অপহৃত এক নাবালিকার খোঁজ করতে যাওয়া পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। রবিবার রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার গৌরী পঞ্চায়েতের শ্যামপুরহাট এলাকায়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতার অনুগামীরা একজন সাব ইন্সপেক্টর, ২ মহিলা সহ ৩ এনভিএফ কর্মীকে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। নাবালিকাকে নিয়ে অন্যতম অভিযুক্ত ও তার বাড়ির লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এর পরে আহত পুলিশকর্মীদের রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ঘটনার পরে রাজকুমার শেখ, তাঁর বাবা, দাদা সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর নামও রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “নাবালিক-সহ অভিযুক্তেরা সকলে পালিয়েছে। বালিকাকে উদ্ধার করে সকলকে ধরার চেষ্টা হচ্ছে।”
হামলার পরে উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “অবিলম্বে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করা না হলে দলের তরফে আন্দোলনে নামা হবে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য জানান, দলের তরফে ওই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, “পুলিশের উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দার বিষয়। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। দলের কেউ জড়িত থাকলেও অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ নিগ্রহের মামলায় গৌরী পঞ্চায়েতে যুব তৃণমূলের আহ্বায়ক রেজাউল হকের নাম রয়েছে। নাবালিকাকে যাঁর বাড়িতে রাখা হয় বলে অভিযোগ, রাজকুমারবাবু এলাকায় রেজাউলবাবুর অন্যতম অনুগামী বলে পরিচিত। রেজাউলবাবু বলেন, “পুলিশকর্মীরা হাজির হয়ে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পুলিশকর্মীরা রাজকুমারের বাড়ি হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। আমরা প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।” রাজকুমারের মা রেজিনা খাতুনের দাবি, তাঁর ছেলে কোনও নাবালিকাকে বিয়ে করার জন্য বাড়িতে আনেনি। পুলিশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে দিনমজুরের কাজ করার সুবাদে রাজকুমারের সঙ্গে সেখানকার এক নাবালিকার পরিচয় হয়। অভিযোগ, রবিবার নাবালিকাকে নিয়ে বাড়িতে যায় রাজকুমার। বিয়ের আয়োজন শুরু হলে পুলিশের কাছে নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে বলে খবর যায়। পুলিশ সেখানে গেলেই তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। |