স্কুলের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জেরে বছর তিনেক ধরে বেতন পাচ্ছেন না পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের বেকো অঞ্চল হাইস্কুলের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমের শিক্ষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে বন্ধ হয়ে রয়েছে বেতন। এই অভিযোগে স্কুলের টিচার-ইন-চার্জকে তাঁরা স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
বেকো হাইস্কুলে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে। প্রথম চার বছর সমস্যা না হলেও গত তিন বছর ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। স্কুলে ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি এবং কৃষি বিষয়ক দু’টি পাঠ্যক্রমে শতাধিক ছাত্র রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন এক জন, প্রশিক্ষকের সংখ্যা দুই। আংশিক সময়ের শিক্ষক দু’জন। শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা তিন। এই আট জনের কেউই তিন বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না।
স্কুল সূত্রে জানা যাচ্ছে, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমে চুক্তিভত্তিক শিক্ষকেরা বেতন পান মাসে প্রায় সাড়ে সাত হাজার। প্রশিক্ষকদের বেতন মাসে প্রায় ছয় হাজার। তবে আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন তাঁদের নেওয়া ক্লাসের সংখ্যা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। প্রতি শিক্ষাবর্ষের আগে ছাত্র সংখ্যা-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে হয় রাজ্য শিক্ষা দফতরে। ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা করার পরে ব্যাঙ্কে বেতনের টাকা জমা পড়ে।
ওই আট জনের অভিযোগ, বেতন না পেয়ে তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানালেও কাজ হয়নি। স্কুল সূত্রের খবর, স্থায়ী প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার পরে যে শিক্ষক টিচার-ইন-চার্জের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করায় স্কুলে প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয়। তার জেরে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট-সহ অন্য নথিপত্র সময়মতো পাঠাতে দেরি হওয়াতে বেতন পেতে সমস্যা হয়েছে শিক্ষকদের।
নতুন টিচার-ইন-চার্জ অবশ্য কাজে যোগ দিয়ে বকেয়া বেতনের জন্য তথ্য জমা দিয়েছেন। কিন্তু স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কিছু সমস্যার জেরে সেই টাকা জমা পড়ার পরেও তোলা যাচ্ছে না। টিচার-ইন-চার্জ তপন মণ্ডল বলেন, “ওই শিক্ষকদের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের বকেয়া বেতন ব্যাঙ্কে এসেছে। কিন্তু ব্যাঙ্কে লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সম্পাদকের নাম এখনও বদল না হওয়ায় টাকা তুলতে সমস্যা হচ্ছে। নাম পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। দ্রুত বেতন পাবেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা।” |