|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব, বলেছে পাড়ার দাদারা, অন্য পাড়া দিয়ে যাচ্ছি তাই... এই গানে একটা সময়ের পাড়ার স্বঘোষিত অভিভাবকদের স্মৃতি রয়ে গেছে। এই সব পাড়ার দাদারা প্রেম করতে এলে অন্য পাড়ার ছোঁড়াদের কিছু বলে-টলে না আজকাল, কিন্তু ফ্ল্যাট কিনতে গেলে ‘তোলা’ দিতে হয়, বাড়ি করতে গেলে তো বটেই। রিকশাওলারা এবং অটোওলারা পাড়ার দাদাদের খুশি করেন, ফুটপাতের হকাররাও মাসোহারা দেন। দাদা বিবর্জিত পাড়া যে একদম কোথাও নেই তা নয়, সে পাড়া স্বর্গ সমান। এই সব দাদাদেরও দাদা থাকে, এবং ভাইও। দাদা দিয়ে গাঁথা একটা মালা আমাদের সামাজিক জীবনের গলাভূষণ, যার মাঝখানে একটি বৃহত্ লকেট, তিনিই সাধারণত বৃহত্ পুঙ্গব। থানার ওসি’রা ওদের স্যার বলেন, রিকশাওলারা কাঁধের গামছায় ওদের সিট মুছে দেন। দুঃস্থদের কম্বল বিতরণ ওদের শ্রীহস্তের মাধ্যমেই হয়। ওদের স্ত্রীদের ‘বই’ দেখার ইচ্ছে হলে একটা মোহিনী ফোনই যথেষ্ট। বলা বাহুল্য, ওই লকেট-দাদারা রাজনীতির সঙ্গে গভীর সম্পর্কযুক্ত হয়ে থাকেন।
এক-একটা পাড়ার অভিভাবক থাকতেন এক এক জন দাদা। তখন, সত্তরের দশকে ওদের দাদা বলা হত না। বাবা-কাকারা ওদের বলতেন গুন্ডা। দাদারা বলত মস্তান। রাজা-উজির মারা, সন্ধের পর সিদ্ধি দিয়ে কুলপি খাওয়া রোয়াকি কাকুরা একটু তির্যক উচ্চারণে বলত রুস্তম।
এই ‘গুন্ডা’রা স্বপ্রতিভায় সমুজ্জ্বল ছিলেন। যেটুকু ঠাটবাট, নিজেদের প্রতিভায়। নেতারা গুন্ডাদের নিজেদের স্বার্থে অল্পবিস্তর ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন প্রাক্-স্বাধীনতা আমলেই, কিন্তু সত্তরের দশকে এটা একটা ফেনোমেনন হয়ে যায়। গুন্ডাদের আত্মপরিচয়ে রাজনীতির রং লাগতে শুরু করে, গুন্ডারা কোনও না কোনও নেতার চামচে হয়ে যান, নেতারাও গুন্ডাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে থাকেন।
১৯৭২-৭৩-এর কথা। খবর-কাগজে যাকে বলে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন, সেই প্রক্রিয়া চলছে। তখন লম্বুদার বাজার খারাপ হতে শুরু করেছে একটু একটু করে। উত্তর কলকাতার নেবুবাগান, জেলেপাড়া, ব্যোমকালীতলা অঞ্চলের মায়েরা অবাধ্য শিশুদের বলত, ‘এই যে লম্বুদা আসছে’। সোডার বোতল ছোড়ার কায়দা জানত, রদ্দা মারার কায়দাও। কালীপুজোর দিন উপোস করত, পাড়ার সর্বজনীন কালীপুজোয় লম্বুদার অস্তরগুলিরও পুজো হত। বলত, ঠাকুরমশাই আমার এই পোষ্যগুলির নাম-গোত্তর বলে পুজো দিয়ে দেবেন ভজুু, নেপু, চাপু। মানে ভোজালি, নেপলা, চপার। পাইপগান তখন নতুন আমদানি। লম্বুদার বোধহয় পাইপগান ছিল না।
