|
|
|
|
হুল্লোড় |
ভ্রান্তি বিলাস |
সম্প্রতি ট্যুইটারে অমিতাভ বচ্চন ‘ব্ল্যাক’ ছবিতে নিজের ভুলের কথা জানিয়েছেন।
তারকারা কি ছবির এ রকম পোস্ট মর্টেম প্রায়ই করেন? খোঁজ করলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
কিছু দিন আগে অমিতাভ বচ্চন নিজের ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে একটা ক্যুইজ করেছিলেন। ফ্যানদের প্রশ্ন করেছিলেন ‘ব্ল্যাক’ ছবিতে ওঁর খাওয়ার টেবিলের সিনে কী এমন একটা ভুল রয়েছে যেটা আজও দেখলে তাঁর লজ্জা হয়? ফ্যানেদের ট্যুইটে বিভিন্ন ধরনের ভুলত্রুটির কথা উঠে আসে। কিন্তু কেউই আসল ত্রুটিটা ধরতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত অমিতাভকেই ভুলটা ধরিয়ে দিতে হয়।
উনি স্পষ্ট জানান যে ডাইনিং টেবিলের সিনে ওঁর চরিত্রটির একটা চিঠি পড়ার কথা ছিল। যে চিঠিটি তিনি লিখেছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়ের কথা শুনে। চিঠিটি তাঁর পড়ার কথা ছিল রানি মুখোপাধ্যায়ের বোনের কাছে। চিঠিটি পড়ার ঠিক আগে তাঁর হাতটা সোজা চলে যায় পকেটে। অমিতাভের চরিত্রটি ছিল এক অ্যালঝাইমার্স এর রুগির। যাঁর পক্ষে সব কিছু মনে রাখা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে তাঁর পক্ষে কোথায় চশমাটা রাখা থাকতে পারে, তা অত সহজে মনে থাকা দুষ্কর।
|
|
‘ব্ল্যাক’ ছবির একটি দৃশ্যে অমিতাভ বচ্চন |
আট বছর হল অমিতাভ বচ্চন এই ছবিটি করেছেন। তবে আজও এই ভুলটা তাঁর মনে আছে। যখনই ছবিটি আবার দেখেন, তখনই ভুলটা তাঁর নজরে আসে। এই ভুলের জন্য ট্যুইটারে তিনি নিজেকে ‘রটেন অ্যাক্টর’ বলতেও ছাড়েননি। তবে অমিতাভ বচ্চনের মতো অনেক অভিনেতাই আছেন, যাঁদের পুরোনো কাজ দেখেই প্রচুর ভুল-ত্রুটি নজরে আসে। সবাই হয়তো ট্যুইটারে সেটা উল্লেখ করেন না। আর কারও কারও কাছে এক জন শিল্পীর জীবন এবং সিনেমা দেখার পদ্ধতিটাও পাল্টে যেতে পারে সময়ের সঙ্গে। তাই যে ভাবে হয়তো পাঁচ বছর আগে শ্যুটিং করেছেন, আজকের তারিখে হয়তো সিনেমাকে তাঁরা সে ভাবে দেখেন না। এই একই ধারণা পরিচালক গৌতম ঘোষেরও। “আমি খুব খুঁটিয়ে রিসার্চ করি। ‘দেখা’ সিনেমাতে সৌমিত্রদার চরিত্রটি গ্লুকোমায় তাঁর দৃষ্টি হারান। আমি হোমওয়ার্ক করেছিলাম যাতে বুঝতে পারি কী ভাবে বডি ল্যাঙ্গোয়েজটা পাল্টে যায় এমন এক ব্যক্তির যাঁর দৃষ্টি লোপ পাচ্ছে। তবে এ সবের মধ্যেও বলি ভুল-ত্রুটি তো থেকেই যায়। কোনও কাজই একশো শতাংশ পারফেক্ট হয় না, ” গৌতম বলেন।
আজ যখন নাসিরুদ্দিন শাহ্ আর শাবানা আজমিকে নিয়ে ‘পার’ ছবিটি দেখেন, তখন কিছু কন্টিনিউটির গণ্ডগোল চোখে পড়ে। “তখনকার দিনে ওই ছবিটা শ্যুটিং করা বেশ শক্ত ছিল। একটা জায়গা মনে আছে, যেখানে নাসিরের গামছাটা ডান কাঁধ থেকে বাঁ কাঁধে চলে যায়। হয়তো ব্যবসা করার সময় এটা হতেই পারে। কিন্তু আমার চোখে এটা লাগে,” বলেন পরিচালক। |
আজও ওই ভুলটা দেখলে খারাপ লাগে। মনে হয় আমি কী পচা অভিনেতা!
