গেইল-সংহারে ধ্বংস হওয়ার পরপর নাইট সংসারে ঘোরাফেরা করছে তাঁকে ইডেনে খেলিয়ে দেওয়ার ভাবনা। এবং হাজার ব্যস্ততাতেও নাইট-মহাতারকাদের মধ্যে পেপসি আইপিএলে এখনও অপরীক্ষিত ব্রেন্ডন ম্যাকালাম বেঙ্গালুরুর টিম হোটেলে একান্ত সাক্ষাৎকারে যা বলে গেলেন...
প্রশ্ন: আপনার হ্যামস্ট্রিংয়ের কী অবস্থা। ফিট হতে কত দিন লাগবে?
ম্যাকালাম: মনে তো হচ্ছে ঠিকই আছে। খুব বেশি দিন লাগার কথা নয়। টিমে ফার্স্ট ইলেভেনে ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।
প্র: ব্রেন্ডন ম্যাকালামের সঙ্গে কথা বলা মানে স্বাভাবিক ভাবেই আইপিএল ওয়ানের ১৫৮ রানের ইনিংস মনে পড়ে যাওয়া। আপনার এই হোটেল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের চিন্নাস্বামীতেই করেছিলেন। মনে পড়ে?
ম্যাকালাম: অনেক দিন তো হয়ে গেল (হেসে ফেলে)। ওই সময় ওই মুহূর্তটাকে ভীষণ স্পেশ্যাল বলে মনে হয়েছিল। বিশ্বাসই হচ্ছিল না, আমি এ রকম একটা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছি। এখনও ভাবলে তৃপ্ত লাগে। তবে সবচেয়ে ভাল লাগে ভেবে যে, আমার ওই ইনিংস টিমকে জিতিয়েছিল।
প্র: কিন্তু ওই একটা ইনিংস দিয়েই আপনাকে মাপা চালু হয়ে গেল। পরের চারটে আইপিএলে ও রকম দুর্ধর্ষ ইনিংস আর আসেনি ম্যাকালামের ব্যাট থেকে।
ম্যাকালাম: কে বলল, আসেনি? সব সময় ১৫৮-র মতো ইনিংস খেলতে হবে, এমন তো কথা নেই। ৬০-৭০ রানের ইনিংস আমি খেলেছি বেশ কয়েকটা। এমনকী তিরিশ-চল্লিশ রানের ইনিংসও অনেক সময় টিমের কাজে আসে। সেটা আমি করেছি।
প্র: কেকেআর এ বার কত দূর যাবে বলে মনে হচ্ছে?
ম্যাকালাম:: সবে টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে। আরও কয়েকটা ম্যাচ না গেলে বোঝা যাবে না।
প্র: ক্রিস গেইলকে ইদানিং দেখে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টির বিস্ফোরক ওপেনাররা কেউ-ই এখন শুরু থেকে ঝড় তোলার রাস্তায় যাচ্ছেন না।
ম্যাকালাম: দেখুন, এটা নতুন কোনও ব্যাপার নয়। টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করা মানেই দুমদাম চালানো নয়। বরং চেষ্টা করতে হবে কুড়ি ওভার টিকে থাকার। আমিও সেই চেষ্টাই করি।
প্র: গেইলদের বিরুদ্ধে আপনি ডাগআউটে থেকেও নামলেন না। চার বিদেশির স্লটে জায়গা পেতে এ বার অসুবিধা হবে মনে হচ্ছে?
ম্যাকালাম: না, মনে হচ্ছে না। এটা আমার কাছে কোনও সমস্যাই নয়। গত বারের চেয়ে কেকেআরে এ বার অনেক কিছুই পাল্টে গিয়েছে। দুর্ধর্ষ কিছু বিদেশি ক্রিকেটার টিমে আছে। এতে লাভই হচ্ছে। টিমের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ে। আমাদের বেঞ্চ স্ট্রেংথ খুব ভাল। কিন্তু এটাও জানি, এর মধ্যেই আমাকে জায়গা করে নিতে হবে। আর একটা কথা। বাকিদের সাফল্যও উপভোগ করতে জানা উচিত।
প্র: কেকেআরের চারটে জমানাই দেখে ফেললেন। গাঙ্গুলি-যুগ। আপনার জমানা। গৌতম গম্ভীরের সংসার। এবং আইপিএল চ্যাম্পিয়নের পরবর্তী জীবন। বিবর্তনটা কী রকম, একটু বলবেন?
ম্যাকালাম: এই পাঁচ বছরে নাইট রাইডার্সের জীবন অনেকটাই বদলেছে। ঘরের মাঠের ফায়দা কী ভাবে তুলতে হয়, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা এখন জানেন। ক্রিকেটাররাও অনেক পাল্টেছে। টিম এখন অনেক বেশি স্মার্ট। স্ট্র্যাটেজিতে। পারফরম্যান্সে। ক্যাপ্টেনও দুর্ধর্ষ।
প্র: ক্যাপ্টেন প্রসঙ্গে বলে ফেলা যাক, কেকেআরের তিন ক্যাপ্টেনকেও আপনি দেখে ফেলেছেন। সৌরভ। আপনি নিজে। গম্ভীর। কে সেরা?
ম্যাকালাম: দেখুন, প্রত্যেকেরই শক্তি আলাদা ধরনের। সৌরভ আর গম্ভীর খুব ভাল অধিনায়ক। আর আমিই সবচেয়ে খারাপ! রেজাল্ট তাই বলে।
প্র: লোকেও কিন্তু একটা কথা বলে।
ম্যাকালাম: কী?
প্র: বলে, ব্র্যান্ড ব্রেন্ডনে ক্যারিশমা বেশি, স্টাইল বেশি, ক্রিকেট কম। আইপিএলে চেনা ফর্ম-ও দেখা যায় না।
ম্যাকালাম: ফর্ম পড়েছে? লোকে যা বলে বলুক। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম মনে করে, সে-ই বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি প্লেয়ার। এখনও। এ বার সেটা দেখতেও পাবেন। |