মোদীর সিংহ যাচ্ছে শিবরাজের রাজ্যে
রেন্দ্র মোদীর সিংহবিক্রমে এ বার ভাগ বসাচ্ছেন শিবরাজ সিংহ চৌহান।
গির অরণ্যের সিংহকুলকে এত দিন গুজরাতের গর্ব হিসেবে প্রচার করে এসেছেন মোদী। রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর অমিতাভ বচ্চনকে দিয়ে যে বিজ্ঞাপন করানো হয়েছে, সেখানে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়েছে সিংহের কথা। ভারতে এশীয় সিংহের একমাত্র বাসস্থান গির। তাদের সংরক্ষণে কেন্দ্র সাহায্য করছে না বলে সম্প্রতি দিল্লি এসে অভিযোগও করে গিয়েছেন মোদী। তার পরে আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়। সেখানে বলা হয়েছে, সিংহদের দ্বিতীয় বাসস্থান থাকাটা একান্ত জরুরি। তাই কিছু সিংহ পড়শি মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর অভয়ারণ্যে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ঠিক কত সিংহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দায়িত্বও দিয়েছে বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি সি কে প্রসাদের বেঞ্চ।
গিরের জঙ্গলে এশীয় সিংহ। ছবি: এপি
ঘটনাচক্রে, বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান এই মুহূর্তে দলে গুরুত্বের বিচারে মোদীর থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন। মোদীকে যেখানে দলের ভাবী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে প্রচার কমিটির প্রধান করা হয়েছে, সেখানে শিবরাজের জন্য দলের সংসদীয় বোর্ডের দরজাও খোলেনি। সেই শিবরাজের রাজ্যের কাছেই সিংহ নিয়ে ধাক্কা খেতে হল মোদীকে। সোমবার এই রায়ের কথা জানার পরে তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি মোদী প্রশাসনের কেউই। শুধু রাজ্যের অর্থমন্ত্রী নিতিন পটেল জানিয়েছেন, “সুপ্রিম কোর্ট কীসের ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখে তবেই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।” গুজরাত সরকার যে সিংহদের বাসাবদল চায় না, সেটা আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়ে নিতিনের বক্তব্য, “আবারও বলছি, এটা মোটেও আমাদের কাছে কাম্য নয়। গিরের সিংহ আমাদের রাজ্যের কাছে অত্যন্ত আবেগের বিষয়।” আর শিবরাজ? টুইটারে তিনি লিখেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত। এশীয় সিংহকে নতুন বাসস্থানে স্বাগত জানাতে আমরা তৈরি।”
এশীয় সিংহকে নতুন বাসস্থানে
স্বাগত জানাতে আমরা তৈরি।
রায় খতিয়ে দেখে তবেই
আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।
গুজরাত
সিংহদের বাসস্থান নিয়ে টালবাহানা দীর্ঘদিনের। গুজরাতের গিরে এখন প্রায় চারশো সিংহের বাস। কিন্তু নানা কারণে জঙ্গল থেকে হামেশাই লোকালয়ে চলে আসে তারা। গুজরাতে সিংহদের অস্তিত্ব বিপন্ন, এই অভিযোগে এক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু এত সহজে সিংহের অধিকার ছাড়তে নারাজ মোদী প্রশাসন। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত বিজেপি-শাসিত দুই রাজ্যের দ্বৈরথ সেই থেকে শুরু।
সুপ্রিম কোর্টে যে মামলাটি হয়েছিল, সেখানে অভিযোগ করা হয়, গির অরণ্যে সিংহদের থাকার মতো উপযুক্ত পরিবেশ নেই। সেখানে সিংহের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, সেই অনুপাতে জায়গা নেই। এমনকী, কোনও বড় ধরনের মড়ক হলে পুরো প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ভয়ও রয়েছে। শুনানির সময়ে বিকল্প হিসেবে উঠে আসে মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর অভয়ারণ্যের নাম। মোদীর সরকার ভাল ভাবেই জানত, সিংহদের অন্য রাজ্যের সরিয়ে নিয়ে গেলে বড়সড় ধাক্কা খাবে রাজ্যের পর্যটন শিল্প। নিজের রাজ্যের ‘ইউএসপি’ ধরে রাখতে তাই আদালতে জোর সওয়াল করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে তারা জানায়, সেখানকার পান্না সংরক্ষিত অরণ্যে বাঘেদের অস্তিত্ব বিপন্ন। নিজেদের রাজ্যের বাঘদেরই যারা সুরক্ষা দিতে পারে না, অন্য রাজ্য থেকে সেখানে সিংহ পাঠানো হবে কোন ভরসায়!
মোদী এখন সিংহবিক্রমে দিল্লির মসনদের দিকে এগোতে চাইছেন। নিজের শিল্পবন্ধু ভাবমূর্তি তৈরি করা থেকে শুরু করে বিশ্বের দরবারে নতুন ভাবে তুলে ধরেছেন গুজরাতকে। সেই সময় এই রায় মোদীর পক্ষে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন অনেকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.