অমিতাভ বচ্চন |
|
|
মধুর ভান্ডারকরের ‘চাঁদনী বার’ সিনেমায় তব্বু |
তার পর ‘মনের মানুষ’ ছবিটাতে যে ভঙ্গিতে বাউল গানের সঙ্গে নাচ ব্যবহার করেছিলেন, সেটা নিয়েও তাঁর আজকের মতামত আলাদা। “আমি চেয়েছিলাম ছবিটা সবাই দেখুক। শুধু স্কলাররা নয়। ওই বাউল গানের সঙ্গে কিছু মুদ্রা ব্যবহার হয়েছে, যেগুলো আজ দেখে মনে হয়, না করলেই পারতাম। ছবিটা এমনিতেই এতটা স্ট্রং যে ওটা না করলেও চলত। ‘যাত্রা’ দেখে মনে হয় রেখা আর দীপ্তি নাভালের সিনগুলোতে এত সংলাপ না রাখলেও পারতাম। তবে এ কথাও বলব যে এখন শিল্পীর দৃষ্টিভঙ্গিটা সময়ের সঙ্গে পাল্টে যায়,” জানান গৌতম।
পরিচালক সুজিত সরকার স্বীকার করেন যে, তাঁর প্রথম ছবি ‘ইঁয়াহা’তে একটা ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। ছবিতে একটা বিয়ের
|
গৌতম ঘোষের ‘পার’-এ
নাসিরুদ্দিন শাহ ও শাবানা আজমি |
গান রয়েছে। “আমার ছবির নায়িকা একটি কাশ্মীরি বিয়েতে যায়। সেখানে যে গানটা আমি ব্যবহার করেছিলাম, সেটাতে আরও অনেক বেশি কাশ্মীরি ফ্লেভার থাকা উচিত ছিল। পরে যখন ছবিটা দেখি তখন বুঝি যে গানটা একেবারে পঞ্জাবি ঢঙে হয়ে গিয়েছে। আজকের দিনে ‘ইঁয়াহা’ বানালে আমি এই দিকটাতে নজর দিতাম,” সুজিত বলেন।
আর ‘ভিকি ডোনর’? যে ছবির জন্য সুজিত জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলেন? “না, ওটাতে আমি কোনও খুঁত পাইনি। ‘ভিকি ডোনর’ একদম পারফেক্ট,” সুজিত জানান।
সুধীর মিশ্র অবশ্য বলেন যে তাঁর পরিচালিত ‘ক্যালকাটা মেল’ দেখলে মনে হয় ছবিটা সম্পূর্ণ ভুলে ভরা। “মাঝে মাঝে আমি ভাবি কেন ওই ছবিটি আমি বানিয়েছিলাম। তার পর মনে হয় যে ওই সময় আমার জীবনে একটা ক্রাইসিস ছিল। আর আমি চেয়েছিলাম একটা জনপ্রিয় ছবি বানাতে। আর সেটা করতে গিয়েই আমি অনেক আপস করে ফেলি। ওটা আমার
|
সুজিত সরকারের ‘ইঁয়াহা’তে
মিনিশা লাম্বা ও জিমি শেরগিল |
সিনেমাদর্শনের সঙ্গে মেলে না,” সুধীর বলেন।
|
সুধীর মিশ্রের ‘ক্যালকাটা মেল’-এ
রানি মুখোপাধ্যায় ও অনিল কপূর |