এই সময় ওই পাড়ায় ক্রমশ প্রস্ফুটিত হতে লাগল পচাগুলি। কোনও এক সময় ওর পায়ে গুলি লেগে পা সেপটিক হয়ে গিয়েছিল, মানে পচে গেছিল, সেই থেকে ওই নাম। অঞ্চলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ, বড় গুণ পাইপগান পটীয়স্। বাবর ইব্রাহিম লোদিকে হারাতে পেরেছিলেন কামানের ব্যবহারটা জানতেন বলে। লম্বুদা পাইপগানের ঠিক ব্যবহার জানত না বলে ক্রমশ পচাগুলির কাছে কোণঠাসা হতে লাগল। চিত্পুর রেল ইয়ার্ডে যারা ওয়াগন ভাঙত, লম্বুদাকে ভেট না দিয়ে পচাগুলিকে দিতে লাগল। সুন্দবনের এঁটেল মাটি আসত বাগবাজারের খালে, ঠেলায় চেপে কুমোরটুলি যেত। আগে ঠেলা-ট্যাক্স নিত লম্বুদার লোক, তার পর পচাগুলির লোক সেই ট্যাক্স নিতে শুরু করে। লম্বুদার লোকবল কমে যেতে থাকে, গ্যালিফ স্ট্রিটের পুরনো নোঙর কারখানার মালিক আর কয়েকটা লেদ কারখানার মালিক শেষ পর্যন্ত বিশ্বস্ত থেকে যায়।
দেখতাম, কালীপুজোর পর জলসায় ভিআইপি সিটে লম্বুদা বসে আছে চামচাবিহীন, উদ্বোধনী ভাষণ দিয়ে গেছে এলাকার নেতা, সঙ্গে পচাগুলি সমেত লোকজন। পচাগুলির পরনে সরু পাজামা, কলার-তোলা পাঞ্জাবি। আঙুলে টুসকি মারলে হাফ ডজন ছেলে জড়ো হয়ে যায়। লম্বুদা ট্যারা চোখে তাকায়। কাছের লোককে বলে আমি লম্বোদর প্রামাণিক। যে মুখে মায়ের দুধ খেয়েছি, সে মুখে কারুর পায়ের তলা চাটতে পারব না।
পচাগুলির বাড়বাড়ন্ত। সেলুনে চুল কেটে চলে আসে, স-চামচে চায়ের দোকানে চা-অমলেট টোস্ট খায়, পয়সা দেয় না। বাজারে পছন্দের মাছটা তুলে নিয়ে বলে, ঠেক থেকে পয়সা নিয়ে আসবি। পচাগুলি বাজারে ঢুকলে মাছওয়ালারা ভয় পেয়ে যায় কে জানে, কার মাছটা আজ পছন্দ হয়ে যায়!
বাজারের বাইরে একটা ছোট মেয়ে দু’টো কাঁঠাল নিয়ে বসেছিল। পচাগুলি জিজ্ঞাসা করল, দাম কত? মেয়েটা বলল, বাবা জানে। বাবা কোথায়? মেয়েটি বলল, বাহ্যি করতে গেছে। পচা বলল, দাম জানিস না? মেয়েটি বলেছিল, বড় কাঁঠালটার দাম ছোটটার ডবল। পচা বলেছিল, বড়টা নিয়ে যাচ্ছি, ছোটটা বিক্রি হলে বাবাকে বলবি আমার ঠেক থেকে দামটা নিয়ে নেবে।
লম্বুদা তখন বাজারে। মেয়েটার বাবা লম্বুদাকে বলল, আপনি থাকতে এমন অবিচার চলবে?
