|
এক ঝলকে... |
পৃথিবী
১৪ এপ্রিল - ২০ এপ্রিল |
|
• ওয়াশিংটন ডিসি • মার্কিন নাগরিকদের ‘আত্মরক্ষার্থে’ বন্দুক রাখার অধিকার আপাতত অক্ষত থাকল। ডিসেম্বরে কানেটিকাট-এর নিউ টাউন-এ বন্দুকধারী অ্যাডাম লানজা-র আক্রমণে কুড়িটি শিশু সহ ছাব্বিশ জনের মৃত্যুর পরে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন সংশোধনে উদ্যোগী হবেন। কথা রেখেছেন। যতটা নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিলেন, ততটা কঠোর প্রস্তাব আনতে পারেননি, কারণ আইনসভায় তা কিছুতেই পাশ করানো যেত না। শুধু চেয়েছিলেন, যারা বন্দুক কিনবে, তাদের সম্পর্কে যেন যথেষ্ট খোঁজখবর নেওয়া হয়, যাকে বলে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড চেক’। মার্কিন ‘লোকসভা’ অর্থাৎ হাউস অব রেপ্রেজেন্টেটিভস-এ প্রস্তাবটি পাশ হয়েছে। কিন্তু উচ্চতর সভা সেনেট এই সপ্তাহে বিলটি নাকচ করে দিয়েছে। প্রয়োজন ছিল ষাটটি ভোটের, মিলেছে চুয়ান্ন। এমনকী ওবামার নিজের ডেমোক্র্যাট দলের চার জন বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের তীব্র প্রতিক্রিয়া: এই লজ্জাকর ঘটনা নিছক রাজনীতির ফল। |
না, একে ঠিক ‘জনপ্রিয়তার রাজনীতি’ বলা যাবে না, কারণ বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের আশি থেকে নব্বই শতাংশ নাগরিক ওবামার প্রস্তাবের পক্ষে, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের উপরে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ বা অন্তত নজরদারি তাঁরা চান। কিন্তু মার্কিন রাজনীতিতে ‘লবি’ অর্থাৎ বিশেষ স্বার্থগোষ্ঠীর দাপট প্রবল। এ ক্ষেত্রে সে দাপট একটি সংস্থার। তার নাম: ন্যাশনাল রাইফ্ল অ্যাসোসিয়েশন। বন্দুক ব্যবসায়ীরা এর প্রধান সংগঠক এবং গৌরী সেন, কিন্তু সদস্য সংখ্যা ত্রিশ চল্লিশ লাখ। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের যে কোনও উদ্যোগ বন্ধ করতে এই সংগঠন বরাবর প্রবল প্রচার চালায়, অঢেল টাকা ঢেলে ‘লবি’ করে, অর্থাৎ জনপ্রতিনিধিদের প্রভাবিত করতে চেষ্টা করে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় সংবিধানে ব্যক্তিস্বাধীনতার আপসহীন অধিকারের আদর্শ এবং নিজের নিরাপত্তার দায় নিজে বহন করার ঐতিহাসিক সমাজরীতি। ওবামার কাজটা সিসিফাস-এর চেয়ে কম কঠিন নয়।
|
ট্যাক্সিতে চড়েছিলেন নাকি? |
• বেজিং • শি জিনপিং মার্চে দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর শোনা গিয়েছিল, তিনি নাকি রাস্তায় নেমে ট্যাক্সিতে চড়েছিলেন। ট্যাক্সিচালক তাঁকে চিনতে পারায় খুশিও হয়েছিলেন। এখন পার্টি বলছে, ওগুলো নিতান্তই অপপ্রচার। এ রকম কিছু ঘটেইনি। সরকারি ওয়েবসাইট থেকে খবরটিও, স্বাভাবিক ভাবেই, ভ্যানিশ। এর আগে চিনের কোনও মহানায়ক রাস্তায় নেমে মানুষের সঙ্গে মেলামেশার চেষ্টা করেননি (ও দেশে দিদি নাই)। শি কি সত্যিই সেই নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন? না কি তাঁর ট্যাক্সিতে চড়ার খবর, ছবি সবই বানানো ছিল? প্রেসিডেন্টের নিয়ম ভাঙায় ঘাবড়ে গিয়ে চিন এখন জিভ কাটছে, না কি জিভ কাটার পরিকল্পনা থেকেই পুরোটা ঘটেছিল? ঈশ্বর জানেন না। পার্টি জানে।
|
এনরিক কাপ্রিলেস রাদনস্কি-র বয়স চল্লিশ। গত বছর অক্টোবর মাসে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাস্টিস ফার্স্ট দলের প্রার্থী ছিলেন তিনি। অনেক ভোটে হেরে যান প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে। প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম: উগো চাভেস। কয়েক মাসের মধ্যে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত চাভেসের বিদায়, আবার নির্বাচন। এ বার কাপ্রিলেসের মুখোমুখি নিকোলাস মাদুরো, চাভেসের অনুগামী এবং তাঁরই মনোনীত উত্তরাধিকারী। ভোটের ফল কিন্তু অনেক পালটে গেছে। মাদুরো জয়ী বলে ঘোষিত হয়েছেন বটে, কিন্তু ভোটের ব্যবধান যৎসামান্য। এবং অনিবার্য অভিযোগ উঠেছে রিগিংয়ের। কাপ্রিলেস তাঁর উদ্বুদ্ধ সমর্থকদের নিয়ে দেশ জুড়ে প্রচার চালিয়েছেন: ভোট আবার গুনতে হবে। সেই দাবি শেষ পর্যন্ত অংশত মঞ্জুর হয়েছে। তাতে রাজধানী কারাকাসের দরবারে এ যাত্রায় তাঁর অভিষেক হবে বলে মনে হয় না, কিন্তু মাদুরোর নৈতিক পরাজয় নিয়ে সন্দেহের বিশেষ অবকাশ নেই। কাপ্রিলেস বুদ্ধিমান রাজনীতিক, চাভেসের ‘একুশ শতকের সমাজতন্ত্র’কে ঢাকিসুদ্ধ বিসর্জন দেওয়া হবে, এমন কথা মোটেও বলেননি। তিনি বলেছেন, চাভেসের নীতি ও কার্যক্রমের যা কিছু ভাল, তিনি সেগুলি রাখতেই চান। পাশাপাশি চান বাজার অর্থনীতির দক্ষতাও। তার পাশাপাশি দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার মান উন্নত করতে চান তিনি। আর চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিম দুনিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক। বিপুল মূল্যবৃদ্ধি আর হিংসা-কবলিত নাগরিক জীবন নিয়ে বিপর্যস্ত ভেনেজুয়েলার মানুষ স্পষ্টতই এই তরুণ নায়কের কথা মন দিয়ে শুনছেন। চাভেসের আমলে তাঁদের সমস্যা অনেক ছিল, কিন্তু একটা আশাও ছিল। এগিয়ে যাওয়ার আশা। নিকোলাস মাদুরোর উপর সেই ভরসা রাখার কোনও কারণ নেই, তিনি নির্বাচনী প্রচারে এবং সরকারি নীতি ঘোষণায় চাভেসকে অনুকরণের প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন, ময়ূরপুচ্ছগুলি উত্তরোত্তর প্রকট হয়েছে। সুতরাং অনুমান করা যায়, ক্রমশই কাপ্রিলেসের জনসমর্থন বাড়বে। তাঁর প্রতীক্ষা চলছে, চলবে। আজ না হোক, কাল... |