১৯৯৬ সালে সুধীর একটি থ্রিলার বানিয়েছিলেন। নাম ‘ইস রাত কী সুবহ নহি’। “সেই ছবিতে একটা সিন আছে যেখানে অভিনেতা নির্মল পাণ্ডেকে উল্টো দিকে হাঁটতে দেখা যায়। দেখে মনে হয়, উনি যেন একটা অদ্ভুত নাচের স্টেপ করছেন। আজও ভেবে পাই না কেন আমি ও রকম একটা সিন ‘ওকে’ করেছিলাম,” সুধীর জানান। আর ‘হাজারো খোয়াইসে অ্যায়সি’? “অদ্ভুত ভাবে ওই সিনেমাটা দেখলে আমি কোনও ত্রুটি খুঁজে পাই না। ওটাই কিন্তু এমন একটা ছবি যাতে সব চেয়ে বেশি ভুলত্রুটি হওয়ার সুযোগ ছিল,” সুধীর বলেন।
এক মাস আগে মধুর ভান্ডারকর তাঁর ‘কর্পোরেট’ ছবিটি আবার টেলিভিশনে দেখেন। “একটা এক মিনিটের দৃশ্য আছে বিপাশা এবং কে কে মেননের মধ্যে। দৃশ্যটাতে কোনও ডায়লগ নেই। শুধু মনতাজ শট। যেখানে দুই অভিনেতাই আলোচনা করছেন কে স্ক্যামের জন্য দায়িত্ব নেবেন। ওই দৃশ্যটা এখন দেখে মনে হল আমার উচিত
ছিল অভিনেতাদের আরও বেশি ইনটেন্স প্রতিক্রিয়া দিতে বলতে,” মধুর বলেন।
তবে সব থেকে মজার ঘটনা হয় ‘চাঁদনি বার’ শ্যুটিংয়ের সময়। ছবির বাজেট মাত্র দেড় কোটি। ক্যামেরাম্যান নতুন। বার-এর অনেক শটই আউট অফ ফোকাস। কিন্তু সেগুলো পাল্টানোর মতো বাজেট মধুরের নেই। হাসতে হাসতে মধুর বলেন, “‘চাঁদনি বার’ ছবিতে প্রচুর আউট অফ ফোকাস শট রয়েছে। আমার ‘হিরোইন’ ছবিতে করিনার পোশাকের বাজেটও দেড় কোটির বেশি ছিল। তবে মজার ঘটনা হল এক জন ক্রিটিক ওই শটগুলো দেখে লিখে ফেললেন যে আমি নাকি ইচ্ছা করে আউট অফ ফোকাস শট রেখেছি, যাতে একটা নেশার পরিবেশ তৈরি হয়! আমি তো রিভিউ পড়েই আশ্চর্য। যেটা কিনা একটা ভুল, সেটাই একটা রূপক হয়ে গেল!”
|
‘পার’-এ কন্টিনিউটির
গণ্ডগোল
ছিল। একটা দৃশ্যে
নাসিরের গামছাটা দেখি
ডান কাঁধ থেকে বাঁ কাঁধে!
গৌতম ঘোষ |
‘ইঁয়াহা’তে একটি
কাশ্মীরি
বিয়েতে গান ছিল।
সেটা
অনেকটা
পঞ্জাবি
ঢঙে হয়ে গিয়েছিল
সুজিত সরকার |
‘চাঁদনি বার’-এ প্রচুর
আউট অফ
ফোকাস শট ছিল।
কিন্তু এক ক্রিটিক
বলেছিলেন
যে ওটা ইচ্ছাকৃত!
মধুর ভান্ডারকর |
‘ক্যালকাটা মেল’ দেখলে
মনে হয়
ছবিটা সম্পূর্ণ ভুলে
ভরা। মাঝে মাঝে ভাবি
কেন ছবিটি বানিয়েছিলাম
সুধীর মিশ্র |
|
|
শহরে এই সপ্তাহে |
অনুষ্ঠানে |
একান্তে |
ড্রিম গার্লকে কলকাতা টেনে
আনে বারবার। শহরের একটি
অনুষ্ঠানে হেমা মালিনী |
ফুচকা হাতে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাইভেট
আড্ডায় ছিলেন চুনী গোস্বামী, গৌতম ঘোষ,
সন্দীপ ভুতোরিয়া, যোগেন চৌধুরী |
ছবি: কৌশিক সরকার |
|
|
|
|
|
|