লম্বুদা দশ জন মাছওয়ালার কাছ থেকে দশ টাকা করে চায়। বলে ভিক্ষে নয়, ধার দে, শোধ দিয়ে দেব। তার পর একশো টাকা দিয়ে ছোট কাঁঠালটা কিনে নেয়। ওদের সঙ্গে নিয়ে পচাগুলির ঠেক-এ যায়। বলে, ছোট কাঁঠালটা একশো টাকা দিয়ে কিনেছি, তুই দু’শো দে।
ইব্রাহিম লোদির কামান ছিল না; বাবরের কামান ছিল। বাবর জিতেছিল। প্রথম পানিপথের যুদ্ধ ইতিহাসে লেখা আছে। ব্যোমকালীতলার ১৯৭৩ সালের কাঁঠালযুদ্ধের কথা ইতিহাসে লেখা নেই, যেখানে লম্বুদা পরাজিত ও নিহত হয়েছিল।
কারণ লম্বুদার কোনও রাজনৈতিক দাদা ছিল না।
|
|
সুমিত্র বসাক |
|
• সাতটায় কেকেআর-এর খেলা। প্রেমিকাকে কাটিয়ে দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেখেন এক ঘণ্টা
ধরে হাবিজাবি বুকনি, আটটায় খেলা শুরু হল। এই এক ঘণ্টায় ট্যাক্সিতে ৮৮টা চুমু হত। |
|
|
• বেঙ্গালুরুর খেলা মানেই ক্রিস গেল অসংখ্য ছক্কা হাঁকাবেন আর সেক্সি চিয়ারগার্লরা বার বার নাচবে। মহানন্দে দেখতে বসলেন, কিন্তু মৌলবাদী সংগঠনের হুমকিতে তারা মাংকি ক্যাপ আর আলখাল্লা পরে নাচল। |
• বন্ধুর সঙ্গে তক্কাতক্কিতে বাজি রাখলেন মনোজ তিওয়ারি পরের খেলায় সেঞ্চুরি করবেন। মনোজ দুর্দান্ত খেলে যখন ৯৯, আপনি বন্ধুকে প্যাঁক দিতে ডায়াল করে ফেলেছেন, মনোজ লোপ্পা ক্যাচ তুলে দিলেন। |
|
|
|
|
• গত চার দশকের মধ্যে ভয়ঙ্করতম খরায় দগ্ধাচ্ছে মহারাষ্ট্র, ১৪টি জেলার ৭০০০-এরও বেশি গ্রামে আবাদি জমি পুড়ে খাক। বাড়ছে কৃষক-আত্মহত্যা ও তজ্জাত বিক্ষোভের আগুন, আর তাতেই ঘি ঢাললেন উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার, গত ৫৫ দিন ধরে মুম্বইয়ে অনশনরত এক কৃষকের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে এক সভায় বললেন, ‘ড্যামে জল না থাকলে আমরা কি হিসি করে ড্যাম ভরাব!’ লোডশেডিং বিষয়ে: ‘রাতে আলো চলে গেলেই বাচ্চাকাচ্চা জন্মায় বেশি, অন্ধকারে আর কিছু করার নেই কিনা!’ শুখা আবহে মন্ত্রীর নির্জলা রসিকতায় লোকে হাসেনি, সংসদে তুলকালাম, জনতা পাবলিক টয়লেট গড়ে নাম দিয়েছেন ‘অজিত মূত্রালয়’। মন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন, মাত্রা-ছাড়ানো রসিকতাটিকে বলেছেন রাজনৈতিক কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ভুল। তাতেই সব থিতোয় না। ভোটে জিতে এসে নেতামন্ত্রীরা কাজ করেন না, এ অভিযোগ পুরনো হতে হতে জং-ধরা, তেষ্টায় ছাতি ফাটার কালে দু’টো মিঠে আশ্বাসবচন তাও যদি বা বুক জুড়োত, মার ঠাটিয়ে অশ্লীল জোক। গ্রিক থেকে ভারতীয়, সব সংস্কৃতি জোর দিয়েছে Rhetoric-এর ওপর, সাধু থেকে যোদ্ধা, বিদ্যার্থী থেকে পদস্থ কর্তা, আবহ-ওজন বুঝে শমিত, সংস্কৃত ভাবে কথাটি পাড়বেন। এখন ক্ষমতার স্টেজ ও আকাট বয়ান সত্য, তাহার উপরে নাই।
•
