খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল
অ্যাম্বুল্যান্সে প্রাণ পেল ট্রমা সেন্টার
কটি অ্যাম্বুল্যান্সই যেন নতুন ‘প্রাণ’ দিল ট্রমা সেন্টার প্রকল্পে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। তবে এখনও তা চালু হয়নি। এ নিয়ে বহু চিঠি চালাচালি হয়েছে। কিন্তু কাজে গতি আসেনি। শেষমেশ একটি ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স এসে পৌঁছেছে হাসপাতালে। ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি’ থেকে পাঠানো অ্যাম্বুল্যান্সটি গত মঙ্গলবার এসেছে। তারপরই ফের এই প্রকল্প নিয়ে তোড়জোর শুরু হয়েছে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের পাঠানো ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স।
হাসপাতাল সুপার দেবাশিস পাল বলেন, “ট্রমা সেন্টারের জন্যই ওই অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “ক’দিন আগে জয়েন্ট ডিরেক্টর এসেছিলেন। প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেন্টার চালুর জন্য কী কী প্রয়োজন, ওঁকে জানিয়েছি। দ্রুত ট্রমা সেন্টার চালুর সব রকম চেষ্টা চলছে।” এই অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য একজন চালক এবং দেখভালের খরচ চেয়ে স্বাস্থ্য দফতরে দরবার করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ঐশ্বর্য মজুমদারকে স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হচ্ছে।
খড়্গপুর শহরের দু’দিক দিয়ে চলে গিয়েছে দু’টি জাতীয় সড়ক, ৬ ও ৬০ নম্বর। শহরের পাশে রয়েছে ট্রেন লাইনও। হাওড়া, টাটা, ভুবনেশ্বর ও আদ্রা বিভিন্ন রুটের রেললাইন রয়েছে। তার উপর এই রেলশহর জনবহুল এলাকা। খড়্গপুর ও তার আশপাশে মাঝেমধ্যে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানি হয়। জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাও বাড়ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর জেলায় জাতীয় সড়কে ২৮২টি দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয়ে ১৩৫ জনের। জখম হন ৩৪৮ জন। ২০১১ সালে জখম হয়েছিলেন ৩১৪ জন। ২০১০ সালে ৩১৭ জন। দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কাজও শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করে। এ জন্য পৃথক একটি ভবন তৈরি হয়েছে। ২০০৯ সালে এই ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়। দেখতে দেখতে তিন বছর পেরিয়েছে। তবে, এখনও ওই সেন্টার চালু হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ট্রমা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স, কর্মী নিয়োগ হয়নি। শুধুমাত্র ভবন তৈরি হয়েছে। আর কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য শেষ গত বছর এপ্রিলে প্রায় ১ কোটি টাকা এসেছে। সেই অর্থও পড়ে রয়েছে। যে সব সরঞ্জাম কেনা হয়েছে, তার মধ্যে আছে অপারেশন থিয়েটারের টেবিল, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, আলমারি, শয্যা প্রভৃতি। ট্রমা সেন্টারের জন্য একটি ৫০০ এমএম এক্সরে মেশিন, অর্থোপেডিক বিভাগের সি-আর্ম যন্ত্র কেনার কথা। তবে তা কেনা হয়নি। সেন্টার চালুর জন্য একটি ১২৫ কেভি জেনারেটর দরকার। এ জন্য কত টাকা লাগবে, বছরে কত খরচ হবে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট একাধিকবার স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে। তবে, এই পর্যন্তই। এরপর আর কাজ সে ভাবে এগোয়নি। ক’দিন আগে খড়্গপুরে এসেছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর কুসুম অধিকারী। সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিও ছিলেন। এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতেই তাঁদের খড়্গপুরে আসা। ট্রমা সেন্টারটি এখন কী অবস্থায় রয়েছে, সেন্টার চালু করার জন্য কী কী প্রয়োজন, সেই সবই ডেপুটি ডিরেক্টরকে জানানো হয়। হাসপাতাল সুপারের কথায়, “দ্রুত সেন্টার চালুর সব রকম চেষ্টা চলছে। আমাদের দিক থেকে চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই।” তাঁর কথায়, “হাসপাতালে ২ জন সার্জেন থাকার কথা। ট্রমা সেন্টারে ৩ জন থাকার কথা। আমরা বলেছি, হাসপাতাল-ট্রমা মিলিয়ে ৩ জন সার্জেন থাকলেও অসুবিধে হবে না। এখন মাত্র ২ জন রয়েছেন।”
ঠিক এক বছর আগে, গত বছর এপ্রিলে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করতে এসে লালগড়ের সভা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষনা করেছিলেন, ‘খড়্গপুরে ট্রমা সেন্টারের কাজ হবে।’ বছর পেরিয়েছে। সেন্টার চালু হয়নি। তবে, ফের আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি থেকে ট্রমা অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। ডেপুটি ডিরেক্টর এসেছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। চিঠি চালাচালি শুরু হয়েছে। এ বার কী ট্রমা সেন্টার চালু হবে? হাসপাতাল সুপারের কথায়, “আমরা আশাবাদী। ভবন তৈরির কাজ আগেই হয়েছে। কিছু সরঞ্জামও কেনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম ও কর্মী নিয়োগ হলেই সেন্টার চালু হবে।”

ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালু করতে চাই
চিকিৎসক কর্মী
সার্জেন ৩ জন
অর্থপেডিক ৩ জন
অ্যানাস্থেটিস্ট ৩ জন
মেডিক্যাল অফিসার ৪ জন
নার্স ২৫ জন
টেকনিশিয়ান ৪ জন
ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান ২ জন
চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ১৩ জন
সাফাই কর্মী ১৩ জন
একটি ১২৫ কেভি জেনারেটর এবং পাইপ লাইনে
অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যশিবির
স্বাস্থ্যশিবির অনুষ্ঠিত হল কেতুগ্রামের কান্দরায়। রবিবার রাধামোহন কুণ্ডু সমাজ কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে শিবির হয়। ২৫০ জন শিশুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.