|
|
|
|
হুল্লোড় |
প্রথমে মজদুর হতে চেয়ো |
এফটিআইআই-য়ের ক্লাসে এমনই উপদেশ দিয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ।
অভিনয়, প্রেম, ভবিষ্যৎ
নিয়ে সমদর্শী দত্ত জানালেন অরিজিৎ চক্রবর্তী-কে |
|
ইডেনে কেকেআর-য়ের ম্যাচ দেখতে যাচ্ছেন?
প্রথম দু’টো তো দেখতে পারলাম না। নর্থ বেঙ্গলে ছিলাম ‘আর্কষণ’য়ের প্যাচ ওয়ার্কের জন্য। সোমবার ফিরছি। দেখি পরের দু’টো ম্যাচ দেখা যায় কি না।
বান্ধবী যাবে সঙ্গে?
প্রশ্নটা বাদ দেওয়া যায় না?
বান্ধবীকে নিয়ে এত পজেসিভ কেন? ফেসবুকেও নাম উল্লেখ নেই। কিন্তু ২০০৭ থেকে তো স্টেটাসে ‘ইন আ রিলেশনশিপ’ লেখা...
ওহ্, এখনও সেটাই আছে, না! আসলে আমি তো আর ফেসবুকে নেই, তাই ওটা বদলানো হয়নি। এখন রিলেশনশিপ স্টেটাস হবে ‘হ্যাপিলি ডেটিং’।
তার মানে তো টলিউডের মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর অভিনেতা হওয়ার দৌড়ে আর থাকা গেল না...
আরে ডেটই তো করছি, বিয়ে তো আর করছি না। ডেট করা মানে তো আর বিয়ে করা নয়। এখনও আমি ব্যাচেলর। এলিজিবল কতটা সেটা মেয়েরা বলবে।
কাজ নিয়ে সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
এখনও পর্যন্ত তো ভালই। অভিনয়ের প্রশংসা পাচ্ছি। ছবিও ভালই চলছে। সব থেকে বড় কথা হল, এমন একটা সময়ে আমি টলিউডে যোগ দিয়েছি যখন ইন্ডাস্ট্রি একটা বড়সড় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তন মানে আমি বলতে চাইছি, তথাকথিত মূল ধারার ছবি না হয়েও ভাল ব্যবসা করার কথা। উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি ‘ইচ্ছে’ বা ‘ভূতের ভবিষৎ’-য়ের মতো ছবিগুলোও। ওগুলোকে তো আর সেই অর্থে মূল ধারার ছবি বলা যায় না। তবু তো ভাল ব্যবসা করল! আগে তো বাণিজ্যিক বাংলা ছবি ছাড়া বক্স অফিসে এমন দাপানোই যেত না।
কিন্তু সমদর্শীকে এত কম ছবিতে দেখা যায় কেন?
কী বলছেন কী! এ বছরই তো গোটা ছয় ছবি মুক্তি পাবে। ‘ডামাডোল’, ‘কিডন্যাপার’ তো মুক্তি পেয়েছে। সামনেই আসবে গৌতম হালদারের ‘মুক্তি’, বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নায়িকা সংবাদ’, সৌকর্য ঘোষালের ‘পেন্ডুলাম’, অনুপ দাসের ‘খোলা হাওয়া’। আমাকে পর্দায় কম দেখা যায়, এ অভিযোগ আর করতে পারবেন না।
বেশি ছবি করার জন্যই কি ট্র্যাক বদলানো? ‘আমি আদু’ থেকে ‘ডামাডোল’? নাকি নিজের ‘আঁতেল’ ছাপটা মোছার জন্যই বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয়?
ও ভাবে তো ভাবিনি। আসলে আমি আমার থেকে বেশি বয়েসের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা মনে হচ্ছিল। আরে ভাই, আমার বয়স তো মাত্র আঠাশ। এখনই টাইপ কাস্ট হতে যাব কোন দুঃখে? ওই রকম চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তো সারাটা জীবন পড়ে রয়েছে।
|
আমি |
|
• সমদর্শী দত্ত
• ডাক নাম: টিনটিন
• বয়স: ২৮
• বাড়ি: লেকটাউন
• প্রিয় সম্পদ: গান আর ফিল্মের সংগ্রহ
• দু’চক্ষের বিষ: মিথ্যে বলা |
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল |
|
|
‘আরোহণ’য়ে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়, ‘তবে তাই হোক’য়ে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের ঠোঁটে চুম্বন— এ সব তো আর বাচ্চাদের ব্যাপার নয়...
(মুচকি হেসে) ছবির প্রয়োজনে যেমন দরকার হয়েছে, তেমন করেছি। ওর আগেও কিছু ভাবিনি... পরেও না।
বুঝলাম। তা টলিউডে আপনার কাকে সেরা অভিনেত্রী মনে হয়?
