সময়মতো সিদ্ধান্ত নেবে ভারত
দূতাবাস কর্মীদের সরাতে চাপ পিয়ং ইয়ঙের
কের পর এক হুমকি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ‘হুমকি-অস্ত্র’কেই সম্বল করেছে উত্তর কোরিয়া। সেই ধারা বজায় রেখে এ বার নতুন বার্তা। অবিলম্বে পিয়ংইয়ং থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত-সহ দূতাবাসের সমস্ত কর্মীকে সরিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে রীতিমতো চিঠি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। কারণ? আগামী ১০ এপ্রিলের পর রাষ্ট্রদূত ও কর্মীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারবে না উত্তর কোরিয়া সরকার। চিঠি পৌঁছেছে ভারতের কাছেও।
শুক্রবার ব্রিটেন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ উত্তর কোরিয়ার চিঠির কথা স্বীকার করেছে। একাংশের ধারণা, সম্প্রতি নিজের পূর্ব উপকূলে দুটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে গিয়েছে উত্তর কোরিয়া। যা কি না দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে আঘাত হানতে পারে। এমনকী, পৌঁছতে পারে প্রশান্ত মহাসাগর এলাকার গুয়াম দ্বীপের মার্কিন সেনা ছাউনিতেও। তবে সবটাই আপাতত অনুমান।
কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই যে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে চলেছে পিয়ংইয়ং, সে কথাও এড়ানো যাচ্ছে না। গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি নাকচ করে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার সেনা সূত্রে খবর, যে কোনও সময় শুরু হতে পারে যুদ্ধ। প্রস্তুতি হিসেবে কিছু দিন আগেই দেশের বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা পরমাণু চুল্লিটি ফের চালু করার কথা জানায় উত্তর কোরিয়া। যুদ্ধের প্রস্তুতির এ হেন আবহে পিয়ংইয়ং-এর চিঠিকে তাই গুরুত্ব দিয়েই দেখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ)।

রাজধানী পিয়ং ইয়ঙের পথে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যান। —ফাইল চিত্র
এ দিন উত্তর কোরিয়ার ‘প্রস্তাব’-নিয়ে আলোচনায় বসেন ইইউ-র প্রধানরা। তাঁদের সিদ্ধান্ত, কোনও ভাবেই দূতাবাসের কর্মীদের ফিরিয়ে আনা হবে না। আসলে, একাংশের মতে, উত্তর কোরিয়ার এই যুদ্ধের হুমকি কৌশল মাত্র। যার মাধ্যমে আসলে আমেরিকার সঙ্গে ‘সুবিধাজনক’ অবস্থানে যেতে চাইছে পিয়ংইয়ং। আমেরিকার মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার উপর আঘাত হানার হুমকি আসলে সেই কৌশলেরই অংশ। তবে আমেরিকা জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে তাঁরা মোটেও বিস্মিত হবেন না। একই সঙ্গে অবশ্য হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পেন্টাগন।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবারুদ্দিন বলেছেন, “বিষয়টি ভারতের নজরে এসেছে। সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নেব।” কিন্তু পর্যটকদের চোখে উত্তর কোরিয়ার অবস্থা এখন ঠিক কী রকম? তাঁরা অবশ্য এ ব্যাপারে ইতিবাচক কথাবার্তাই বলছেন। পরমাণু-যুদ্ধের হুমকি নিয়ে যে টানটান উত্তেজনার কথা শোনা যাচ্ছে সে দেশের সরকারের মুখে, বাইরে থেকে দেশটি দেখে তা অবশ্য বোঝার উপায় নেই। বহু পর্যটক এখনও আসছেন উত্তর কোরিয়ায়। এমনকী, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রাও একদম স্বাভাবিক। অন্তত তেমনটাই দাবি করছেন উত্তর কোরিয়া ফেরত পর্যটকরা।
কিছুটা একই কথা বলছেন উত্তর কোরিয়ার রুশ দূতাবাসের মুখপাত্র ডেনিস সামসনোভ। তবে একই সঙ্গে সামসনোভ জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে ইতিমধ্যেই সক্রিয় তাঁরা। বৃহস্পতিবার অবশ্য উত্তর কোরিয়ার আচরণের সমালোচনা করেছিল রাশিয়া। রুশ বিদেশ মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, “আমরা চিন এবং আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।” তবে উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে কী ভাবছে রাশিয়া, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ইতিহাস বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রাশিয়া। কিন্তু বৃহস্পতিবারের সমালোচনা এবং তার পরে উত্তর কোরিয়ার চিঠি পাওয়ার পর থেকেই রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সমীকরণ যে বদলাতে পারে, তেমনই ধারণা স্পষ্ট হচ্ছে। কিছু দিন আগে চিনও সমালোচনা করেছিল উত্তর কোরিয়ার। তাই কঠিন সময়ে উত্তর কোরিয়া নিজের ‘বন্ধুদের’ পাশে পায় কি না, সেটা দেখতে উৎসুক অনেকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.