গেইলদের বিরুদ্ধে মুম্বইকে জেতা ম্যাচ হারতে দেখে আমার কয়েকটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে মুম্বই থিঙ্কট্যাঙ্ককে। যে থিঙ্কট্যাঙ্ক আবার চলতি আইপিএলের সবচেয়ে হেভিওয়েট। কুম্বলে-সচিন-পন্টিং-জন রাইট কে নেই ওদের ম্যানেজমেন্টে? কিন্তু আমি বুঝে পাচ্ছি না এত দুর্ধর্ষ একটা ‘ম্যানেজমেন্ট ব্রেন’ কী ভাবে একসঙ্গে এতগুলো ভুল করতে পারে।
তোমার যখন ব্যাটিং লাইন আপ বিরাট, দশ নম্বরে যে নামে সেই জেকব ওরামও যখন ব্যাটটা করে দিতে পারে, তখন কোন যুক্তিতে তুমি ছ’ওভারে ৩৬ তুলবে? কোন যুক্তিতে কায়রন পোলার্ডকে এত পরে নামাবে? চিন্নাস্বামীর মতো ছোট স্টেডিয়ামে ১৫৭ তাড়া করতে গিয়ে এমন ঢিকির-ঢিকির করার মানেটা কী? |
এটা ঠিক যে মুম্বইয়ের জেতা ম্যাচ হারার রোগটা নতুন নয়, পুরনো। গত পাঁচ বছর ওরা ঠিক এ ভাবেই ক্লোজ ম্যাচ যাচ্ছেতাই ভাবে হেরে ডুবেছিল। এ বার ভেবেছিলাম, অন্তত কিছু বদল দেখতে পাব। বিশেষ করে যে টিমের মস্তিষ্ক কুম্বলে-পন্টিং-সচিনদের নিয়ে তৈরি হয়, তাদের উপর আশা করা স্বাভাবিক। কিন্তু বদলে চরম হতাশা ছাড়া আর কিছু পেলাম না। বরং আমার তো মনে হচ্ছে, মুম্বইয়ের অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এক-এক সময় মুম্বইয়ের আসল অধিনায়ক কে, পন্টিং না সচিন সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।
স্ট্র্যাটেজির কোনও ঠিক-ঠিকানা নেই। দীনেশ কার্তিকের (৩৭ বলে ৬০) ঝোড়ো ইনিংসকে বাদ রেখে রোহিত, রায়ডু-র স্কোরশিটে চোখ রাখুন। দেখবেন কেউ ১১ বলে ১১ করে আউট। কেউ ১৮ বলে ১৮ করে। কোনও টিমের ব্যাটিং যদি সাত নম্বরে এসে শেষ হয়ে যায়, দেখেশুনে ব্যাটিংয়ের যুক্তিটা মানা যায়। কিন্তু মুম্বইয়ের ক্ষেত্রে সেটা যাচ্ছে না। তা ছাড়া গত চার বছর ধরেই দেখছি পোলার্ডকে ঠিকমতো ব্যবহারই করছে না মুম্বই ম্যানেজমেন্ট। এমন সময় ব্যাট করতে পাঠাচ্ছে যখন অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটালে জেতার রাস্তা নেই। বৃহস্পতিবারও একই জিনিস। যখন ব্যাটিং পেল হাতে দু’বল। চাই আট রান।তবে আজও গেইল না খেললে বেঙ্গালুরু জেতে না। আসলে আরসিবি-র ফূর্মলাটাই হল, গেইল খেললে জিতবে। নইলে নয়। পুণে ওয়ারিয়র্সের সঙ্গে আমি যুক্ত। ওর সামনে পড়লে আমাদের কী অবস্থা হতে পারে ভেবে প্রবল হতাশায় এখনই ভুগছি। নতুন কী আর বলব? দেশের হয়ে কিছুই করেনি মোটামুটি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও রান পায়নি। কিন্তু আইপিএল এলেই যে ওর কী হয়, জানি না। সবচেয়ে অবাক করা হচ্ছে, ব্যাটে ‘এজ’-এ লেগেও ওর শট ছক্কা হয়ে যায়। মাঝ ব্যাটে খেলার দরকার পড়ে না। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দেখলাম এক দিক থেকে আরসিবি-র লাগাতার উইকেট পড়ল। উল্টো দিকে গেইল একা ৯২ করে গেল! |
গেইলকে দেখে আর এখন আশ্চর্য লাগে না। বরং এই ম্যাচে দু’জনকে দেখে অবাক লাগল। একজন মুম্বইয়ের জসপ্রীত বুমরাহ। যে এ দিন বেঙ্গালুরুর ৩ উইকেট নিল ৩২ রানে। আইপিএলে জীবনের প্রথম ম্যাচে। গুজরাতের ছেলে। এখনও রঞ্জি খেলেনি। পার্থিব পটেলের কাছে শুনলাম, ওকে পার্থিব রঞ্জিতে চেয়েছিল। কিন্তু নির্বাচকরা ওকে নেয়নি। অথচ আইপিএল অভিষেকেই কী করে বসল! আর দ্বিতীয় জনঅনিল কুম্বলে। ও কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট। চিন্নাস্বামীতেই অফিস। আর আজ ও কি না ঘরের মাঠে বসে রইল মুম্বই ডাগআউটে। অতিথি হিসেবে!
|