রোজকার মতোই কাজ চলছিল। হঠাৎই জোর একটা আওয়াজ। হুড়মুড়িয়ে পাশের তিন তলা বাড়িটার উপর ভেঙে পড়ল ৯ তলা বাড়িটা। আজ সকাল ৮টা নাগাদ বাংলাদেশে সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে রানা প্লাজা নামে একটা নয় তলা বাড়ি ভেঙে পড়ায় এখনও পর্যন্ত ১০৮ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। যাঁরা ওই বহুতলের চারটি পোশাক কারখানার কর্মচারী ছিলেন। বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। তিন তলার বাড়িটা পুরো গুঁড়িয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে ৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিকেলের দিকে সাভারের বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু এগোতেই পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ চার দিক। এ দিকে ও দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইটের টুকরো। একটু আগেই পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় জনতা আর উদ্বিগ্ন পরিবার-পরিজনদের সংঘর্ষ হয়ে গিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সরাতে রবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। |
ভেঙে পড়া বহুতলে চলছে উদ্ধারকাজ। সাভারে। —নিজস্ব চিত্র |
সেই সকাল থেকে সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের মিছিল চলছেই। প্রতি মিনিটে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। জায়গার অভাবে অনেককেই প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মর্গের সামনে মৃতদেহের স্তূপ। তার মধ্যেই চাদর সরিয়ে পরিজনদের খোঁজ করে চলেছেন পরিবারের লোকেরা।
ভেঙে পড়া রানা প্লাজায় জোরকদমে চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও দমকলকর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষও উদ্ধারে হাত লাগিয়েছেন। উদ্ধারের পর ওই বহুতলের পোশাক কারখানায় কাজ করত এমন বেশ কয়েক জন কর্মচারী জানান, গত মঙ্গলবার ৯ তলা ভবনটিতে ফাটল ধরার পরে দু’জন জখম হন। এর পরেই স্থানীয় প্রশাসন ওই ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
ওই বহুতলের চারটি পোশাক কারখানা ছাড়াও ছিল বহু বিপণিকেন্দ্র, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন দফতর, একটা গাড়ি রাখার জায়গা। কর্মচারীরা জানিয়েছেন, প্রশাসনের নির্দেশে ব্যাঙ্ক-সহ অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু পোশাক কারখানার মালিক কর্মচারীদের কাজে যেতে বাধ্য করেন। |