জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে প্রথম ফ্লোরাইড পাওয়া গিয়েছিল নলহাটি ১ ব্লকের নসীপুর গ্রামে। ফের জলে ফ্লোরাইডের সন্ধান মিলল নলহাটি পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের করিমপুর এলাকায়। যে এলাকায় পানীয় জলে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইড পাওয়া গিয়েছে, সেই এলাকায় পানীয় জলের উৎস বলতে সরকারি নলকূপ। এখনও পর্যন্ত ওই এলাকায় পুরসভার তরফ থেকে পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য পাইপ লাইন করে দেওয়া হয়নি। যে সমস্ত জায়গায় পাইপ লাইন পৌঁছেছে সেখানে একটিও ‘স্ট্যান্ড পয়েন্ট’ নেই। এ ছাড়া, বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ এখনও দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় করিমপুরের মাঠপাড়া, লেটপাড়া, খালাসিপাড়ার বাসিন্দারা এখনও ‘বিষ’ জলই পান করছেন।
জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র বলেন, “সোমবার বিষয়টি জেনেছি। মে মাস থেকে এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে দাঁত ও ইউরিন পরীক্ষা পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এলাকার পশ্চিমপাড়ার ১০টি সরকারি নলকূপের জলে ফ্লোরাইডের সন্ধান মিলেছে। ওই ১০টি নলকূপের মধ্যে একটি রয়েছে করিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পড়ুয়ারা যাতে ওই নলকূপের জল খেতে না পারে সে জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ নলকূপটি তার দিয়ে বেঁধে দিয়েছেন। সেটি ‘সিল’ করে দেওয়ার জন্য মৌখিক ও লিখিত ভাবে আবেদন জানানো হলেও আজ পর্যন্ত পুরসভা ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষক দীনবন্ধু চৌধুরী বলেন, “গত অক্টোবর মাসে স্কুলের দু’টি নলকূপের জল পরীক্ষা করা হয়। একটিতে ফ্লোরাইডের অস্তিত্ব মিলেছে। ওই নলকূপটি ‘সিল’ করে দেওয়ার জন্য পুরসভা ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে বলা হয়েছে।” কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান বলেন, “স্কুলের নলকূপে ফ্লোরাইড পাওয়ার পরে পশ্চিমপাড়ার আরও ৯টি নলকূপের জল পরীক্ষার জন্য নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। জানুয়ারি মাসে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ১০টি নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইডের প্রমান মিলেছে। জানানোর পরে পুরসভা থেকে ফের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
এ দিকে, প্রাথমিক স্কুল-সহ যে ১০টি নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইড পাওয়া গিয়েছে ফের ওই জল পরীক্ষার জন্য বুধবার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মঙ্গলবার থেকে এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য পুরসভা দু’টি ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় ট্যাঙ্কারের জল নিতে কোথাও কোথাও মারামারি লেগে গিয়েছিল। পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিকল্প কিছু ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত চাহিদা মতো ট্যাঙ্কারে করে পানীয় জল দেওয়া হবে।” জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জেলা নির্বাহী আধিকারিক অর্দ্ধেন্দু দত্ত বলেন, “জলের নমুনা পরীক্ষা করার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রাজ্যের ফ্লোরাইড দূষণ রোধে গঠিত টাস্ক ফোর্সকে জানানো হবে। তাদের নির্দেশ মতো আমরা কাজ করব।” |