ন্যায্য দাম পেতে নয়া ব্যবস্থা
একশো একরের দর মাত্র ১৬ কোটি, বিস্মিত কোর্ট
শিল্প গড়তে যে-রাজ্যে জমি অতি দুর্লভ, সেই পশ্চিমবঙ্গে ১০০ একর জমির দাম মাত্র ১৬ কোটি! তা-ও আসানসোলের মতো শহরে!
বিস্ময় প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তাদের বিস্ময় বেড়েছে রাজ্য সরকারেরই একটি সংস্থা এই দাম দিতে চাওয়ায়। সেই রাজ্য সরকার, যারা জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে মালিককে বাজারদরের তিন গুণ বেশি টাকা দেওয়ার পক্ষে!
রাজ্য সরকারের সংস্থা আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন নিগম আসানসোল শহরের একটি বন্ধ কারখানার ১০০ একর জমি মাত্র ১৬ কোটি টাকা দিয়ে কিনতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে। অফিসিয়াল লিকুইডেটর ওই জমি বিক্রি করতে চেয়ে বিজ্ঞাপন দেন। শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে এই জমি বিক্রির মামলাটির শুনানিতে নিগমের আইনজীবী রাজা বসু চৌধুরী বলেন, নিগম জমিটি কিনতে চায়। তারা দাম হিসেবে ১৬ কোটি টাকা দিতে রাজি।
নিগমের এই দর শুনে বিচারপতি হতবাক হয়ে যান। তিনি বলেন, এক একর জমির দাম যদি এক কোটি টাকাও হয়, তা হলে আসানসোলের ওই জমির দর দাঁড়ায় ১০০ কোটি টাকা। সেই জমি মাত্র ১৬ কোটি টাকায় কিনতে চাওয়া হচ্ছে কী ভাবে? ওই জমি বিক্রির নতুন ব্যবস্থা হোক। ৫০ কোটি টাকা থেকে ওই জমির দরের ডাক শুরু হওয়া উচিত। বিচারপতি নির্দেশ দেন, ওই জমি বিক্রির বিষয়টি যাতে অন্যান্য আগ্রহী ব্যক্তি বা সংস্থা জানতে পারেন এবং তা কেনার জন্য দরাদরিতে যোগ দিতে পারেন, তার জন্য অফিসিয়াল লিকুইডেটরকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আসানসোলের ওই জমিটি সাইকেল কর্পোরেশনের। এক কালে ওই কারখানায় সেনর্যালে সাইকেল তৈরি হত। পরবর্তী কালে কারখানায় লোকসান হতে থাকে। এক সময় তা বন্ধই হয়ে যায়। নানা ভাবে চেষ্টা চালিয়েও কারখানাটির পুনরুজ্জীবন সম্ভব না-হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অফিসিয়াল লিকুইডেটর নিয়োগ করা হয়। ঠিক হয়, কারখানার সম্পদ বিক্রি করে শ্রমিক এবং অন্যদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হবে।
কোনও কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে তাদের সম্পদ যত বেশি দামে বিক্রি হবে, কাজহারা কর্মী-শ্রমিকদের সেই অনুপাতেই সুবিধা-সুরাহা হওয়ার কথা। বকেয়া পাওনার সবটুকু হয়তো মিলবে না। কিন্তু মালিক সম্পদের বেশি দাম পেলে শ্রমিক-কর্মীদের প্রাপ্যও যথাসম্ভব বেশি মাত্রায় মেটাতে পারবেন। তাই পাওনাদার এবং কাজহারাদের স্বার্থেই বিচারপতি আসানসোলের ওই কারখানার সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়ায় আরও বেশি আগ্রহী সংস্থার যোগদান চান। যত বেশি সংস্থা ওই জমি বা সম্পদ কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবে, উচিত-মূল্য পাওয়ার সম্ভাবনা ততই বাড়বে।
জমির সমস্যায় বিভিন্ন প্রকল্প আটকে থাকায় রাজ্য সরকার বলেছে, কোনও জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে তারা ক্ষতিপূরণ হিসেবে জমির মালিকদের বাজারদরের তিন গুণ দাম দেওয়ার পক্ষে। তা সত্ত্বেও একটি সরকারি নিগম আসানসোলের ওই ১০০ একর জমির জন্য মাত্র ১৬ কোটি টাকা দর দেওয়ায় আইনজীবী মহলের একাংশও বিস্ময় প্রকাশ করেছে। কাজহারা শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর ক্ষেত্রে সরকারের মনোভাব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। নিগমের আইনজীবী অবশ্য জানান, ওই জমির যে-মূল্যায়ন করা হয়েছে, তাতেই দর দেখানো হয়েছে ১৬ কোটি টাকা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.