|
|
|
|
দিদি ও দিদ্দি... |
পাড়ার রিকশার সামনে দাঁড়াতে ভিড় জমে গেল। তিনি মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়ালেও ভিড়। মাইক্রোফোন
ছাড়া
দাঁড়ালেও ভিড়। চার দশকেরও বেশি জুড়ে রয়েছে তাঁর সঙ্গীত জীবন। ঊষা উত্থুপ-এর মুখোমুখি প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
সে বছর অমিতাভ বচ্চনের অভিষেক ঘটেছিল সিনেমার দুনিয়ায়। মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ ছবিতে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তাঁর গলা শোনা গিয়েছিল প্রথম বার। সেই বছরেই মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী ছবি ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন’। ওই একই বছরে কলকাতা পেয়েছিল উত্তম-সুচিত্রার হিট - হরিসাধন দাশগুপ্তের ‘কমললতা’।
আর সেই একই বছরে মুম্বইবাসী একুশ বছরের একটি তামিল মেয়ে চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে কলকাতা পাড়ি দিয়েছিলেন। স্বপ্ন নাইট ক্লাবে গাওয়া।
সালটা ছিল ১৯৬৯। কাঞ্জিভরম শাড়ি পরা সেই মেয়েটির গান, কলকাতার এলিট সমাজের নজর কেড়েছিল। তার পর চুয়াল্লিশ বছর কেটে গিয়েছে। পঁয়ষট্টি বছরের ঊষা উত্থুপ আজও চিরনবীন। কাজের ব্যাপারে আজও একই রকম আবেগপ্রবণ। হয়তো বা আগের থেকেও বেশি!
তাঁর বেশির ভাগ সমসাময়িকরাই আজ কাজের জগৎ থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু ঊষা চিরকালই আশাবাদী। আজও বিশ্বাস করেন এগিয়ে যাওয়ায়। তাঁকে ভারতবর্ষের প্রথম ‘দিদি’ বলা হয়। রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলা থেকে আর এক ‘দিদি’র আবির্ভাবের অনেক আগেই এই দিদির অভিষেক।
তাঁর এনার্জির গোপন চাবিকাঠি রয়েছে তাঁর আত্মপ্রত্যয়ে। জিমে যান না। সাঁতারে ভীষণ ভয়। তবে নিজে ডিজাইন করা ‘কাঞ্জিভরম রিবক’ জুতো পরে হাঁটতে যেতে ভালবাসেন। এক সময় প্রায় এক ঘণ্টা ভোরবেলা হাঁটা তাঁর অভ্যেস ছিল। সম্পূর্ণ শাকাহারী। কিন্তু বাড়ির সকলের জন্য অসাধারণ আমিষ পদ রাঁধেন। |
|
আনন্দ পালিত রোডের নিজের স্টুডিয়োতে বসে তিনি। তাঁর স্টুডিয়োতে ঢুকলেই চোখে পড়ে একটি বসার জায়গা। ডান দিকের গোটা দেওয়াল জুড়েই দেব-দেবীদের ছবি টাঙানো। মনে হয় যেন কেউ মোজাইক করে এই দেওয়ালটিকে উৎসর্গ করেছেন ‘গড অব অল থিংস’কে।
তবে তাঁর নিজের ঘরটা অনেক বেশি অন্তরঙ্গ। একটি সাধারণ স্টাডি টেবিল, যেটার উপর একটা কম্পিউটার,স্তূপাকৃতি ফাইল, বেশ কিছু ট্রফি আর ফ্রেম-বন্দি কয়েকটি ফটো। ছবিগুলোতে ‘দিদি’কে দেখা যায় তাঁর পরিবার বা মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে। কম্পিউটার মনিটরের ঠিক পাশেই দু’টো সারি দিয়ে গোলাপি আর কমলা রঙের অনেক চুড়ি রাখা রয়েছে। আর ফাইলের স্তূপের মাঝে রাখা একটা বেশ বড় প্যাকেট। তাতে শুকনো ছোলা। “ছোলা খেতে খেতে কথা বলা যাক। সামনেই আমার জন্য ‘তালে তালে তেতাল্লিশ’ শো। অনুষ্ঠানটা হবে ১৩ এপ্রিল। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। আমার সব মিউজিশিয়ান বন্ধুরা দেশের নানা জায়গা থেকে আসছে এই শো-টার জন্য। আমরা তো এটাকে ‘ফ্রেন্ডস ফরএভার’ প্রচেষ্টাই বলব,” বললেন তিনি। গলায় উষ্ণতার ছোঁয়া। এটাই তাঁর ইউএসপি। |
ফিরে দেখা |
