সুদীপ্তর মৃত্যুতে মর্মাহত
রাজনীতি ছাড়তে চেয়ে ইস্তফা টিএমসিপি নেতার
পুলিশি হেফাজতে এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যু তাঁকে অসম্ভব নাড়া দিয়েছে। তাই ছাত্র রাজনীতি থেকেই নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে চান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক শুভজিৎ দাস। বৃহস্পতিবার সংগঠনের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন তিনি। পদত্যাগী এই ছাত্র নেতার বক্তব্য, “কী ভাবে সুদীপ্তর মৃত্যু হল, আমরা সকলেই দেখলাম। আমি মর্মাহত। আর ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না। কোনও ছাত্র সংগঠনই করব না।”
পদত্যাগপত্রে সংগঠনের বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছেন শুভজিৎ। লাইব্রেরি সায়েন্সের স্নাতক শুভজিৎ সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলের কিছু কিছু কার্যকলাপ আমি ব্যক্তিগত ভাবে মেনে নিতে পারছি না। যে আদর্শ ও অনুপ্রেরণায় টিএমসিপি করতে আগ্রহী হয়েছিলাম, সেই জায়গা থেকে আমি আশাহত। আর সংগঠনের পদে থাকতে চাই না। আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।” এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করে হলে শুভজিৎ অবশ্য বলেন, “কারও উপর ব্যক্তিগত কোনও ক্রোধ বা আক্রোশ আমার নেই। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখেই আমি পদত্যাগ করেছি।”
শুভজিৎ দাস
গোটা ঘটনায় শোরগোল পড়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। টিএমসিপি-র যদিও দাবি, এক মাস আগেই শুভজিৎকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। রমাপ্রসাদের বক্তব্য, “শুভজিৎ সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এমন কিছু ছবি ও মন্তব্য ট্যাগ করছিলেন, যেগুলো তৃণমূল-বিরোধী। জেলা কমিটির পদে থেকে এ সব করা যায় না। টিএমসিপি’র পদে থাকব, আবার সাইটে রাহুল গাঁধীর ছবি ট্যাগ করব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করব, এ হতে পারে না। তাই ওঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।” শুভজিৎ অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, “বলা হচ্ছে আমাকে এক মাস আগে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অথচ, বুধবার রাত পর্যন্ত কিছু জানতে পারলাম না। এমনটাও হয়?”

টিএমসিপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভজিতের কাজকর্ম নিয়ে ক’দিন আগেই রমাপ্রসাদের কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন টিএমসিপির মেদিনীপুর শহর সভাপতি বুদ্ধ মণ্ডল। শুভজিৎকে শো-কজ করার সুপারিশও করেন বুদ্ধ। তবে তারপর আর বিষয়টি এগোয়নি।
তবে আইন অমান্য আন্দোলনে গিয়ে সুদীপ্তর মৃত্যু যে সক্রিয় ভাবে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তরুণ-তরুণীদের ভাবাচ্ছে, সেটা পরিষ্কার। আর সেই ভাবনা থেকেই শুভজিতের ইস্তফা। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “সুদীপ্তর মৃত্যুতে তৃণমূলের অন্দরেও যে প্রতিবাদের ঝড় উঠছে, এ ঘটনা তারই প্রমাণ।” শুভজিতের এই পদক্ষেপ সমর্থন করেন ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুলও। তাঁর বক্তব্য, “পরিবর্তনের সরকারের আমলে পুলিশি হেফাজতে এ ভাবে এক ছাত্রের মৃত্যু হবে বলে ভাবিনি। তৃণমূলের অন্দরে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। আমি নিশ্চিত, এমন প্রতিবাদ চলবেই।”

ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.