এ বার ব্যারাকপুর
রেলের উৎসর্গ করা সেতু ফোনে উদ্বোধন মমতার
সেতু পিছু জোড়া উদ্বোধনই রীতি এখন রাজ্যে!
প্রথমে দুর্গাপুর। পরে শেওড়াফুলি। এ বার ব্যারাকপুর। কার আগে কে জাতির উদ্দেশে সেতু উৎসর্গ করবে, সেই টক্কর সমানে চলেছে। আর তার জেরে তিন জায়গাতেই দু’বার করে উদ্বোধন হল রেল উড়ালপুলের!
দুর্গাপুরে কাজটা আগেভাগে সেরে ফেলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে বেজায় চটে যান কংগ্রেসের রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। ব্যারাকপুরের ক্ষেত্রে রেল বিজ্ঞাপন দিয়ে উৎসর্গ সারল আগেই। রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠান হল পরে।
রবিবার রাতেই রেল প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ব্যারাকপুরের ১৫ নম্বর রেলে গেটের উড়ালপুলটি ‘এলাকাবাসীর জন্য উৎসর্গ করে খুলে দেওয়া হল’। সোমবারের সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও বেরোয়। রাজ্যের পূর্ত দফতরও বিজ্ঞাপন দেয় উড়ালপুলটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে। রেলের অভিযোগ, তাদের বিজ্ঞাপনে রাজ্য সরকারের সহায়তার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের বিজ্ঞাপনে রেলের কোনও নামগন্ধ করা হয়নি।
ফোনের ও-পারে মুখ্যমন্ত্রী। ভাষণ শোনাচ্ছেন দীনেশ ত্রিবেদী।—নিজস্ব চিত্র।
সারা ভারতেই লাইনের উপরে উড়ালপুলের প্রয়োজন পড়লে তার পরিকল্পনা করে রেল মন্ত্রক। প্রয়োজনটাও রেলেরই। পরে রাজ্য সরকার নিজ খরচে দু’দিক দিয়ে সড়ক পথের সঙ্গে ওই সেতু যুক্ত করে দেয়। এটাই সরকারি নিয়ম। রেলের ভূমিকার উল্লেখ না করা নিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, “কী আর বলব? সেই বিয়ে বাড়িতে গিয়ে পুরনো জুতো পাল্টে নিয়ে আসার গল্প মনে পড়ছে।” তাঁর কথায়, “সব রাজ্যে রেলই রেল উড়ালপুল তৈরি করে। প্রয়োজনে উদ্বোধন করে। না হলে অনুষ্ঠান ছাড়াই মানুষের স্বার্থে খুলে দেওয়া হয়।” ব্যারাকপুরে এ দিন উড়ালপুল উদ্বোধনের কথা ছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়ের। কিন্তু তিনি চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে টেলিফোনে উদ্বোধন করানোর। কিন্তু মুশকিল বাধায় মোবাইল। মঞ্চে উপস্থিত কারও ফোনেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে দীনেশ ত্রিবেদী তাঁর ফোন থেকে মমতাকে ধরে ফেলেন। শেষে দীনেশই মাইক মুকুলের হাত থেকে নিয়ে নিজের ফোনটির সামনে ধরেন। শোনা যায়, মমতা বলছেন, “নববর্ষ উপলক্ষে সেতুটি ব্যারাকপুরবাসীর জন্য উৎসর্গ করা হল। এই সেতু তৈরি হওয়ায় ব্যারাকপুর ও বারাসতের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে।” মমতা আরও বলেন, “ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মেট্রোও হবে। বারাসতেও মেট্রো হবে। কাজ আবার শুরু হবে।” পরিকল্পনা কমিটির বৈঠক থাকায় তিনি আসতে পারেননি বলেও জানান। পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে প্রথম কোনও সরকারের জমানায় ২৫টি সেতু তৈরি করা হল (ব্যারাকপুরের সেতুটি নিয়ে)। তাঁর কথায়, “চার দিকে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। বাম আমলে জমির সমস্যাতেই এই সেতু করা হয়নি। আমরা তা মিটিয়ে করে ফেলেছি।” যদিও জমি-জটের স্থায়ী ছাপ নিয়েই তৈরি হয়েছে সেতুটি। সেতুটির জন্য জমি ছাড়েনি সেনা। জমি দেননি আশপাশের মানুষ। রাস্তা যেমন ছিল তেমনই রয়েছে, চওড়া করা যায়নি। এই সেতু দিয়ে কী ভাবে ভারী ট্রাক বা ট্রেলার যাওয়া-আসা করবে তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেল সেতুর জন্মলগ্ন থেকেই। বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল পুলিশও। তবে তারা এ নিয়ে কোনও কথা বলতে চায়নি।
৫৯৩.২৫ মিটার লম্বা সেতুটি তৈরি করতে রেল ও রাজ্যের খরচ হয়েছে ২৪ কোটি টাকা। সময় লেগেছে ৮ বছরেরও বেশি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.