চার বছরেও মেরামত হল না বিকল হয়ে পড়া দু’টি গভীর নলকূপ। সেচের অভাবে তাই এ বারও গরমে সঙ্কটে পড়েছেন পাত্রসায়র ব্লকের আদিবাসী অধ্যুষিত দু’টি গ্রামের চাষিরা।
পাত্রসায়র ব্লকের বর্গাশোল ও নতুনগ্রাম এলাকায় জমিতে সেচের জন্য বসানো হয়েছিল দু’টি গভীর নলকূপ। বছর দশেক আগে তা চালু হয়। কিন্তু গত চার বছর আগে দু’টি পাম্পসেটই অচল হয়ে যায়। ফলে সেচের সুবিধা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন ওই দু’টি গ্রামের চাষিরা। অনেকেই জানিয়েছেন, জলের অভাবে তাঁরা গরমে চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় কৃষকদের ক্ষোভ, গভীর নলকূপের পাম্পসেট দু’টি সারিয়ে সেচের জলের বন্দোবস্ত করার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাত্রসায়র ব্লকের কুশদ্বীপ পঞ্চায়েতের বর্গাশোলে ও নতুনগ্রামে ২০০২-০৩ সালে দু’টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছিল। এ জন্য পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতি থেকে বরাদ্দ করা হয়েছিল ১৪ লক্ষ টাকা। বছর খানেকের মধ্যে সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হয়। ওই দু’টি গভীর নলকূপ থেকে নতুনগ্রাম, বর্গাশোল ও কেয়াডহরি মৌজায় প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে সেচের জল মিলত। |
বর্গাশোল গ্রামের আশিস মুর্মু, নতুনগ্রামের সুবোধ লোহার, কেয়াডহরি গ্রামের বংশীবদন কুণ্ডুদের মতো চাষিদের বক্তব্য, “গভীর নলকূপগুলি চালু হওয়ার পরে বছর পাঁচেক ভাল ভাবে চাষাবাদ করতে পেরেছিলাম। তারপরে ওই দু’টি পাম্পসেটই পর পর অচল হয়ে গেল। আর সেচের জল মেলেনি। ফলে জলের অভাবে রবি শস্যের ও বোরো চাষ মার খাচ্ছে।”
এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, চার বছর ধরে অচল গভীর নলকূপের পাম্পসেট দু’টি সারিয়ে সেচের জলের ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। নতুনগ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা সুকুল হাঁসদা ও বর্গাশোলের বাসিন্দা তথা পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ-সভাপতি গুরুদাস সোরেন এলাকার চাষিদের অভিযোগকে সমর্থন করে বলেন, “চাষই এলাকার বাসিন্দাদের একমাত্র জীবিকা। গভীর নলকূপগুলি থেকে জল পেলে এই এলাকার অর্থনীতি আমূল বদলে যাবে। জল না থাকায় এলাকায় চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের অবিলম্বে গভীর নলকূপ সারানোর ব্যবস্থা করা উচিত।”
পাত্রসায়রের বিডিও অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, “ওই সমস্যার কথা আমি জানতাম না। খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।” তাঁর আশ্বাস, সেচের সুবিধার জন্য অচল হয়ে পড়ে থাকা গভীর নলকূপগুলি অবশ্যই সারানোর চেষ্টা করা হবে। পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের দীপালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ওই গভীর নলকূপগুলি পুনরায় চালু করা যায় কি না তা দেখা হবে।” দু’বছরেও কি সেই সময় প্রশাসন পায়নি? জবাব মেলেনি। |