আতঙ্ক
বাড়ছে পার্থেনিয়াম
ফুলের ঘায়ে মূর্ছা নয়, হাঁপানি। হতে পারে চর্মরোগও।
মৌড়িগ্রাম স্টেশন থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত লাইনের দু’ধার ভরে উঠেছে এই ফুলের গাছ, পার্থেনিয়ামে। আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা।
কী এই পার্থেনিয়াম?
বটানিক্যাল গার্ডেনের যুগ্ম অধিকর্তা হিমাদ্রিশেখর দেবনাথ বলেন, “বিজ্ঞানের ভাষায় এই গাছের নাম পার্থেনিয়াম হিস্টেরোফোরাস। এই গাছের মূল থেকে ল্যাকটোন ও ফেনল নামে দু’রকমের রাসায়নিক পদার্থ বের হয়। যা অন্য গাছের মূল নষ্ট করে দেয়। ফলে আশপাশে অন্য গাছ টিকতে পারে না।”
পার্থেনিয়াম কী ভাবে ক্ষতি করে?
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “বাতাসে ভেসে এই পার্থেনিয়ামের ফুলের রেণু প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকলে হাঁপানি হতে পারে।
ত্বকে এগ্জিমা, নানা ধরনের র্যাশ হতে পারে। নাক দিয়ে অবিরাম জল পড়তে পারে। ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কাও থাকে। গরু বা মোষের সংক্রমণ হলে তাদের দুধ পান করলেও ক্ষতি হতে পারে।”
নিত্যযাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের হাওড়া-খড়গপুর শাখার মৌড়িগ্রাম স্টেশন থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত লাইনের ধার বরাবর পার্থেনিয়ামে ভরে গিয়েছে। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে রেলকর্মীদেরও। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মৌড়িগ্রাম স্টেশনের পাশে। আপ লাইনের এক ধারে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। অন্য পাশে, পার্থেনিয়ামের জঙ্গল। এটি অত্যন্ত ব্যস্ত স্টেশন। যাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকে। ফলে অজান্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক যাত্রী সমীর মহাপাত্রের কথায়: “রেল কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে কিছু করা উচিত।”
কী ভাবে প্রতিরোধ সম্ভব?
হিমাদ্রিশেখরবাবু জানান, এই গাছ এমন ভাবে তুলতে হবে যে মূলের কোনও অংশ যাতে মাটিতে না থাকে। তার পরে সেখানেই পুড়িয়ে দিতে হবে। অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে গেলে রেণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। তা ছাড়া ক্যাশিয়া সেরেশিয়া, ক্রোটোন বন প্ল্যান্ট ডিয়ানস, ক্যাশিয়াটোরা, অ্যামারান্থাস স্পাইনোসেরাস-এর মতো গাছের মূলে পার্থেনিয়ামের মূল থেকে বেরনো রাসায়নিক পদার্থ প্রভাব ফেলতে পারে না। এই ধরনের গাছ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পার্থেনিয়ামকে অস্তিত্বের সঙ্কটে ফেলে দেয়।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “লাইনের ধারে পার্থেনিয়াম নিয়মিত নষ্ট করে দেওয়া হয়। খুব দ্রুত ওই অংশের পার্থেনিয়াম নষ্ট করে দেওয়া হবে।”

ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.