|
|
|
|
গরমিল প্রাক্তন উপাচার্যের আমলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধেও তদন্ত |
খরচে অনিয়ম, টাকা ফেরত চাইল ইউজিসি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পদে যোগ না দিয়েই নিজেকে উপাচার্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন ‘সোশিওলজি ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস’-এর উদ্যোক্তাদের কাছে। ৩৬তম ওই ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসটি হয় চিনের বেজিংয়ে। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে তাতে যোগও দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য স্বপনকুমার প্রামানিক। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সেই টাকা ফেরত চেয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে।
এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “ইউজিসি-র নির্দেশ মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই টাকা ইউজিসিকে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাক্তন উপাচার্য যাতে পরে ওই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিয়ে দেন সে জন্যও তাঁকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।”
স্বপনকুমার প্রামানিক বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন ২০০৩ সালের ১ ডিসেম্বর। অবসর নেন ২০১১ সালের ২০ জানুয়ারি। বেজিং যাওয়ার জন্য টাকা মঞ্জুর করার আবেদনপত্রে যে আমন্ত্রণপত্রটি তিনি পেশ করেছিলেন, সেটি ২০০৩ সালের ১১ নভেম্বরের। সেখানে উদ্যোক্তাদের কাছে নিজেকে তিনি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। অনুমোদন কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে নিজেই নিজের আবেদন মঞ্জুর করে ৭৫ হাজার টাকা নেন। ২০০৪ সালের ৭ থেকে ১১ এপ্রিল তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেন। যদিও খরচ হয়েছিল ৬০ হাজার ৯৭৬ টাকা। বাকি টাকা অবশ্য তিনি ফেরৎও দিয়ে দিয়েছিলেন। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন। উপাচার্যদের জন্য ইউজিসি আলাদা ভাবে টাকা দেয়। ওই টাকা উপাচার্য নিতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষক তথ্য জানার অধিকারে এই তথ্য জেনে অভিযোগ করেন। তারপরই ইউজিসি টাকা ফেরৎ চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার গণেশ রাণার বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। দফতরের নানা বিষয়ে গাফিলতি, নিয়োগে অনিয়ম-সহ ৬টি বিষয়ে তদন্ত হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপাচার্যের বক্তব্য, “কিছু অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভেলপমেন্ট অফিসার ও আন্ডার গ্র্যাজুয়েট সেক্রেটারি নিয়োগ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বন্ধ রাখতে হয় বলে অভিযোগ। এই পর্বে ১১ মার্চ তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’ স্মারকলিপি দিয়েছিল। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তিনি নিজের কাছে তা রেখে দিয়ে ১২ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত ছুটি নিয়ে নেন। ১৮ মার্চ স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে পৌঁছয়। যে স্মারকলিপির জেরে নিয়োগ বন্ধ রাখা হল, তা কেন এত দিন পরে উপাচার্যের কাছে পৌঁছল, তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে। আরটিআই সেলের আ্যাপিলেট অথরিটি হিসেবে ডেপুটি রেজিস্ট্রার তথ্য জানাতে দেরি করেন, কোনও ক্ষেত্রে জানান না বলে অভিযোগ। অথচ, কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের নোটিস দেওয়ার ক্ষেত্রেও ত্রুটি ধরা পড়েছে। এ সবই খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি। চলতি মাসের ৯ তারিখ এই তদন্তের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। ৪৫ দিনের মধ্যেই তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। |
|
|
|
|
|