রিং রোড
থমকে রাস্তা তৈরির প্রকল্প, যানজট নিত্যসঙ্গী দুর্গাপুরে
দ্বোধন হয়েছিল ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে। কাজ শুরুও হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় কাজ। দুর্গাপুরের রিং রোডের কাজ ফের কবে আবার শুরু হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। এ ব্যাপারে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন নিগম (এডিডিএ)এডিডিএ’ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছে। জমি না পাওয়ায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ। বর্তমান চেয়ারম্যান, বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিন দফায় বৈঠক করেছি। জমি মালিকেরা যে ক্ষতিপূরণ চাইছেন, তার জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। আমরা নগরোন্নয়ন দফতরের দ্বারস্থ হয়েছি।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে জাতীয় সড়কে যানবাহন বেড়েছে কয়েকগুণ। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বহু কারখানার পণ্যবাহী গাড়ি, যাত্রীবাহী যানবাহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি। জাতীয় সড়কের গোপাল মাঠ থেকে মুচিপাড়া অবধি অংশে যানবাহন হঠাৎ বেড়ে যায়। সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তায় যানজট নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। দুর্ঘটনাও লেগে থাকে। তাই চাপ কমাতে ২০১০ সালে একটি বাইপাস রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। দুর্গাপুরকে ঘিরে ওই রাস্তা। তাই নাম দেওয়া হয় ‘রিং রোড’। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অন্ডাল থানার দুবচুড়ুরিয়া থেকে দুর্গাপুর, কাঁকসার মলানদিঘি হয়ে রঘুনাথপুরে পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়কে ওঠার কথা রাস্তাটির। পানাগড়ের দার্জিলিং মোড় হয়ে ফের জাতীয় সড়কে পড়ার কথা যানবাহনগুলির। এর ফলে বীরভূমের সঙ্গে দূরত্বও এক ধাক্কায় বেশ কয়েক কিলোমিটার কমে যাবে।
মলানদিঘি থেকে রঘুনাথপুর যাওয়ার রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রকল্প অনুযায়ী, রঘুনাথপুর থেকে মলানদিঘি হয়ে দুবচুড়ুরিয়া যাওয়ার ওই রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। কেন্দ্রীয় ‘জহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম) রাস্তাটি নির্মাণের জন্য প্রায় একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করে। প্রস্তাবিত রাস্তার বেশিরভাগটা জুড়েই রয়েছে একটি এক লেনের রাস্তা। প্রকল্পে সেই রাস্তাটিকে চওড়া করে দুই লেনের করা এবং বাকি অংশে নতুন একটি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। রাস্তাটি গড়ে উঠলে দুর্গাপুর শহরের একাংশের যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটবে বলে এডিডিএ সূত্রে খবর। ২০১০-এর ২৬ সেপ্টেম্বর ওই রাস্তাটির শিল্যানাস করেন রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। কাজ শুরু হয় দুই লেনের ওই রাস্তাটি ২১ ফুট চওড়া হওয়ার কথা। কিন্তু তা সম্পূর্ণ করতে বর্তমানে যে এক লেনের রাস্তাটি রয়েছে, তার বাইরেও জমি লাগবে। কিন্তু সেই জমির বেশিরভাগটাই ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। কিন্তু অধিকাংশ জমি মালিকই জমি দিতে রাজি নন। বন দফতরেরও কিছুটা জমি রয়েছে। তারাও আপত্তি জানায়। সমস্যা মেটাতে ২০১১ সালের শেষদিকে তৎকালীন এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুব্রত পালও। কী ভাবে মালিকদের কাছ থেকে জমি পাওয়া সম্ভব, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। তারপর বছর ঘুরে গেলেও কাজ এগোয়নি। এখন আদৌ এই প্রকল্প এগোবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সোমবার দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রতবাবু বলেন, “তারপর আর কী হয়েছে, জানি না।” তিনি জানান, রাস্তা সংস্কার ও চওড়া করতে রাস্তার কালভার্টগুলি অর্ধেক করে কেটে দেওয়া হয়েছিল। এখনও সেগুলি সেই অবস্থাতেই পড়ে আছে। সংস্কার না হওয়ায় রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দুর্গাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “রিং রোড গড়ে উঠলে শুধু যে জাতীয় সড়কে গাড়ির চাপ কমত তা নয়। দুর্গাপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হতো। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, এই প্রকল্পটি থমকে আছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.