ঊষার জন্ম মুম্বইতে। একেবারেই মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে জন্ম তাঁর। ছয় ভাই বোন মিলে সংসার। দুই দিদি, ইন্দিরা আর উমা, সামি সিস্টার্স নামে গান গাইতেন। বাবা পুলিশে চাকরি করতেন। সে ভাবে কোনও দিন গান শেখেননি। এমনকী স্কুলের মিউজিক ক্লাস থেকে অনেকবার ব্রাত্য করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে বাড়িতে গান শোনার চল ছিল বেশ। “বাবা-মা সব ধরনের গান শুনতেন। বাড়িতে আমি লংপ্লেয়িং ডিস্কে শ্যামল মিত্র, মান্না দে বা কানন দেবীর গানও শুনেছি,” বলেন তিনি। হয়তো সেই সুরের মধ্যে দিয়েই তাঁর কলকাতা শহরের সঙ্গে একটা নাড়ির টান স্থাপিত হয়। যে সম্পর্কটা নিয়ে অনেক বছর পরে ‘কেয়ার অফ কলকাতা’ বলে একটা গান বেঁধেছিলেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। |
প্রথম বার নাইট ক্লাবে |
প্রত্যেক বছর গরম কালে ছুটি কাটানো মানেই ছিল মাদ্রাজ যাওয়া। “থার্ড ক্লাস কামরায় চেপেচুপে বসে আমরা বম্বে থেকে মাদ্রাজ যেতাম। এমনই একটা ছুটিতে, আমার মাসি বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন মাদ্রাজের নাইন জেমস নাইট ক্লাবে,” বলেন তিনি। সে রাতে ‘ফিভার’ গেয়ে প্রথম বুঝলেন দর্শকের উষ্ণ অভিনন্দনের মজাটা কোথায়। নাইন জেমসের অধিকর্তারা তাঁকে গোটা সপ্তাহই সন্ধেবেলা এসে গান গাইতে বলেন। “রাজি হলাম। এক সপ্তাহ পরে পারিশ্রমিক হিসেবে পেলাম একটা কাঞ্জিভরম শাড়ি,” বলেই সামনের দেওয়ালে একটা ছবির দিকে দেখিয়ে বললেন, “ওই শাড়িটার কথাই বলছি।” এর পর কনট্র্যাক্টটা ছিল মাদ্রাজের ‘সভেরা’ হোটেলে। পারিশ্রমিক হিসেবে পেতেন মাসিক সাড়ে সাতশ টাকা। তার পর মুম্বইতে কাজ। চতুর্থ কনট্র্যাক্ট ঊষাকে নিয়ে আসে কলকাতায়।
|
|
|
দিল্লিতে। অমিতাভ বচ্চনের মেয়ের ‘এনগেজমেন্ট’ অনুষ্ঠানের ঠিক আগে |
রাজ কপূরের স্নেহ চুম্বন। বোম্বে।
১৯৭২। ‘ববি’ সিনেমার আগে |
|
কলকাতা কলকাতা |
পার্ক স্ট্রিটের ‘ট্রিঙ্কাস’-এ তখন রমরমা। “অফার এল ওখানে গাওয়ার। কিন্তু আমি প্রথমেই বলে দিয়েছিলাম শাড়ি পরে গাইতে দিলে আমি রাজি। ঠিক হল মাসে আমাকে দেওয়া হবে দেড় হাজার টাকা। দিনে তিনটে সেশনে গান গাইতাম টি, প্রি সিনেমা আর পোস্ট সিনেমা,” বলেন ঊষা।
তবে ‘ট্রিঙ্কাস’-এ গান গাইতে যাওয়ার আগে ঊষাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল লালবাজার-এ। “আমাকে বলা হয়েছিল লালবাজারে গিয়ে একটা অ্যাপ্লিকেশন সই করতে। অ্যাপ্লিকেশনটায় লেখা ছিল, ‘ইউ আর নট অ্যালাওড টু সিট উইথ দ্য গেস্ট অ্যান্ড সলিসিট!’” হেসে বলেন তিনি।
|
গানের ওপারে |
এই ‘ট্রিঙ্কাস’-এই ঊষার প্রথম দেখা হয় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। নিজের বন্ধুদের নিয়ে আসতেন গান শুনতে। আর দেখা হয় উত্তমকুমার-সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গেও। “প্রথম বার যখন ওঁদের দেখি চিনতে পারিনি। গানের শেষে কনফেকশনারিতে গিয়ে এক জনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এই সুন্দর কাপলটি কারা? তখন প্রথম জানলাম উত্তম-সুপ্রিয়া সম্পর্কে। উত্তমকুমারের ফেভারিট গান ছিল ‘ফিভার’। আর আসতেন শর্মিলা ঠাকুর-মনসুর আলি খান পটৌডি। “ওঁদের পছন্দ ছিল ‘মাটিল্ডা।’ তখনকার দিনে আমি নাইট ক্লাবে গিটার নিয়ে ‘পুরানো সেই দিনের কথা’ গেয়েছিলাম!”
