খুনে অভিযুক্ত এক বিচারাধীন বন্দির ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল দেওয়ার অভিযোগে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক রাসবিহারী ঘোষ ও সুপার গৌতম মণ্ডলকে ভর্ৎসনা করল রায়গঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত (প্রথম)। সোমবার ওই আদালতের বিচারক শান্তনু রায় ওই নির্দেশ দিয়ে দুই জনকে ভবিষ্যতে সতর্ক হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন। ওই ঘটনায় গোপাল পোদ্দার নামে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসককে ১৯ এপ্রিল আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেন বিচারক।
আদালত সূত্রের খবর, ওই খুনের ঘটনার অভিযুক্তের নাম বিপ্লব ছেত্রী। বাড়ি রায়গঞ্জের রমেন্দ্রপল্লি এলাকায়। ২০০৯ সালে রায়গঞ্জ কেবল সংস্থার চিত্র সাংবাদিক বিশ্বজয় ঘোষের খুনে ঘটনায় তিনি অন্যতম অভিযুক্ত। জেল হেফাজতে থাকাকালীন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত শুক্রবার সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ তাকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। গত জানুয়ারি মাসে বিশ্বজয়বাবু খুনের ঘটনায় ছয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন হলেও বিপ্লব অধরা থাকায় তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়নি। গত ৪ জানুয়ারি রায়গঞ্জে খুন হন ওই কেবল সংস্থার কর্ণধার তথা উত্তর দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সহ সম্পাদক সঞ্জীব বর্ধন। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিপ্লবকে মালদহ থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গ্রেফতারি এড়াতে পালাতে গিয়ে বিপ্লব দোতলা থেকে ঝাঁপ দেন। এতে তাঁর দুই পা ভেঙে যায়। তাঁকে মালদহ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
গত ১০ মার্চ সিআইডি তাঁকে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তুললে বিচারক ১৯ মার্চ পর্যন্ত সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৭ মার্চ সিআইডি বিপ্লবকে জেল হেফাজতে পাঠিয়ে দেয়। সরকারি আইনজীবী সন্দীপ ভট্টাচার্য বলেন, “বিপ্লবের বিরুদ্ধে ২৫ মার্চ চার্জ গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে বিপ্লবকে অসুস্থ দেখিয়ে আদালতে হাজির করাননি। সংশোধনগারের চিকিৎসক, সুপার আদালতে জানান, গত ৮ মার্চ থেকে জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসক গোপালবাবু বিপ্লবকে একমাসের জন্য বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানান, বিচারককে জানানো হয় ১০ মার্চ বিপ্লববাবুকে জেলা হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। তাহলে ৮ মার্চ চিকিৎসক ওই পরামর্শ কীভাবে দিলেন? আমাদের মনে হয়েছে পরিকল্পনা করে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই বিষয়ে রাসবিহারীবাবুর দাবি, “গোপালবাবুর পরামর্শেই আদালতে ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পাঠিয়েছিলাম।” গোপালবাবু বলেন, “জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই ৮ মার্চ বিপ্লববাবুকে একমাস বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমার রিপোর্টকে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।” |