মরে যাওয়ার পর ঠিক কেমনটা লাগে নিজেকেই কফিনস্থ দেখতে, কী-ই বা বলেন শোকাতুর স্বজনবান্ধব, তার হদিশ পেতে বছর বাইশের চিনে তরুণী জেং জিয়া ছদ্ম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সারলেন। রীতিমত জোগাড়যন্ত্র করে, মাথা ও পয়সা খাটিয়ে সাজানো হল কফিন, এলেন মেক-আপ আর্টিস্ট, মৃতের সাজপোশাকে জেং কফিনে দেড় ঘন্টা চুপটি শুয়ে থাকলেন। কাছের মানুষেরা কফিন বইলেন, এক কাঁড়ি কাঁদলেন, ‘মিস ইউ’ হা-হুতাশে বাতাস ভারী হল, ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলল মুহুর্মুহু। গোটাটাই সাজানো। ভড়ং বলে নাকভুরু-কুঁচকোনো বিশ্বের দিকে জেং-এর জবাব, এ স্রেফ গিমিক-উত্সব নয়, পিছনে আছে গূঢ়তর ভাবনা। যে মানুষটিকে এত আচার-অনুষ্ঠানের ঘনঘটায় শেষ বিদায় জানানো, তিনি তো এর কিচ্ছুটি টেরই পান না, এত সুচারু আয়োজনের কদর করতে পারেন না। জেং-এর দাবি, কফিনে মৃতবত্ শুয়ে তাই প্রিয়জনের স্নেহ-ভালবাসার একটা আন্দাজ পাওয়া গেল, আর বেঁচে থাকা ব্যাপারটা যে কী ভাল কী ভাল, তারও এক জব্বর প্রমাণ হাতে এল এই ছদ্ম-মৃত্যুর অভিজ্ঞতায়। শুধু গট-আপ মরণোত্সবে আত্মীয়-বন্ধুর ভালবাসাটুকু অভিনয় নয়, নিখাদ, আশা। |
|
|
|
৫০৮২
মোট যতগুলো বস্তি
আছে পশ্চিমবঙ্গে |
২৩০০০০০০০০০
আয়কর দফতর থেকে
যত টাকার আয়কর নোটিস
এল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল
বোর্ডের কাছে |
৮৩০০০০০০০
যত টনেরও বেশি কার্বন ডাইঅক্সাইড
গ্যাস নিঃসরণ করে ইন্টারনেট ও
এই ধরনের যোগাযোগ প্রযুক্তি।
গবেষণায় দাবি অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীদের |
|
১
আইপিএল সিক্স-এ যত মিলিয়ন
ডলার দরে অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-কে কিনেছে মুম্বই ইন্ডিয়ানস (ভারতীয় মুদ্রার হিসেবে ৫.৩ কোটি টাকা) |
|
৩৩
বেড়ালের হামলায় পৃথিবী থেকে
অন্তত যত প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে
গেছে বলে দাবি জীববিজ্ঞানীদের |
৯০০০০০
প্যারিসের এক দৌড়ে অংশ
নেওয়ায় সেকেন্ড-প্রতি যত টাকা
পেলেন স্প্রিন্টার উসেইন বোল্ট |
২৬
যতগুলো পোর্শে (জার্মানিতে তৈরি বিলাসবহুল গাড়ি)
এই মুহূর্তে কলকাতায় আছে |
৮৬
প্রতি দিন গড়ে
যত জন মার্কিন নাগরিক
গুলিতে প্রাণ হারান |
|
|
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
রাজহংস রাজহংস নোংরা যদি চাও
ময়লা জলে ভাসিয়ে দেব ধ্বংস হয়ে যাও
গন্ধ ঢাকা ব্লিচিং দিলাম অনেক দিনের পর
বিদ্যাসাগর ঝলসে উঠুক... সুন্দর! সুন্দর! |
মার খেয়েছেন অমিত মিত্র, মুখ্যমন্ত্রী লাঞ্ছিতা
পলিটিক্সের রূপ বিচিত্র, সকাল-সন্ধে মানছি তা
নতুন গুন্ডা কলেজ গুঁড়োলে
নটেখানি আরও বিশদ মুড়োলে
ভদ্দরলোকে বলে, কে আছিস? আগুন জ্বালছি, আন চিতা |
|
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন সমীর সরকার, বেথুয়াডহরি
|
|
|
|
পাশের ছবির দু’জন কী বলছে? সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
আপনিও লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের একটা রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০ ০০১ |
|
|
|
|
|
|
|