধারের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প ঠিকমতো বাস্তবায়িত করতে পারছি না। আংশিক কাজ হচ্ছে। অর্থ ছাড়াও রয়েছে জবরদখলের সমস্যা। ঝুপড়িবাসীদের সরালেও আবার তাঁরা ফিরে আসছেন। সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব। পার্কিংয়ের ব্যাপারেও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করব।”
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সৌন্দর্যায়নের জন্য সেচ দফতর পুরসভাকে জমি হস্তান্তর করে। তবে খালধারের অনেক জায়গাই দখল হয়ে গিয়েছে। সেচ দফতর তাঁদের ওঠানোর কাজ শুরু করেছে। আপাতত কেষ্টপুর খালধারে উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। পরে ক্যানাল সার্কুলার এবং ক্যানাল ইস্ট রোডে এই কাজ হবে।”
কিন্তু পার্কিং সমস্যার কী ভাবে সমাধান হবে?
দেবাশিস কুমার জানান, খালধারের সমস্ত জায়গায় পার্কিংয়ের অনুমতি নেই। সেখানে পার্কিং আটকানো যেতে পারে। তা হলেই অনেক জায়গা বেরিয়ে আসবে। বৈধ পার্কিংয়ের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। এই ব্যাপারে ট্রাফিক দফতরের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
কলকাতা পুলিশের ডি সি ট্রাফিক দিলীপ আদক বলেন, “খালধারের যেখানে বেআইনি পার্কিং হয়েছে সেখানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পার্কিংয়ের বিকল্প ব্যবস্থা করতে গেলে সমীক্ষার প্রয়োজন। সেই ব্যাপারে কাজ শুরু হয়েছে। এর পরে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান হবে।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.