অর্থমন্ত্রীর হেনস্থার জেরে ভাঙচুর সিপিএম কার্যালয়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
নয়াদিল্লিতে যোজনা কমিশনের কার্যালয়ের সামনে বামেদের হাতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নিগৃহের প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিল। আর সেই মিছিল থেকেই সিপিএমের জোনাল অফিসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিউড়ি শহরের টিনবাজার এলাকার ঘটনা। ওই ঘটনায় অফিসে থাকা এক দলীয় কর্মী ও রান্নার লোককে মারধর করা হয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। তাদের দাবি, গোটা ঘটনাটিই ঘটেছে পুলিশের উপস্থিতিতে। তৃণমূল যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
|
মঙ্গলবার ভাঙচুরের পরে। — নিজস্ব চিত্র |
জেলার পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা অবশ্য বলেন, “যাতে ওখানে বড় ধরনের কোনও গণ্ডগোল না হয়, তাই মিছিলের সঙ্গে পুলিশ ছিল। কিন্তু সংখ্যায় খুব কম ছিল। যার জন্য একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের পাইনি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সাড়ে ছ’টা নাগাদ সিউড়ি টিনবাজার এলাকা দিয়ে তৃণমূলের ওই মিছিলটি যাচ্ছিল। সঙ্গে কিছু পুলিশও ছিলেন। মিছিল সিপিএমের সিউড়ি জোনাল অফিসের কাছাকাছি আসতে আচমকাই তৃণমূলের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক জোনাল অফিসের দোতলায় উঠে পড়েন। তারাই ওই অফিসের তিন নম্বর ঘরে ঢুকে হামলা চালান বলে অভিযোগ। এ দিন ওই অফিসে ঢুকে দেখা গেল, তিন নম্বর ঘরের চেয়ার টেবিল উল্টে পড়ে আছে। মেঝেয় ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে একটি কম্পিউটারও। এ দিক সে দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা কাগজপত্র। |
নলহাটিতে তৃণমূলের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র |
হামলার খবর পেয়েই দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তপন রায়-সহ বেশ কিছু নেতা-কর্মী। পাশের ঘরেই শান্ত মেজাজে টিভিতে খবর দেখছিলেন সিপিএমের প্রবীণ নেতা আব্দুল গফ্ফর ও তপনবাবুরা। এ দিকে ঘরে ঢুকে সাংবাদিককে দেখেই অভিযোগ করলেন দলের জোনাল সম্পাদক দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “তৃণমূলের দুই নেতা দীপক দাস ও অভয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বেই আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানো হল।”
যদিও ঘটনার সময়ে ওই কার্যালয়ে থাকা সিপিএম কর্মী মহম্মদ সেলিম বা রান্নাঘরের কর্মী রাম বাগদি, কেউই অবশ্য আক্রান্তকারীদের চিহ্নিত করতে পারেননি। সেলিমবাবু বলেন, “ঘটনার সময়ে আমি ওই ঘরে বসে দলের বেশ কিছু কাগজপত্র দেখছিলাম। নিচে তৃণমূলের একটি মিছিল যাচ্ছিল। সেই মিছিল থেকেই কিছু দুষ্কৃতী উপরে উঠে ভাঙচুর চালাতে থাকে। তারা পুলিশের সামনেই আমাকে মারধর করে। এমনকী রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকা একজনকেও তারা মারতে ছাড়েনি।” এ দিকে মিছিল থেকে তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক ওই কার্যালয়ে ঢুকেছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তাঁদের দাবি, ওই ঘটনায় দীপকবাবু ও অভয়বাবু জড়িত নন। মিছিল সেখানে পৌঁছনোর আগেই দুই নেতা ফিরে গিয়েছিলেন। একই দাবি করেছেন দীপকবাবুরাও। |
সিউড়িতে সিপিএমের জোনাল অফিসে ভাঙচুরের পর। —নিজস্ব চিত্র |
সিপিএমের জোনাল অফিসে হামলার ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নন বলেই দাবি করেছেন দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর দাবি, “একেবারেই ভিত্তিহীন অভিযোগ। দিল্লিতে সিপিএম আমাদের অর্থমন্ত্রীকে নিগ্রহ করেছে। আর এখন তারা নিজেরাই এই কাণ্ড করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওই জোনাল অফিসে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই ভাঙচুর চালিয়েছে।” |