হাসপাতাল চত্বরেও নিরাপত্তার অভাব, আতঙ্কিত চিকিৎসকেরা
চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক তৃণমূল নেতা-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের সুপার। ২০ জন চিকিৎসকের একটি দল থানায় গিয়ে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সোহারাব খান নামে গোঘাটের বাবুরামপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনে কিছু লোক। ওই ব্যক্তি বাসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন বলে জানান তাঁরা। হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় জানান, মিনিট তিনেকের মধ্যে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল সোহরাবের। দু’জন চিকিৎসক ৬টা ৪০ মিনিট নাগাদ রোগীর সঙ্গের লোকজনকে জানিয়ে দেন, সোহরাবের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ।
অন্যত্র স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর বাড়ির লোক কেউ সঙ্গে ছিলেন না। তাঁকে অন্যত্র নিয়েও যাওয়া হয়নি। মিনিট কুড়ির মধ্যেই মারা যান সোহরাব। সুপারের দাবি, বাড়ির লোক আসেন মৃত্যুর মিনিট পাঁচেক আগে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোঘাটের তৃণমূল নেতা ফরিদ খান-সহ কয়েক জন হাসপাতালে চড়াও হন। এক চিকিৎসক-সহ কয়েক জনকে মারধর করা হয়।
নির্মাল্যবাবু বলেন, “চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না। কিছু দুষ্কৃতী নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতেই হাসপাতালে চড়াও হয়ে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্মীদের মারধোর করেছে। হাসপাতালে কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে ঘুসি মেরে তাঁর নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়।”
চিকিৎসকদের বক্তব্য, যে ভাবে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে চড়াও হল কিছু লোক, তাতে তাঁরা আতঙ্কিত। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে কাজ করবেন, তা ভেবেও শঙ্কিত সকলে। ঘটনার বিহিত চান চিকিৎসকেরা। এর আগেও একাধিক বার আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসকেরা। কিছু দিন আগে হাসপাতালে পাকাপাকি পুলিশ মোতায়েন রাখার ব্যবস্থা হয়। তার পরেও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই চিকিৎসকেরা।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “চিকিৎসক ও পুলিশের উপরে হামলার দু’টি পৃথক মামলা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত পলাতক।”
অন্য দিকে ফরিদের বক্তব্য, “নিজের গ্রামের ছেলের মৃত্যুতে চিকিৎসার কোনও ঘাটতি ছিল কিনা, তা চিকিৎসকদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। হাসপাতালের কর্মী ও চিকিৎসকেরা উল্টে আমাকেই মারধোর করে আটকে রাখেন। তখন প্রতিবেশীরা আমাকে উদ্ধার করার সময়ে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। কাউকে মারধোর করা হয়নি।”
হুগলি জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “ওই ঘটনায় দলীয় কোনও ব্যাপার নেই। তবে দলের প্রভাব খাটিয়ে কেউ অন্যায় করলে দল তার পাশে থাকবে না। প্রশাসন এবং পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”
এ দিকে, শুক্রবার মৃতদেহের ময়না-তদন্ত নিয়ে একপ্রস্থ টালবাহানা চলে হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তাঁরা কেউ এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন। ফলে ময়না-তদন্ত করতে পারবেন না। এ দিকে, সোহরাবের বাড়ির লোকও কেউ আসেননি। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বাড়ির লোকজন আসেন। শ্রীরামপুর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে ময়না-তদন্ত করানো হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.