জঙ্গিপুরের আঞ্চলিক কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতর থেকে ৪২ লক্ষ টাকা গায়েবের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার ঋতুরাজ মেধি নিজেই পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত ওই দফতরে জালিয়াতির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অফিসেরই কোনও চক্র জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।”
আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার ঋতুরাজবাবু বলেন, “বিভাগীয় তদন্তে ধরা পড়েছে ৪৩টি চেকের মাধ্যমে ৪১ লক্ষ ৭২ হাজার ২৩৫ টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে। চেকগুলি ইস্যু হয় বিড়ি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন বাবদ প্রাপ্য অর্থের জন্য। প্রতিটি চেকে বড়জোর হাজার দু’য়েক টাকা বরাদ্দ থাকার কথা। দেখা যাচ্ছে চেকগুলি ইস্যু হয়েছে ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকার পরিমান লিখে। অফিসের ক্যাশ বইয়ের সঙ্গে ব্যাঙ্কের পাঠানো আর্থিক হিসেবে গলমিল দেখেই বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।” এই জালিয়াতির প্রাথমিক তদন্ত করেছেন সহকারী পিএফ কমিশনার নিতীশকুমার মণ্ডল জানান, যে শ্রমিকের দেড় হাজার টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা, তাঁর নামে লক্ষাধিক টাকার চেক ইস্যু হয়েছে। অফিসের কারও যোগজাসশ না থাকলে এ কাজ সম্ভব নয়। অন্য কোনও চক্রও জড়িয়ে থাকতে পারে। তাই আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।
২০০৫ সালে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য রঘুনাথগঞ্জে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক পিএফের আঞ্চলিক কার্যালয় খোলে। জানা গেছে, ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ৪৩টি চেক ইস্যু হয় শ্রমিকদের নামে। ব্যাঙ্ক যথারীতি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে চেকের অর্থ বন্টন করে। ব্যাঙ্ক থেকে পাঠানো মাসিক আর্থিক হিসাব প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতরের এক কর্তার নজরে পড়ে। তারপর শুরু হয় তদন্ত। প্রকাশ্যে আসে আর্থিক জালিয়াতি। অফিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৭২৯৪১ নম্বর চেকে এক শ্রমিকের নামে বরাদ্দ ছিল ১,০৪৪ টাকা। পরিমান লেখা হয়েছে ৯৪,৯০১ টাকা। ৩০ নভেম্বর তোলাও হয়েছে সেই টাকা। একই কান্ড ৪৩টি চেকের সবগুলির ক্ষেত্রেও। |