১ জানুয়ারি ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ পালন হাল আমলের ফ্যাশন। তবে পিছিয়ে নেয় বাঙালির পয়লা বৈশাখও। এই জেলা বাঙালির সেই উৎসবের রেশ এখনও সমানতালে ধরে রেখেছে। তারই সূত্রে সোমবার বেশ কয়েকটি জায়গা দেখা গেল বর্ষবরণের উৎসবে মেতেছেন এলাকাবাসী।
সিউড়ির দুই বিশিষ্ট সংস্কৃতিপ্রেমী তথা সঙ্গীতশিল্পী শান্তব্রতনন্দন ও অনুপম চক্রবর্তীর উদ্যোগে ২১ বছর আগে সিউড়ির বেণীমাধব হাইস্কুলের মাঠে গাছতলায় শুরু হয়েছিল বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। এখনও সেই ধারা বর্তমান। তবে গত কয়েক বছর ধরে অনুষ্ঠানের জায়গা বদল হয়েছে। এখন সংস্কৃতিপ্রেমীরা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে মাতেন সেচ কলোনির মাঠে। কাউকেই অবশ্য প্রথামাফিক আমন্ত্রণ জানানো হয় না। সকাল ৭টা থেকেই জড়ো হতে শুরু করেন সংস্কৃতিপ্রেমী থেকে কচিকাঁচারাও। গান-কবিতা-আড্ডায় দুপুর ছুঁয়ে যায় ১ বৈশাখ। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। |
নলাটেশ্বরী মন্দির। —নিজস্ব চিত্র |
লাভপুরে বর্ষবরণ শুরু হয়েছিল ভোর ছ’টা থেকেই। উদ্যোক্তা ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী’। লাভপুর ঠাকুরবাড়ির রাসমন্দিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি চলে ঘণ্টাখানেক। সাত বছরে পা দিল ওই অনুষ্ঠান। সেখানে তিন থেকে নব্বই বছরের বৃদ্ধকেও দেখা গেল আড্ডা, নাচ, গান, কবিতাপাঠে মেতে উঠতে। অনুষ্ঠান শুরু হয় এলাকার বাসিন্দা তথা বিশিষ্ট বাউল কার্তিক দাসের গানের সুরে। শুরু করলেন— ‘জননী বাংলা মা আমার’। সম্প্রতি কলকাতায় বাংলা সঙ্গীতমেলার উদ্বোধনেও তিনি গানটি গেয়েই দর্শককে মাতিয়েছিলেন। এখানেও সমান মুগ্ধ ছিলেন এলাকাবাসী। ছিলেন সুপ্রভাত মিশ্রও। তিনি ছোট লাইনের রেল নিয়ে হাপু (হাবু) গান পরিবেশন করেন।
অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর প্রথা মেনে শান্তিনিকেতনে হয়ে গেল বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। ভোরে বৈতালিক ও সকালে ব্রহ্ম উপাসনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় পুরনো ঘণ্টাতলায়। মূল অনুষ্ঠান ও বিচিত্রা কক্ষে চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। রাতে শ্রনিকেতনের পাকুড়তলায় ছাত্রছাত্রীরা ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ অবলম্বনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন। পরে সেখানে শাস্ত্রীয়সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট শিল্পী শান্তনু ভট্টাচার্য। |