‘ট্রিঙ্কাস’-এ সত্যজিৎ রায়কেও দেখেছি। “এক দিন আমাকে দেখে বলেছিলেন ‘একটা ছবি করতে চাই তোমাকে নিয়ে। এক জন তামিল মেয়ে শাড়ি পরে কলকাতার নাইট ক্লাবে গাইছে...’ ছবিটা বানানো হয়নি। তবে ইচ্ছেটাই বড় প্রাপ্তি। কোনও দিন এই বিষয়ে ছবি বানালে চাইব ঋতুপর্ণ ঘোষ সেটা পরিচালনা করুন,” বলেন ঊষা। চোখের কোণে জল। লজ্জা মিশ্রিত হাসি ঠোঁটে। বলেন, “‘ট্রিঙ্কাস’-এই আমার স্বামীর সঙ্গে প্রথম পরিচয়!” |
ভালবাসি ভালবাসি |
আজও মনে আছে সেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কথা। সেশনের শেষে একজন সুদর্শন পুরুষ এসে পরিচয় করলেন। বললেন তাঁর নাম, জানি চাকো উত্থুপ। অনুরোধ করলেন ‘মাটিল্ডা’ গানটা গাওয়ার জন্য। “আমি কথা দিয়েছিলাম যে পরের দিন রিহার্সাল করে গানটা গাইব। কিন্তু তিনি এলেন পরের সপ্তাহের মঙ্গলবার। আমি ‘মাটিল্ডা’ গাইলাম,” বললেন ঊষা।
বেশ বুঝতে পারছিলেন যে প্রেমে পড়েছেন তিনি। “আমি নিজেই জানিকে প্রথম প্রেম নিবেদন করেছিলাম। বাড়ি থেকে আমার আগে একটা সম্বন্ধ করে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সে বিয়ে টেকেনি। তবে জানির আমার অতীত নিয়ে কোনও অসুবিধে ছিল না। সে আমাকে শিখিয়েছিল জীবনে স্বচ্ছতার দাম কতটা,” অকপটে বলেন ঊষা।
জানি চা কোম্পানিতে চাকরি করতেন। থাকতেন আলিপুর আর ক্যামাক স্ট্রিটে। “একটা হেরাল্ড গাড়ি চালাত। আমি গাড়িতে উঠেই ওকে বলতাম, ‘এই আমার হাতটা ধরবে একটু?’ আর ও খুব লজ্জা পেয়ে বলত, ‘দেয়ার ইজ এ টাইম অ্যান্ড প্লেস ফর এভরিথিং। বিয়ের আগে শারীরিক মিলনও হয়েছে আমাদের। জানি আমার সঙ্গে থাকত। ভোর চারটে নাগাদ ক্যামাক স্ট্রিটে ফিরে যেত। ফিরে গিয়ে নাকি খাটের চাদরটা এলোমেলো করে দিত,” বলে এক গাল হাসি।
একবার ‘ট্রিঙ্কাস’ থেকে একটা ছুরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন ডেট করতে। “স্ট্র্যান্ড রোডের ধারে একটা মনুমেন্টের দেওয়ালে খোদাই করে লিখেছিলাম ‘ঊষা-জানি’। বিয়ে করলাম ১৯৭১ সালে। আমাদের দুই ছেলে-মেয়েসানি ও অঞ্জলি,” বলেন তিনি।
|
|
শশী কপূরের সঙ্গে বোম্বেতে |
দুই পৃথিবী |