কাকে ছেড়ে কাকে বলি। অনেকেই তো দুর্দান্ত। সোহিনী সেনগুপ্ত, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত...
ডিপ্লোমেসি করছেন কেন?
ডিপ্লোমেসি নয়, যেটা সত্যি সেটাই বলছি। একজনকে কী করে সেরা অভিনেত্রী বলব?
বুঝলাম। সোজা উত্তর দেবেন না। টলিউডে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে কাকে দেখেন? অঙ্কুশ, না গৌরব?
আমি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী।
এটা একেবারে ক্লিশে উত্তর হয়ে গেল।
(হেসে) ক্লিশে হয়ে গেল, না?
শুধু ক্লিশে না, নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মানে কিন্তু যেই জিতুক না কেন, আপনি হারছেনই...
(প্রচণ্ড হেসে) তাতে কী, চেষ্টা তো করেছি! এফটিআইআই-য়ের ক্লাসে নাসিরুদ্দিন শাহ একদিন বলেছিলেন, “অ্যাক্টর নেহি, পহেলে মজদুর বনো।” অভিনেতা হওয়ার পরে সবাই তার গ্ল্যামারটাই দেখে। কিন্তু তার পিছনের স্ট্রাগলটা চাপা পড়ে যায়। বাইরের কেউ হয়তো সেটা বুঝতে পারে না। কিন্তু ওই স্ট্রাগলটাই আসলে একজন অভিনেতাকে তৈরি করে।
আর সেটাই আমি করতে চাই। জিতলাম কী হারলাম, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই না। নাসিরজির কথায়, ওই মজদুর হতে চাই।
এফটিআইআই গ্রাজুয়েট, বিদেশি ছবিতে কয়েক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক ভর্তি। মূল ধারার বাংলা ছবির নায়ক হওয়ার পথে বাধা হয়ে গেল না?
(একটু ভেবে) সেটা কিছুটা বলতে পারেন। কিন্তু মেনস্ট্রিম ছবিই যে করতে হবে তার তো কোনও মানে নেই। দিনের শেষে তো দেখা হবে বক্স অফিসে ছবিটা কেমন ব্যবসা করল। অভিনেতা হিসাবে এর সঙ্গে চাইব লোকে আমাকে মনে রাখল কি না। ব্যস। সে রকম একটা ছবি করলেই আমার চলে যাবে। বাকি জীবনটা শিস দিতে দিতে কাটিয়ে দেব।
কিন্ত দু’বছর আগে তো জীবনটা শিস দিতে দিতে কাটিয়ে দেওয়ার মতো ছিল না। ফেসবুকে কমেন্ট দেখে তো মনে হত ড্রাগস্ নেওয়াটাই যা বাকি!
ওই সময়টা সত্যিই খুব খারাপ গিয়েছে। অভিনয়ে কোনও ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছিলাম না। ‘ইচ্ছে’ তৈরি হয়ে ক্যানবন্দি হয়ে পড়ে আছে। মুক্তি
পাচ্ছে না। মনে হত এর থেকে আর খারাপ কী হতে পারে! যাক, সেটা তো কাটিয়ে এসেছি।
যদি প্রশ্ন করি, আজ থেকে পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
সে ভাবে কোনও ফিউচার প্ল্যানিং তো করিনি কখনও। তবে অবশ্যই চাইব ভাল ছবিতে অভিনয় করতে। (একটু ভেবে) ব্যস, আর কিচ্ছু না।
কলেজে তো খুব গিটার বাজাতেন। এখনও বাজান?
সময়ের বড় অভাব। শুধু গিটার কেন, সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়ার সময় ভায়োলিন, সরোদ পর্যন্ত বাজিয়েছি। আমার একটা স্বভাব হল, যখনই অন্য কারওকে কিছু করতে দেখি, মনে হয় ওর থেকে আমি সেটা ভাল পারব। পরে হয়তো আর চালিয়ে গেলাম না, কিন্তু শুরু করে দিই।
গিটার বাজানোর একটা কারণ তো নিশ্চয়ই কমে গিয়েছে। গিটার বাজিয়ে তো আর মেয়েদের ইম্প্রেস করতে হয় না?
(হেসে) হ্যাঁ, সেটা আর দরকার হয় না। সিনেমায় অভিনয় করার এই পজিটিভ দিকটা বাদ দিই কী করে!
কিন্তু জিমে যান না কেন? ওটারও কি প্রয়োজনীয়তা নেই নাকি?
এত দিন তো অনুভব করিনি। তবে সদ্য যাওয়া শুরু করেছি। এখন জিমে যা সময় দিচ্ছি ভাবতে পারবেন না। মনে হয় এ বছরেই সিক্স প্যাকস্টা দেখাতে পারব। |
|
|
|
|
|