মুঝে চলতে যানা হ্যায়
তাঁদের নিজেদের প্রচুর ভক্ত।
কিন্তু তাঁরা যে আবার সচিন ভক্ত! শুনলেন ইন্দ্রনীল রায় |
|
|
|
রাইমা সেন
আমার ক্রিকেট দেখা মানে সচিনের ব্যাট করা দেখা। সেটা ছাড়া খুব একটা ক্রিকেট দেখি না।
মনে আছে, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই সচিনকে আমার ভীষণ ‘কিউট’ লাগত। যদি আমাকে ‘সচিন তেন্ডুলকর মোমেন্ট’ বলতে বলা হয়, আমি ২০০৩-য়ের ওয়ার্ল্ড কাপের কথা বলব। ওই ম্যাচে সচিন, শোয়েব আখতার আর পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।
চল্লিশ বছরের জন্মদিনে আমি সচিনকে বলতে চাই, খেলা চালিয়ে যাও আর সমালোচকদের কথায় একদম কান দিয়ো না। |
|
বোমান ইরানি
সচিনকে নিয়ে কথা বলার আমি কে? আমি তো ক্ষুদ্র মানুষ মাত্র। ওর ব্যক্তিত্ব আকাশছোঁয়া। আমার মনে হয় জন্মের প্রথম মুহূর্ত থেকেই ও মাউন্ট এভারেস্টের চুড়োয়।
যদি সচিন নিয়ে কিছু বলতেই হয়, মনে পড়ে যায় ওর ষোলো বছর বয়সের কথা।
যে দিন মারকাটারি ছক্কার পর ছক্কা হাঁকিয়ে আব্দুল কাদেরকে কুপোকাত করেছিল।
সেদিন আমি বাড়িতে বসেই টিভি দেখছিলাম। হঠাৎই সারা দেশ এক মহানায়কের জন্মমুহূর্ত দেখল।
এখনও মনে পড়ে মিড-পিচে ইমরান আর আব্দুলের কথোপকথন। ওরা বুঝতেই পারছিল না ঠিক কী ঘটছে। ওই মুহূর্তটাই আমার ‘সচিন তেন্ডুলকর মোমেন্ট’।
ওর চল্লিশ বছরের জন্মদিনে ওকে এটাই বলব, যে এ ভাবেই আমাদের অনুপ্রাণিত করে যাও। জীবনে এমন অনেক মুহূর্ত এসেছে যখন আমি ভেঙে পড়েছি। তখনই সচিন, তোমার মুখ ভেসে উঠেছে মনে।
মনে মনে তখন বলেছি ‘অগর সচিন কর সকতা হ্যায়, তো ম্যয় কিঁউ নহি’?
|
|
|
|
|
শান্তনু মৈত্র
মনে আছে এনডিটিভি-তে একটা অনুষ্ঠানে সচিনকে দেখেছিলাম। অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম । সেটাই ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সচিন মুহূর্ত। ভারতীয় মেয়েরা যে টয়লেটের ব্যবস্থা নেই বলে স্কুল যায় না এ কথা শুনে সচিন যে সে দিন কী সাঙ্ঘাতিক শকড হয়েছিল বলে বোঝাতে পারব না!
ওর শকড হওয়াটা মুখের মধ্যে ফুটে উঠছিল ক্ষণে ক্ষণে। ভীষণ হতাশ দেখাচ্ছিল । চাপা রাগ ফেটে পড়ছিল মুখে।
যাতে মেয়েরা ঠিকঠাক স্কুল যেতে পারে, পড়াশোনা করতে পারে সে জন্য সেই অনুষ্ঠানের পরই সচিন মেয়েদের জন্য টয়লেট বানাবে বলে ঠিক করে।
ক্রিকেটের মাঠে ওর বিরাট কীর্তি তৈরির পর এটাই আমার চোখে সচিনের জীবনের সেরা মুহূর্ত। চল্লিশতম জন্মদিনটা যখন সচিনের, আমি ওকে একটা গান উৎসর্গ করতে চাই। আমি জানি ও হিন্দি গান ভালবাসে। কিশোরকুমার ওর প্রিয় গায়ক। গুলজারের লেখা ‘পরিচয়’ ছবির যে গানটা ওকে উৎসর্গ করতে চাই ...
‘মুসাফির হুঁ ইয়ারোঁ
না ঘর হ্যায় না ঠিকানা
মুঝে চলতে যানা হ্যায়...”
এই ‘মুঝে চলতে যানা হ্যায়’ কথাটা যেন সচিনের জীবনের প্রতীক। |
|
মহেশ ভট্ট
যখনই সচিন সেঞ্চুরি করে, আকাশের দিকে মুখ তুলে বাবার সঙ্গে কানেক্ট করতে চায়। ওই মোমেন্টটাই আমার কাছে সচিন মুহূর্ত। অনন্ত শক্তির কাছে মাথা নত করে সম্মান জানাতে জানে ও। আর এটাই ওকে মাটিতে পা রাখতে সাহায্য করে। এটাই ওকে নিরহংকারী করে।
চব্বিশ বছরের ক্রিকেট জীবনেও সচিন তেন্ডুলকর কখনও ‘পাওয়ার ড্রাঙ্ক’ হয়ে পড়েনি। আমার মতে এটাই ওর সব থেকে বড় কৃতিত্ব। |
|
জাভেদ আখতার
এ কথা ভেবে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয় যে সচিনের মতো এক জন মানুষের সঙ্গে আমরা এক বাতাসে নিঃশ্বাস নিই। সচিনের যে ইনিংসটা আমার কাছে সেরা, সেটা ১৯৯৮য়ে চেন্নাইতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওর সেঞ্চুরি। সে দিন যে শুধু শেন ওয়ার্নকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল তাই নয়, ভেঙেচুরে তছনছ করেছিল।
ওই ইনিংসটা আমি বারবার দেখলেও ক্লান্ত হব না। সচিনের চব্বিশ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ার, ভারতের কাছে অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার। আমরা ভারতীয় হিসেবে ভাগ্যবান সচিনের মতো এক জনের খেলা দেখার সুযোগ পেয়েছি... তার সঙ্গে হেসেছি...তার সঙ্গে কেঁদেছি। |
|