বলিউডের কেরিয়ার শুরু হয় দেব আনন্দের সঙ্গে। “আমাকে বলেন, ‘হরে রামা হরে কৃষ্ণা’ গাইতে হবে। আর ডি বর্মন আমার গান মুম্বইতে শুনেছিলেন। ‘গ্যাজিবো’ বলে একটা নাইট ক্লাবে গাইতাম আমি। আমার আর লতা মঙ্গেশকরের ‘দম মারো দম’ গানটা গাওয়ার কথা ছিল। আমি রেডি। আর ডি বর্মনকে জিজ্ঞেস করি রেকর্ডিং নিয়ে। উনি বলেছিলেন গানটি আগের দিন রাতেই রেকর্ডিং হয়ে গিয়েছে। আমি খুব কেঁদেছিলাম। তবে জানতাম এ সব আমাকে কাটিয়ে উঠতে হবেই। নিজেকে মনে হয় যেন একটা টেনিস বল। দ্য হার্ডার ইউ স্ম্যাশ, দ্য কুইকার আই উইল বাউন্স ব্যাক,” বলে হেসে ফেলেন ঊষা।
এই রকম ‘মিসড অপরচুনিটি’র ঘটনা প্রচুর। “রাজ কপূর চেয়েছিলেন ‘ববি’তে গান গাই। হয়নি। বলিউডে এমনও হিট গান আছে আমার, যার জন্য আজও টাকা পাইনি। তবে আমার দুঃখ নেই। কিশোরকুমার যখন একটা শো করে দু’লক্ষ টাকা পেতেন আমি তখন পেতাম মাত্র বারো হাজার টাকা। কিন্তু আমার মিউজিশিয়ানরা আমার সঙ্গে ফার্স্ট ক্লাসে যেতেন। আমার সাফল্যের পেছনে রয়েছে আমার দর্শক, আমার ব্যান্ড,” গর্বিত গলায় বলেন তিনি।
আর রয়েছে জানি। “লোকে বলে কেন জানিকে আমার অনুষ্ঠানে দেখা যায় না? আগে যখন ওকে বলতাম চলো যাই একসঙ্গে, ও না করে দিত। মাঝেমধ্যে রাগ হত। কিন্তু আজ বুঝি যে ও এ ভাবে থেকেছে বলেই আমি ‘ব্লসম’ করতে পেরেছি। ও সামনে থাকলে আমি সব সময় চাইতাম মিসেস উত্থুপ হয়ে থাকতে। কিন্তু দুনিয়া আমাকে সেটা থাকতে দিল না। আর আমি জানি ওটা হয়তো ও হ্যান্ডেল করতে পারত না। আমার চোখের সামনে কত সেলিব্রিটির সম্পর্ক ভাঙতে দেখেছি শুধুমাত্র এই কারণে।” |
|
স্বামী, ছেলে, মেয়ে, শাশুড়ি, নাতি-নাতনির সঙ্গে ঊষা |
|
স্বপ্নের দিন |
একশোটার ওপর অ্যালবামে গান, অসংখ্য জিংগল, দেশ বিদেশে অগুনতি কনসার্ট, পদ্মশ্রীর সম্মান, নেলসন ম্যান্ডেলার মতো গুণগ্রাহী এর পরেও আর কী স্বপ্ন বাকি থেকে যায়? “লোকে বলে আর ডি বর্মনের শেষ কাজ হল ‘১৯৪২ আ লভ স্টোরি’। তা ঠিক নয়। তাঁর শেষ কাজ ছিল আমার পুজোর অ্যালবাম। নাম ‘বাতি নেই, বাতি নেই’। এত সবের পরেও স্বপ্ন দেখি। ‘মিডল অব দ্য রোড’ গায়কদের আজ আরও বেশি স্বীকৃতি দরকার,” জোর দিয়ে বলেন তিনি।
সদ্য অনুষ্ঠিত আইপিএল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান গাইলেন। শাহরুখ তাঁকে ‘আন্তর্জাতিক’ শিল্পী বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন সেখানে। আর ‘রাম্বা হো’ শোনার পর মুচকি হেসে ডেকে বললেন ‘মিসেস রাম্বা’। “এসআরকে-র এনার্জি দেখে আমি অভিভূত। লোকে বলে আমার পায়ের তলায় চাকা লাগানো আছে। আমি বলি ওঁর পায়ের তলায় আছে স্প্রিং। আইপিএল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেয়েছি। এ বার চাইব এমন একটা স্টেজে গাইতে যেখানে বিশ্বের তাবড় তাবড় গায়করা থাকবেন। স্টিভি ওয়ান্ডার থেকে এলটন জন আর আমি। কাঞ্জিভরম শাড়ি আর বিন্দি পরে। তবে গানটা গাইব এনার্জিতে। আমি জানি সুযোগ পেলে আমি ওখানেও ইংরেজি গান গেয়েই মাতিয়ে দেব,” বলেন তিনি। আর চান বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে। “বিশাল ভরদ্বাজের ‘সাত খুন মাফ’ ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছি। তামিল, মালয়ালম, কন্নড় ছবিতেও কাজ করেছি। আমি তো প্রসেনজিৎকে বলেছি তাঁর ছবিতে আমি যে কোনও ভূমিকায় অভিনয় করতে পারি। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ছবি করতে চাই। জীবনে টাকা, ঘর-বাড়ির মোহ আমার নেই। শেষে তো সব্বাইকে সেই ৬/৩ একটা জায়গাতেই যেতে হবে। হিন্দু হলে তো পুড়ে ছাই সব।”
ছোটবেলায় তাঁর বাবা বলতেন মাঝে মাঝে নিজের অতীতে ফিরে গিয়ে নিজেকে তিনটে প্রশ্ন করতে। এক, তুমি কে? কোথা থেকে তুমি এসেছিলে? আর কোথায় যেতে চাও? যত দিন এই তিনটে প্রশ্নের সৎ উত্তর দিতে পারছেন, পথ চলাতেই আনন্দ তাঁর। কথা বলতে বলতে ক্যুরিয়র এল নাইরোবি থেকে। প্যাকেট থেকে বেরিয়ে এল পুঁচকে ফারের মুর্গি। সঙ্গে ফটো, স্টিকার। “কী কাণ্ড! আমার ফ্যান নাইরোবিতে থাকে। ঠিক বোঝে আমার এ সব পছন্দ! আমার এই জনসংযোগটাই পছন্দ।”
|
আমি |
• দিদি নম্বর ওয়ান: আমি দিদিগিরি করি। যা বলি তার মধ্যে থাকে ভালবাসা, স্বচ্ছতা, অন্তর্দৃষ্টি
• প্রিয় গান: ডার্লিং, কালী তেরি, আহা তুমি সুন্দরী কলকাতা
• ভয় পাই: প্লেন-এ চাপতে। অন্ধকারে। এখন হঠাৎ আলো চলে গেলে আমার মেয়ে অঞ্জলি ছুটে এসে বলে, “মা, ভয় পেয়ো না। আমি মোমবাতিটা জ্বালাচ্ছি”
• গান গাওয়ার ঠিক আগে: প্রার্থনা করি। আইপিএল উদ্বোধনের ঠিক আগে টেনশনে বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলটা খেয়ে চামড়া উঠিয়ে ফেলেছি
• সব চেয়ে প্রিয়: স্বচ্ছতা। লোকে বলে আমি নাকি মার্কেটিং-এর কথা ভেবে এই টিপ, চুড়ি আর শাড়ি পরে গান গাই। আমি বলি ‘না’। এটাই আমার নিজস্ব রূপ। এটাকে বর্জন করলে আমার স্বচ্ছতাকেই বিসর্জন দেওয়া হবে
• চোখের মণি: দুই নাতি-নাতনি। আয়েষা আর রিয়াদ। ওরাই আমাকে সতেজ রাখে
• নতুন গায়কের প্রতি: কখনও নিজের প্রাপ্য থেকে বেশি টাকা চেয়ো না |
|
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল |
|
|
|
|
|