গরু পাচার নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল বাদুড়িয়ার খাসপুরে পূর্বপাড়ায়। অভিযোগ, গরু পাচারের সময় গ্রামবাসীরা বাধা দেওয়ায় পাচারকারীরা কয়েকটি বাড়ি, দোকানে ভাঙচুর ও লুঠপাট চালায়। এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও মারধর করে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের নিয়ে হামলা চালানোর পর থেকে স্থানীয় এক যুবকের খোঁজ মিলছে না। মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনায় বুধবার সকালে স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ দেখান। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। কাউকে ছাড়া হবে না।”
খাসপুর পূর্বপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিএসএফ এবং পুলিশ থাকা সত্ত্বেও বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অবাধে গরু পাচার চলছে। প্রতিদিনই ও পার থেকে দুষ্কৃতীরা নদী পেরিয়ে এ পারে এসে গরু নিয়ে যাচ্ছে। গ্রামবাসীরা তো বটেই, এমনকী বিএসএফ এবং পুলিশের উপরেও হামলা চালাচ্ছে পাচারকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর সীমান্তে গরু পাচারের অন্যতম ঘাঁটি। মছলন্দপুর থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার রাস্তায় বাদুড়িয়ার খাসপুর মাঝেরপাড়া থেকে একটি রাস্তা গ্রামের মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছে খাসপুর পুরনো ফেরিঘাট পর্যন্ত। ওই রাস্তা দিয়ে গরু নিয়ে গিয়ে ইছামতী পার করে স্বরূপনগর হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাচারকারীদের দাপটে রাস্তায় হাঁটাচলাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনের বেলায় রাস্তা জুড়ে গরুর পাল চলায় যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে মানুষকে। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন সমস্যায় পড়ছেন। ঘটছে দুর্ঘটনা। শুধু তাই নয়, বাড়ির উঠোন দিয়ে গরু পাচারের সময় ভাঙচুর, ফসল নষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি বাদুড়িয়ার রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের থাসপুর গ্রামে শ্যামল বৈদ্যের বাড়িতে একটি গরু ঢুকে পড়ে। সেই সময় স্কুলে যাবে বলে শ্যামলবাবুর ছেলে ভাত খাচ্ছিল। তার ভাতের থালা উল্টে যায়। এর প্রতিবাদ করায় গণ্ডগোল শুরু হয়। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ পাচারকারীরা ওই এলাকা দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসা বাধে। পাচারকারীরা বেশ কয়েকটি বাড়ি, দোকান ভাঙচুর ও লুঠপাট করে এবং এক মহিলাকে মারধরও করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সমরেন্দ্র নাথ পাল বলেন, “যে ভাবে এই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গরু পাচার হচ্ছে তাতে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ স্বাভাবিক। আমরা ঠিক করেছি গ্রামের মধ্যে দিয়ে কোনওভাবেই আর গরু নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বস্তরেও সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।” |