নীতীশে আশা রেখেও বিকল্প ভাবনা কংগ্রেসে
সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে নীতীশ কুমার শেষমেশ যাতে এনডিএ জোট ছাড়েন, তা নিশ্চিত করতে কংগ্রেস আরও চাপ বাড়াচ্ছে তাঁর উপরে।
প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর নামে নীতীশ আপত্তি করায় গত কাল দৃশ্যতই উন্মাদনা ছিল কংগ্রেস শিবিরে। তাঁর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে দিগ্বিজয় সিংহ, মণীশ তিওয়ারিরা বলতে শুরু করেন, নীতীশের মতো অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত এনডিএ-র বাকি শরিকদেরও। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পর তুলনায় অনেকটাই সংযত কংগ্রেস। দলের সদর দফতর থেকে আজ বরং বলা হল, শুধু মোদীর নামে আপত্তি করেই ধর্মনিরপেক্ষতার শংসাপত্র পেতে পারেন না নীতীশ। মোদী সাম্প্রদায়িক, আর বিজেপি-র বাকি নেতারা ধর্মনিরপেক্ষ, এ কথা বললে চলবে না। তা ছাড়া নীতীশের সরকারেই বিজেপি-র এমন ৫ জন মন্ত্রী রয়েছেন, যাঁরা সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য ও মোদীর গুণগ্রাহী। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে তাঁদের মন্ত্রিসভা থেকে সরাক নীতীশ কুমার।
গত এক মাস ধরে বিভিন্ন ঘটনায় অনেকের এমন ধারণা হচ্ছিল যে, লোকসভা ভোটের আগে নীতীশ যে ভাবে মোদীর সামনে দেওয়াল তুলতে চাইছেন তার নেপথ্যে নিশ্চয়ই কংগ্রেসের মদত রয়েছে। তা ছাড়া বিহারের উন্নয়নের জন্য নীতীশের দাবিদাওয়ার প্রশ্নে ইদানীং কেন্দ্রের তরফেও প্রশ্রয়ের ইঙ্গিত দেওয়ায় সেই ধারনা ক্রমে বদ্ধমূল হচ্ছিল। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদেরই একাংশের মনে এই সংশয় রয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত হয়তো এনডিএ না-ও ছাড়তে পারেন নীতীশ। এমনও হতে পারে যে বিজেপি-র মোদী-বিরোধী নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করছেন নীতীশ। নীতীশকে দেখিয়েই শেষমেশ হয়তো লালকৃষ্ণ আডবাণী বা অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করা হবে। তাতে মোদী-বিরোধীদের যেমন লাভ, তেমনই বিহারের ১৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট টানার ক্ষেত্রেও সুবিধা পাবেন নীতীশ। সেই পরিস্থিতিতে লালু প্রসাদ ও রামবিলাসের সঙ্গে জোট গড়েও বিহারে কংগ্রেসের লাভের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, মূলত এই সব কারণেই নীতীশ প্রসঙ্গে কিছুটা সুর পাল্টাচ্ছে দল। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষ নেতা কি না সেই প্রশ্নে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি আজ বলেন, “নীতীশ ধর্মনিরপেক্ষ কিনা সেই শংসাপত্র দেওয়ার এক্তিয়ার কংগ্রেসের নেই। মানুষই তা বিচার করবে। ভুলে গেলে চলবে না গোধরা কাণ্ডের সময় এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী ছিলেন নীতীশই। তিনি তখন টুঁ শব্দও করেননি মোদীর বিরুদ্ধে।”
ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেসের একাধিক নেতা বলছেন, আসলে পুরো বিষয়টাই জল্পনার স্তরে রয়েছে। পরিস্থিতি যে কোনও দিকে যেতে পারে। তাই নীতীশকে পুরোপুরি ভরসা করা যাচ্ছে না। তাঁর সম্পর্কে আশা রেখে চলার পাশাপাশি কংগ্রেসকে বিকল্প প্রস্তুতিও রাখতে হবে। বস্তুত নীতীশ প্রসঙ্গে কংগ্রেস এবং লালু প্রসাদের সুর ছিল আজ একই রকম। লালুও আজ বলেন, “বিজেপি-রই কেন্দ্রীয় নেতারা মোদীকে ঠেকাতে নীতীশকে হাতিয়ার করছেন।” তবে জাতীয় স্তরে রাজনৈতিক বিতর্ক যে ভাবে সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নটি ক্রমেই যে ভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে, কংগ্রেস তাতে খুশি। বিজেপি অবশ্য চেষ্টা করছে, ইউপিএ সরকারের ব্যর্থতার দিকগুলিকেই বিতর্কের কেন্দ্রে ধরে রাখতে। কিন্তু তাতে বিশেষ সুবিধে করে উঠতে পারছে না তারা। বরং কয়লা ব্লক বণ্টন নিয়ে কেলেঙ্কারির বিষয়টিও কিছুটা চাপা পড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বিজেডি নেতা তথা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক ফের তৃতীয় ফ্রন্টের প্রসঙ্গ উস্কে দেওয়াতেও কংগ্রেস কিছুটা স্বস্তিতে। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, মে মাসে কর্নাটকে বিধানসভা ভোট। সেখানে বিজেপি সরকারের পরাজয়ের সম্ভাবনা ষোলো আনা। এবং বাস্তবে সেই ফল হলে, কংগ্রেস তখনও প্রচার করবে যে সাম্প্রদায়িক শক্তি পরাস্ত হল। লোকসভা ভোটের আগে এটা তাদের কাছে শুভ সঙ্কেত।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.