ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে মারধরে অভিযুক্তরা সকলে ধরা না-পড়ায় শঙ্কিত হয়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা একযোগে বদলির আর্জি জানালেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে। মালদহের কালিয়াচকের ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিধান মিশ্র ওই আর্জি পেয়েই উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের তরফেও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা সকলে ধরা পড়েনি। নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সে জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে বলা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা হচ্ছে।” যে গাফিলতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে তা খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতর। মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মারধরের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের ধরার জন্য তল্লাশি চলছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তাও তদন্ত করা হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জের আরজিনা বিবি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন। কিন্তু, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বচসা হয় রোগিণীর বাড়ির লোকজনের। অভিযোগ, এর পরেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রোগিণীর আত্মীয় এনারুল হক সহ কয়েকজনকে হুমকি দেন। এনারুলদের অভিযোগ, ওই চিকিৎসক রোগিণীর বিপদ হবে বলে জানিয়ে দেন।
পক্ষান্তরে, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশোর ঠাকুরের অভিযোগ, গোলমালের আশঙ্কায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ পৌঁছয়। এর পরে তাঁকে পুলিশের সামনেই বেধড়ক মারধর করেন রোগিণীর সঙ্গে আসা লোকজন। ঘটনাচক্রে, মারধর, হামলার সময়ে বৈদুতিন মাধ্যমের ক্যামেরায় তার কিছুটা অংশ ধরা পড়ে। তা সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হতেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অজানা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। এনারুল হককে পুলিশ গ্রেফতার করে। তিনি আটদিন পরে জামিন পান।
এর পর থেকেই নানা ভাবে চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “যা ঘটেছে তাতে আমরা কেউ এখানে কাজ করার সাহস পাচ্ছি না। নিরাপত্তা নেই। তাই সকলে বদলির আর্জি জানিয়েছি।”
কালিয়াচকের কংগ্রেস বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। তিনি দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তার বন্দোবস্তের জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন। মালদহ জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “পুলিশ তো কাজ করছে। কাজেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে আতঙ্কে সিলামপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছেড়ে না যান সেই ব্যাপারে কথা বলব।”
|
পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাঘমুণ্ডি |
পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রের উদ্বোধন হল বলরামপুর ও বাঘমুণ্ডিতে। সোমবার বলরামপুরের বাঁশগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি। বাঘমুণ্ডির পাথরডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপনকুমার ঝরিয়াত। তিনি বলেন, “দু’জায়গাতেই ১০টি করে শয্যা রযেছে। এই দু’টি কেন্দ্র নিয়ে জেলায় মোট ৯টি এমন কেন্দ্র চালু হল।” জেলার জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতে এই ধরনের নয়টি কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সবগুলিই চালু হয়ে গেল। অপুষ্ট শিশুকে এই কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই কেন্দ্রগুলি চালু করা হয়েছে। স্বপনবাবু জানান, কোনও মা যদি পেশায় দিনমজুর হন, তাহলে তিনি যে ক’দিন তাঁর সন্তানকে নিয়ে এখানে ভর্তি থাকবেন, সে ক’দিনের জন্য তাঁকে পারিশ্রমিক দেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। |